ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) চলতি মরশুমে দ্বিতীয় কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby) অনুষ্ঠিত হবে ১১ জানুয়ারি। যেখানে মুখোমুখি হবে কলকাতা ময়দানের (Kolkata Maidan) দুই প্রধান তথা ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) ও মোহনবাগান (Mohun Bagan SG)। তবে, এই ডার্বি নিয়ে আচমকাই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে গঙ্গাসাগর মেলা এবং তার আশেপাশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিয়ে। তাই হটাৎই চমকে উঠেছেন দুই দলের সমর্থকরা।
সঞ্জু স্যামসনকে স্কোয়াড থেকে বাদ দিল কেরালা
২০২৫ সালের জানুয়ারির ৮ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলা চলবে, যার ফলে পুলিশি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। গঙ্গাসাগরের এই মেলার কারণে কলকাতা এবং আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাড়তি নজরদারি থাকবে, যা আইএসএল ডার্বির আয়োজনের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গঙ্গাসাগর মেলার সময় দেশের বিভিন্ন স্থান এবং রাজ্যের জেলা থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী আসেন। এই মেলা যেহেতু সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত, তাই প্রশাসন এবার বিশেষভাবে নজরদারি বৃদ্ধি করার কথা বলেছে। হাওড়া, বিধাননগরসহ অন্যান্য জেলা থেকেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হবে এবং বাবুঘাট ট্রানজিট পয়েন্টে নজরদারি থাকবে। একদিকে, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য পুলিশের বড় সংখ্যক উপস্থিতি প্রয়োজন, অন্যদিকে ১১ জানুয়ারির ডার্বি নিয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে, যার কারণে পর্যাপ্ত পুলিশ সঠিকভাবে মোতায়েন করা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
গোয়া ম্যাচে নেই গ্ৰেগ স্টুয়ার্ট, কবে ফিরবেন মাঠে?
আইএসএলের দ্বিতীয় ডার্বি শুধু খেলাধুলার প্রতিযোগিতা নয়, বরং কলকাতা ফুটবল সংস্কৃতির এক চমকপ্রদ উদাহরণও বটে। ১৮ আগস্ট ডুরান্ড কাপের সময় যখন ডার্বি ভেস্তে যায়, তখন সেটি ছিল এক বিরল ঘটনা। পুলিশের নিরাপত্তা কারণে ডার্বি স্থগিত হওয়া, যা কখনও ঘটেনি, সে সময় দুই প্রধানের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদ এবং আন্দোলন শুরু হয়। এমনকি যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে দুই দলের সমর্থকরা একত্রিত হয়ে মিছিল করেছিলেন এবং একে অপরকে সহযোগিতা প্রদর্শন করেছিলেন। তখন মোহনবাগান সমর্থকের কাঁধে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের ছবি ভাইরাল হয়ে যায়, যা ছিল ফুটবল প্রেমীদের এক অদ্ভুত দৃশ্য।
নিজের ফুটবল ক্যারিয়ার নিয়ে মুখ খুললেন লুকা মাজসেন
ডার্বির একশো বছরের ইতিহাসে যে ছবি কখনও দেখা যায়নি, তা সেই দিন দেখা গিয়েছিল। ঐতিহ্যবাহী কলকাতা ফুটবল সংস্কৃতি এবং দুই প্রধানের সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে, এমন সহযোগিতার ঘটনা ছিল এক আশ্চর্য রূপ। কিন্তু এবারের ডার্বি আয়োজকদের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
গঙ্গাসাগর মেলা এবং এর আশেপাশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে ১১ জানুয়ারির ডার্বি সময়মতো অনুষ্ঠিত হতে পারবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। মোহনবাগান, যারা আইএসএল ডার্বির আয়োজক, তারা এখনো সরকারি ভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা পাননি বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট থেকে। এর মানে, যতটা সম্ভব পুলিশি নিরাপত্তা মেলা এবং ডার্বি উভয়ের জন্য সমন্বিতভাবে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা যাবে কিনা, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতোমধ্যে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার কথা ঘোষণা করেছেন। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশের অতিরিক্ত মোতায়েন, রাস্তার দিকে নজরদারি, এবং বিশেষ করে ট্রানজিট পয়েন্টগুলোতে কড়া নিরাপত্তা রাখা হবে, যা মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয়। এই পরিস্থিতিতে, ১১ জানুয়ারির ডার্বি কোনও রকমে নিরাপত্তাহীন হতে পারে, কারণ মেলার সময় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী অন্য স্থানে ব্যস্ত থাকতে পারে।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে রিয়ালের ৩-০ জয়ের নায়ক ভিনিসিয়াস ও এমবাপে
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আইএসএলের এই গুরুত্বপূর্ণ ডার্বি সময়মত আয়োজিত হবে কিনা। প্রশাসন এবং আইএসএল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি এখনও অজানা। একদিকে গঙ্গাসাগর মেলার কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটাই সঙ্কুচিত হতে পারে, অন্যদিকে ফুটবল প্রেমীরা এই ডার্বি নিয়ে উত্তেজনায় অপেক্ষা করছেন। যদিও এই ঘটনা কলকাতা ময়দানে প্রথমবার নয় যে নিরাপত্তার কারণে স্থগিত করা হবে কলকাতা ডার্বিতে। গতবছর বিশ্বকাপের সময় ইডেন গার্ডেনে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ায়, স্থগিত করা হয়েছিল কলকাতা ডার্বি।