অনেক কিছু বলার আছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের (Mahmudullah Riyad)। তবু বললেন না, কারণ “এটা বিশ্বকাপ সঠিক মঞ্চ নয়”। বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুখে সে রকম কিছু না বললেও, অনেক কিছু বলে দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তার শতরান।
বিশ্বকাপ ২০২৩-এ বাংলাদেশী স্কোয়াডের অন্যতম অভিজ্ঞ সদস্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে নিশ্চিত ছিলেন না স্কোয়াডে তাকে রাখা হবে কি না। ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা অনিশ্চিত ছিল। তার পরও নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একের পর এই ব্যাটসম্যান যখন অসহায় আত্মসমর্পণ করছিলেন, তখন একা কুম্ভ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে করলেন শতরানের রানের স্মরণীয় একটি ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জিততে পারেনি। তবু রিয়াদ হয়তো অনেকের মুখের ওপর জবাব দিয়েছেন তার এই ইনিংসের মাধ্যমে।
ওডিআই ক্রিকেটে ফরম্যাটে সাত নম্বর খুব ভাইটাল পজিশন। অতীতে বাংলাদেশের হয়ে অনেকে এই জায়গায় ব্যাট করেছেন। কখনও সাফল্য এসেছে, কখনও ব্যর্থতা। বাংলাদেশী ক্রিকেট সমর্থকদের একাংশ চেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহকে সাত নম্বর জায়গায় নিশ্চিত করা হোক। নিশ্চিত হওয়ার পরিবর্তে জাতীয় দলেই এই সময় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলেন। তার বয়স নাকি বেশি, সাত নম্বরে ব্যাট করার উপযুক্ত নন, এমনটা বলতে শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। অথচ এই সাত নম্বরে নেমে ম্যাচ ঘোরানোর মতো একাধিক ইনিংসের একাধিক উদাহরণ রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্ষেত্রে।
টপ ব্যাটিং অর্ডার তাড়াতাড়ি আউট হলে সাত নম্বরে থাকা ক্রিকেটারের কাঁধে পড়ে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। তখন পাওয়ার হিটিংয়ের বদলে মাথা ঠাণ্ডা রেখে রানের ঢাকা ঘোরাতে হয়। ইনিংসের শেষের দিকে নামলে রানের গতি বাড়াতে হয়। বছর চার আগের তুলনায় রিয়াদের রান রেট মন্থর হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত বেড়েছে অভিজ্ঞতা। এবারের বিশ্বকাপে বারংবার প্রকট হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেও চলেছিল বির্তক। আলোচনায় উঠে এসেছিলেন তামিম ইকবাল। দেশের হয়ে দীর্ঘ দিন খেলা ক্রিকেটাররা আদৌ তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু পাচ্ছেন কি না সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছিল। রিয়াদের ইনিংস নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে ওপার বাংলার ক্রিকেট অনুরাগীদের।