ভারত সেরা মোহনবাগান! মমতা বললেন “আমরা গর্বিত”

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মোহনবাগান(Mohun Bagan) সুপার জায়ান্টের ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL 2025) চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪-২৫ জয়ের জন্য দলটিকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শনিবার, তিনি…

Mamata Banerjee Congratulates Mohun Bagan

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মোহনবাগান(Mohun Bagan) সুপার জায়ান্টের ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL 2025) চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৪-২৫ জয়ের জন্য দলটিকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শনিবার, তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, “আমরা আমাদের বাংলার দল মোহনবাগানের জন্য গর্বিত! আজ আইএসএল চ্যাম্পিয়নশিপে আবারও জয়ের জন্য অভিনন্দন! তোমাদের এই দুর্দান্ত বিজয়ের জন্য শুভেচ্ছা!! আমরা তোমাদের জন্য গর্বিত!!” মোহনবাগান এই জয়ের মাধ্যমে বেঙ্গালুরু এফসি’র বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয়ী হয়ে আইএসএল কাপ অর্জন করেছে। এই জয় বাংলার ফুটবল ভক্তদের মধ্যে উৎসাহের জোয়ার এনেছে।

মোহনবাগানের এই জয় ছিল একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের ফলাফল। বেঙ্গালুরু এফসি প্রথমে আলবার্তো রদ্রিগেজের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে গেলেও, ম্যাচের ৭২তম মিনিটে একটি পেনাল্টি সিদ্ধান্ত মোহনবাগানের পক্ষে যায়। জেসন কামিন্স এই পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান। এই পেনাল্টি নিয়ে বিতর্ক হলেও, রেফারি সেন্থিল নাথন এস এফএ-এর ল’ ১২ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত, মোহনবাগানের দুর্দান্ত কৌশল এবং দলগত প্রচেষ্টা তাদের জয়ের মুকুট পরিয়েছে। এই জয়ের মাধ্যমে মোহনবাগান তাদের আইএসএল ইতিহাসে আরও একটি গৌরবময় অধ্যায় যোগ করেছে।

Also Read | জেমির গোলে যুবভারতীতে ইতিহাস গড়ল মোহনবাগান

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময়ই মোহনবাগানের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তিনি এর আগেও দলটির বিভিন্ন সাফল্যে তাদের প্রশংসা করেছেন এবং বাংলার ফুটবলের উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ২০২৩ সালে মোহনবাগান যখন আইএসএল কাপ জিতেছিল, তখনও তিনি দলটির প্রশংসা করে বলেছিলেন যে মোহনবাগান একদিন বিশ্বের শীর্ষ ক্লাবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এই জয়ের পর তাঁর শুভেচ্ছা বার্তা বাংলার ফুটবল ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

মোহনবাগানের এই জয় শুধু একটি ক্রীড়া ইভেন্ট নয়, এটি বাংলার ফুটবল ঐতিহ্যের একটি উজ্জ্বল প্রতিফলন। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মোহনবাগান এশিয়ার প্রাচীনতম ফুটবল ক্লাবগুলির মধ্যে একটি। ১৯১১ সালে ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে খালি পায়ে খেলে আইএফএ শিল্ড জয়ের ঐতিহাসিক ঘটনা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি প্রতীক হয়ে উঠেছিল। আজও মোহনবাগান বাঙালির গর্বের প্রতীক।

Also Read | চিংলেনসানার হ্যান্ডবল! আইনের বলে পেনাল্টি মোহনবাগানকে

এই জয়ের পেছনে মোহনবাগানের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ এবং ব্যবস্থাপনার অবদান অপরিসীম। দলের কোচ হোসে  মোলিনার কৌশলগত দক্ষতা এবং খেলোয়াড়দের একাগ্রতা এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। জেসন কামিন্স, জেমি ম্যাকলারেনের মতো খেলোয়াড়রা মাঠে তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। এছাড়াও, মোহনবাগানের সমর্থকদের অকুণ্ঠ সমর্থন দলটির জন্য একটি অতিরিক্ত শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হাজার হাজার সমর্থকের উৎসাহ মোহনবাগানকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে প্রেরণা জুগিয়েছে।

Advertisements

এই জয় বাংলার ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়েও আশার আলো দেখাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি মোহনবাগানের এই সাফল্যকে বাংলার গৌরব হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন যে বাংলার ফুটবল ক্লাবগুলি, যেমন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মোহামেডান স্পোর্টিং, শুধু দেশে নয়, বিশ্ব মঞ্চেও তাদের নাম উজ্জ্বল করতে পারে। তাঁর এই বার্তা তরুণ ফুটবলারদের জন্যও একটি প্রেরণা।

মোহনবাগানের এই জয় ভারতীয় ফুটবলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তারও একটি প্রমাণ। আইএসএল-এর মাধ্যমে ভারতীয় ফুটবল নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে, এবং মোহনবাগানের মতো ক্লাবগুলি এই যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই জয়ের পর মোহনবাগান এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এ অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে, যা ভারতীয় ফুটবলের জন্য আরেকটি গর্বের বিষয়।

মুখ্যমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা বার্তা কেবল মোহনবাগানের জন্যই নয়, সমগ্র বাংলার ফুটবল সম্প্রদায়ের জন্য একটি উৎসাহের বার্তা। এটি বাঙালির ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা এবং তাদের ঐতিহ্যের প্রতি গর্বের প্রতিফলন। মোহনবাগানের এই জয় বাংলার ফুটবল ভক্তদের জন্য একটি উৎসবের মুহূর্ত, এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা এই আনন্দকে আরও গভীর করেছে।