২০২৭ জাতীয় গেমস আয়োজনের অধিকার মেঘালয়কে

উত্তরাখণ্ডের পর মেঘালয় দ্বিতীয় পাহাড়ি রাজ্য হিসেবে জাতীয় গেমস আয়োজনের অধিকার পেল। মেঘালয়কে ২০২৭ সালের ৩৯তম জাতীয় গেমস (National Games 2027) আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।…

Meghalaya Awarded Hosting Rights for 39th National Games in 2027

উত্তরাখণ্ডের পর মেঘালয় দ্বিতীয় পাহাড়ি রাজ্য হিসেবে জাতীয় গেমস আয়োজনের অধিকার পেল। মেঘালয়কে ২০২৭ সালের ৩৯তম জাতীয় গেমস (National Games 2027) আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভারতের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (আইওএ) সভাপতি পিটি উষা এই ঘোষণা দিয়েছেন মঙ্গলবার। আগামী ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে মেঘালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ৩৯তম জাতীয় গেমস।

মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এই ঘোষণার পর অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে বলেছিলেন, “জাতীয় গেমস আয়োজনের সুযোগ পেয়ে মেঘালয় অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছে। আমরা এই ঐতিহাসিক সুযোগের জন্য ভারতের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এবং সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।” তিনি আরও জানান, মেঘালয়ে গেমস আয়োজন করা রাজ্যের জন্য এক বিশাল অর্জন হবে এবং এই গেমস আয়োজনের মাধ্যমে রাজ্যকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

   

পিটি উষা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন যে ৩৯তম জাতীয় গেমসের আয়োজন ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি বা মার্চে হবে। এই অনুষ্ঠানের জন্য আইওএ-এর পতাকা মেঘালয়কে হস্তান্তর করা হবে ৩৮তম জাতীয় গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানে, যা বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি হালদ্বানিতে সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে মেঘালয়ের প্রতিনিধিরা আইওএ-এর পতাকা গ্রহণ করবেন।

প্রসঙ্গত, ৩৮তম জাতীয় গেমস বর্তমানে উত্তরাখণ্ডে চলছে, যেখানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় ১০,০০০ অ্যাথলিট অংশগ্রহণ করছেন। এসব অ্যাথলিটরা বিভিন্ন খেলা এবং প্রতিযোগিতায় তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করছেন। উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন স্থান যেমন হরিদ্বার, নৈনিতাল, হালদ্বানি, রুদ্রপুর, শিবপুরী এবং নিউ তেহরি-তে গেমস অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে একাধিক নতুন রেকর্ডও সৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে, ৩৮তম জাতীয় গেমসের মধ্যে বহু নতুন রেকর্ড ভাঙা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম মাধ্যপ্রদেশের অ্যাথলিট দেব মীনা, যিনি পুরুষ পোল ভল্টে জাতীয় রেকর্ড ভেঙে ৫.৩২ মিটার উচ্চতা ছাড়িয়ে স্বর্ণপদক জিতেছেন। এছাড়াও, ভারতের প্যারিস অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলিট জ্যোতি ইয়্যারাজি মহিলা ১১০ মিটার হাডলসে এবং তেজাস শিরসে পুরুষ ১০০ মিটার হাডলসে গেমস রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণপদক জিতেছেন।

মেঘালয়কে জাতীয় গেমসের আয়োজনের অধিকার দেওয়া হলে, এটি রাজ্যের জন্য একটি বড় মাইলফলক হবে। কনরাড সাংমা বলছেন, “এই ঘটনাটি রাজ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বের এবং আনন্দের মুহূর্ত। আমরা দেশবাসীকে আমাদের রাজ্যের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া জ্ঞান প্রদর্শন করতে পারব। আমরা আশা করি, এই গেমসের মাধ্যমে মেঘালয়ের জন্য আরও বেশি পর্যটক এবং ক্রীড়া উৎসাহী মানুষ আকৃষ্ট হবে।”

মেঘালয়ে এই গেমস আয়োজনের জন্য আইওএ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সাংমা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ক্রীড়া মন্ত্রী মানসুখ মাণ্ডভিয়া এবং পিটি উষা-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এদিকে, ৩৮তম জাতীয় গেমসের সময়, বিভিন্ন খেলা এবং প্রতিযোগিতায় উন্নত মানের পারফরম্যান্সও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই গেমসে পুরুষ এবং মহিলা অ্যাথলিটরা উঁচু মানের খেলা উপস্থাপন করছেন, যা ভারতের ক্রীড়াজগতের ভবিষ্যতের জন্য একটি ভালো সঙ্কেত।

মেঘালয়ে জাতীয় গেমস আয়োজনের সময় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হবে। গেমসের জন্য নতুন স্টেডিয়াম এবং খেলাধুলার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় গেমস আয়োজনের ফলে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জও আসতে পারে, কিন্তু রাজ্য সরকার তা কাটিয়ে উঠতে প্রস্তুত।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ক্রীড়া খাতে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন নতুন খেলোয়াড়দের পরিচিতি এবং তাদের উন্নতির জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। মেঘালয়ে জাতীয় গেমস আয়োজিত হলে, এই রাজ্যেও ক্রীড়া সংস্কৃতি আরও এগিয়ে যাবে, যা দেশের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মান বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হবে।

মেঘালয়ের জন্য ৩৯তম জাতীয় গেমস আয়োজন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে চলেছে এবং রাজ্যের মানুষের জন্য এটি একটি বিশাল সুযোগ। জাতীয় গেমসের মাধ্যমে রাজ্য বিশ্বের কাছে নিজের পরিচিতি আরও বিস্তৃত করতে সক্ষম হবে এবং দেশের ক্রীড়া পরিমণ্ডলে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।