ম্যানচেস্টার: প্রিমিয়ার লিগের ১৯৭তম ম্যানচেস্টার ডার্বিতে (Manchester derby) রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) এতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার সিটি ৩-০ গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পরাজিত করেছে। এরলিং হালান্ডের জোড়া গোল এবং ফিল ফোডেনের প্রথম গোলের সৌজন্যে পেপ গার্দিওলার দল টানা দুই হারের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে। এই জয়ের ফলে সিটি চার ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে, যেখানে রুবেন আমোরিমের ইউনাইটেড চার পয়েন্ট নিয়ে ১৪তম স্থানে রয়েছে। ম্যাচের শুরুতে বক্সিং কিংবদন্তি রিকি হ্যাটনের মৃত্যুতে শোকের ছায়া থাকলেও, হালান্ডের নৈপুণ্যে সিটি সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটে।
ম্যাচের শুরু থেকেই সিটি আধিপত্য দেখায়। ১৮তম মিনিটে ফিল ফোডেন গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। রদ্রি মিডফিল্ডে দারুণ নিয়ন্ত্রণ দেখিয়ে বল পাঠান জেরেমি ডোকুর কাছে। ডোকু ডান দিক থেকে দ্রুত গতিতে ইউনাইটেডের ডিফেন্স ভেদ করে প্রথম ক্রস করেন, যা ফিরে আসে। দ্বিতীয় ক্রসে ফোডেন দুর্দান্ত হেডারে বল জালে জড়ান। এই গোলের পর ইউনাইটেডের ডিফেন্সে চাপ বাড়তে থাকে। ডোকু বারবার ইউনাইটেডের লুক শ এবং অন্যান্য ডিফেন্ডারদের সমস্যায় ফেলেন।
দ্বিতীয়ার্ধে হালান্ড ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। ৫৩তম মিনিটে জেরেমি ডোকুর পাস থেকে তিনি প্রথম গোল করেন। তারপর ৬৮তম মিনিটে বার্নার্ডো সিলভার থ্রু-বল পেয়ে হালান্ড ঠান্ডা মাথায় ইউনাইটেডের গোলকিপার আলতায় বায়িন্দিরকে পরাস্ত করেন। এই গোল ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে। হালান্ডের নৈপুণ্য এবং ফোডেনের গোল সিটির জয় নিশ্চিত করে, যদিও তিজ্জানি রেইন্ডার্স একটি সুযোগ নষ্ট করেন, যা আমোরিমের হতাশা বাড়ায়।
ইউনাইটেডের পক্ষে বেঞ্জামিন সেস্কো প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেও তিনি তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। ব্রায়ান এমবেউমো একটি সুযোগ পান, যেখানে সিটির নতুন গোলকিপার জিয়ানলুইজি ডোনারুম্মা দুর্দান্ত সেভ করেন। ডোনারুম্মা তার প্রিমিয়ার লিগ অভিষেকে দারুণ পারফরম্যান্স দেখান। ইউনাইটেডের মিডফিল্ডে ব্রুনো ফার্নান্দেস এবং আমাদ ডায়ালো চেষ্টা করলেও তাদের আক্রমণে কাটিং এজের অভাব ছিল। আমোরিমের ৩-৪-৩ ফর্মেশন এই ম্যাচে সিটির আক্রমণের সামনে টিকতে পারেনি।
গার্দিওলা ম্যাচের আগে দলে ছয়টি পরিবর্তন আনেন, যার মধ্যে ডোনারুম্মার অভিষেক এবং ফোডেনের প্রথম শুরু ছিল উল্লেখযোগ্য। ইউনাইটেডের আমোরিম চারটি পরিবর্তন আনেন, কিন্তু ম্যাথিউস কুনহার ইনজুরির কারণে তিনি কোবি মাইনুকে বাইরে রাখেন এবং ফার্নান্দেসকে মিডফিল্ডে রাখেন। ইউনাইটেডের খেলায় কল্পনা, কৌশল এবং ফ্যান্টাসির অভাব ছিল, যা গত মৌসুমের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
ম্যাচের পর গার্দিওলা বলেন, “আমাদের আরও ভালো করতে হবে, কিন্তু এই জয় আমাদের মনোবল ফিরিয়েছে। হালান্ডের মতো খেলোয়াড় আমাদের জন্য বড় সম্পদ।” অন্যদিকে, আমোরিম স্বীকার করেন, “আমরা সাহসী ছিলাম, কিন্তু গোলগুলো এড়ানো যেত। সিটি একটি দুর্দান্ত দল।” এই জয়ের মাধ্যমে সিটি তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিযানের আগে (১৮ সেপ্টেম্বর নাপোলির বিপক্ষে) আত্মবিশ্বাস অর্জন করেছে। ইউনাইটেডের জন্য আমোরিমের চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে—কীভাবে দলকে ধারাবাহিকতার পথে ফিরিয়ে আনা যায়।