প্লে অফ থেকে লখনউয়ের বিদায়ের পর শান্ত সুরে বড় বার্তা দিলেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা

আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) প্লে-অফে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হল লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Giants)। মরসুমের শুরুতে দল যেভাবে পারফর্ম করছিল, তাতে ভক্তদের প্রত্যাশা…

Lucknow Super Giants owner Sanjiv Goenka Breaks Silence On Exit from IPL 2025

আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) প্লে-অফে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হল লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Giants)। মরসুমের শুরুতে দল যেভাবে পারফর্ম করছিল, তাতে ভক্তদের প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল হারিয়ে ফেলল এলএসজি (LSG)। পরপর চারটি ম্যাচ হেরে বিদায় নিল তারা। তবে এবার বিদায়ের পর চেনা সেই উত্তপ্ত সুরে নয়, বরং শান্ত গলায় একটি আবেগঘন বার্তা দিলেন দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কা (Sanjiv Goenka)। শুধু বার্তাই নয়, সঙ্গে দিলেন একটি ছবি—যেখানে দেখা যাচ্ছে, অধিনায়ক ঋষভ পন্থের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন গোয়েঙ্কা। ছবিতে হাসিমুখে দেখা গেছে দু’জনকেই।

Advertisements

এই বার্তায় সঞ্জীব গোয়েঙ্কা লিখেছেন, “মরসুমের দ্বিতীয়ার্ধে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে যে আবেগ, লড়াই ও দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত আমরা দেখেছি, সেটাই মনে গেঁথে থাকবে। সেগুলো নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। এখনও দুটো খেলা বাকি। চলো, গর্বের সঙ্গে খেলে মাথা উঁচু করে শেষ করি।”

   

এই বার্তার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, এ বার মাঠের ব্যর্থতা নিয়ে কোনো ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা রাগ নেই সঞ্জীব গোয়েঙ্কার। বিশেষ করে গতবারের ঘটনার পর এবারের এই রূপান্তর স্পষ্ট। ২০২৪-এ এলএসজি যখন প্লে-অফ থেকে ছিটকে পড়ে, তখন মাঠেই অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে প্রকাশ্যে ধমক দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই ছবি একেবারেই আলাদা।

এবার এলএসজি দলে ছিল একাধিক বড় নাম—মিচেল মার্শ, এডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, নিকোলাস পুরান, এবং সবথেকে বড় সংযোজন ঋষভ পন্থ। পন্থকে দলে নিতে গোয়েঙ্কা রেকর্ড ২৭ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন নিলামে। অনেকেই ভেবেছিলেন, এই দল সহজেই প্লে-অফে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ব্যাটিং লাইন-আপ শক্তিশালী হলেও চোট-আঘাতে ভুগেছে দলের বোলিং বিভাগ। অধিনায়ক পন্থও নিজে আগের মতো ছন্দে ছিলেন না।

হায়দরাবাদের কাছে হেরে প্লে-অফ স্বপ্ন শেষ হওয়ার পর পন্থ বলেছিলেন, “আমরা জানতাম, ইনজুরির কারণে দলে ফাঁক আছে। তবে আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে সত্যি কথা বলতে, যেভাবে আমরা দল সাজিয়েছিলাম, যদি আমাদের মূল বোলাররা থাকত, তাহলে হয়তো ফলাফল অন্যরকম হতো।”

এই পরিস্থিতিতে দল যে চাপে রয়েছে তা স্পষ্ট। তবুও গোয়েঙ্কার শান্ত বার্তা এবং পন্থের কাঁধে হাত রেখে ছবি পোস্ট করা—দলের প্রতি তাঁর আস্থারই প্রতিচ্ছবি। এমন একটি সময়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তখন মালিকের এই মনোভাব দলকে কিছুটা হলেও মানসিক স্বস্তি দেবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০২৫ আইপিএল-এ ব্যর্থ হলেও আগামী দু’বছরের জন্য দলে বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। কারণ আগামী বছর ছোট নিলাম। তাই গোয়েঙ্কা হয়ত এখন থেকেই দলের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

লখনউ সমর্থকদের কাছে এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, একটা দল যখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যায়, তখন তার চারপাশের মানুষের সমর্থনই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়। গোয়েন্‌কা তা বুঝেছেন বলেই হয়তো এবার ক্ষোভ না দেখিয়ে আশার আলো দেখানোর চেষ্টা করেছেন। পন্থকে অধিনায়ক হিসেবে রেখে তিনি দলকে সময় দিতে চান। এবং দলকেও সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে হবে আগামী মরসুমে।

শেষ কথা—আইপিএলে শুধু মাঠে নামা নয়, মাঠের বাইরেও অনেক কিছু শেখায় ক্রিকেট। এই মরসুমে এলএসজি শিখেছে হারকে কীভাবে সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করা যায়। এবং সেটাই হয়তো তাদের ভবিষ্যতের পথকে মজবুত করবে।