হলো না শেষরক্ষা, একা লড়েও ‘ফলো অন’ বাঁচাতে ব্যর্থ মিরাজ

কথাতেই আছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস পতনের কারণ। ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পর একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী ছিল নাজিমুল হোসেন শান্তের দল। রাওয়ালপিন্ডির উপমহাদেশীয় পিচে নিজেদের সহজাত…

"Mehidy Hasan Miraz Fails to Prevent Follow-On as Bangladesh Struggles in Test Match

কথাতেই আছে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস পতনের কারণ। ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পর একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী ছিল নাজিমুল হোসেন শান্তের দল। রাওয়ালপিন্ডির উপমহাদেশীয় পিচে নিজেদের সহজাত পারফরম্যান্স করে রানের পাহাড় গড়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে আজ চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সবুজ ঘাসের উইকেটে ব্যাট হাতে ফলো-অন বাঁচাতে ব্যর্থ হলেন সাকিব-লিটন-শান্তরা। একমাত্র মেহেদী হাসান মিরাজ (Mehidy Hasan Miraz)কিছুটা চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি। তবে গতকাল ব্যাট হাতে গর্জে ওঠার পর আজ বল হাতেও নিজের ভেল্কি দেখিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। এছাড়াও ‘মনের মত’ উইকেট পেয়েই এদিন সফল হয়েছেন ভারতীয় পেসাররাও। ভারতীয় বোলারদের দাপটেই এদিন ৩৭৬ রানের জবাবে মাত্র ১৪৯ রানেই গুটিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। চেন্নাইয়ে সাকিব-শান্তরা ফলোঅনের সীমানা পেরোতে না পারলেও ফলোঅনের দিকে যাননি ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

দ্বিতীয় দিন সকালে আজ ভারতকে ৩৭৬ রানে অলআউট করে দিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তবে প্রথম ইনিংস খেলতে নেমেই ব্যাটসম্যানদের একের পর এক ভুল শট খেলায় ম্যাচ থেকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারায় নাজিমুল হোসেন শান্তের দল। শুরুতেই বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন বুমরাহ-আকাশ দীপরা।বুমরার অফস্টাম্পের ওপর লেংথ ডেলিভারি সামলাতে না পেরে ছেড়ে দেন সাদমান। বল অফস্টাম্প থেকে আরেকটু ভেতরে ঢুকে মিডলস্টাম্পের চূড়ায় লেগে তুলে নেয় বেলস। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন উইকেটে এসে চেষ্টা করেন জাকির হাসানকে নিয়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলাতে। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়ে যায়, আকাশ দীপের পরপর দুই বলে জাকির ও মুমিনুল হককে হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।

   

এরপর অভিজ্ঞ কিপার মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে চেষ্টা করে যেতে থাকেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু ফের ভারতীয় পেসারদের গতির হেরফেরের কাছে পরাস্ত হন তাঁরা। একসময় ৪০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ পড়ে যায় ফলোঅনের শঙ্কায়। তবে লাঞ্চের পর সাকিব-লিটন জুটিতে আশা জাগাতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের বোলারদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে একপ্রকার ‘আত্মহত্যা’ করে বাংলাদেশের শেষ ভরসাও শেষ করে দেন এই জুটির দুজনই। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ৯৪ বলে ৫১ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙে লিটনের আউটে। এর পরেই জাদেজাকেই রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পন্থের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন সাকিব। সাকিব, লিটন ফিরে গেলেও ফলোঅনের  বিরুদ্ধে  একা লড়তে থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ (Mehidy Hasan Miraz)। তবে এদিন শেষরক্ষা করতে পারেননি তিনিও। ‘ডাবল স্পিন অ্যাটাক’ শেষে ভারতের অধিনায়ক আবার বোলিংয়ে ফেরান তাঁর সবচেয়ে বড় অস্ত্র বুমরাকে। ফিরেই তিনি তুলে নেন হাসান মাহমুদকে। এছাড়াও তাসকিন আহমেদকেও আউট করেন তিনি। শেষে নাহিদ রানাকে ইনসাইড এজে বোল্ড করে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন মহম্মদ সিরাজ।

প্রসঙ্গত ভারতের হয়ে এদিন ৪০০ উইকেট নিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন জসপ্রিত বুমরাহ।  ৪০০ উইকেট নেওয়া ভারতীয় পেসারদের তালিকায় বুমরাহ হলেন ছয় নম্বর বোলার যিনি এই কীর্তি সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও ভারতের হয়ে প্রথম ইনিংসে সবথেকে বেশি উইকেট তারই দখলে। এদিন  বুমরাহ ছাড়াও অন্যান্য ভারতীয় বোলাররাও সফল।ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপ এবং রবীন্দ্র জাদেজা। মিরাজ (Mehidy Hasan Miraz) অপরাজিত থাকলেও, বাংলাদেশকে অল আউট করার পর এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে দুই উইকেট খুইয়ে ৫৬ রানে ব্যাট করছে ভারত।(এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত)

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত প্রথম ইনিংস: ৯১.২ ওভারে ৩৭৬ (অশ্বিন ১১৩, জাদেজা ৮৬, জয়সোয়াল ৫৬, পন্ত ৩৯, আকাশ ১৭, বুমরা ৭; হাসান ৫/৮৩, তাসকিন ৩/৫৫, নাহিদ ১/৮২, মিরাজ ১/৭৭)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৭.১ ওভারে ১৪৯ (সাকিব ৩২, মিরাজ ২৭*, লিটন ২২, নাজমুল ২০, রানা ১১, তাসকিন ১১, হাসান ৯, মুশফিক ৮, জাকির ৩, সাদমান ২, মুমিনুল ০; বুমরা ৪/৫০, জাদেজা ২/১৯, আকাশ ২/১৯, সিরাজ ২/৩০)।

ভারত দ্বিতীয় ইনিংস : ১৫ ওভারে ৫৮/২ (গিল ২৮*, কোহলি ১১*, জয়সোয়াল ১০ ; তাসকিন ১/১৭, নাহিদ ১/১২).

ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮৬ রানে এগিয়ে।