আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (Sunrisers Hyderabad) কাছে ছয় উইকেটে পরাজিত হয়ে প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে গেল লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Giants)। সোমবার, লখনউয়ের একানা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে হায়দরাবাদ টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে লখনউ সুপার জায়ান্টস ২০ ওভারে ২০৫ রান তোলে ৭ উইকেট হারিয়ে। মিচেল মার্শ (৬৫*) এবং আইডেন মাক্রম (৬১*) দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি করেন। শুরুটা ছিল আগ্রাসী, কিন্তু মাঝের ওভারে হায়দরাবাদ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনে। শেষদিকে আকাশ দীপের ছয়ে স্কোর পার করে ২০০, যেটা ছিল একটি অপ্রত্যাশিত অবদান।
নিকোলাস পুরান করেন ২৬ বলে ৪৫ রান, যদিও তিনি তার স্বাভাবিক ছন্দে ছিলেন না। আর অধিনায়ক ঋষভ পন্থ আবারও ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতা যেন পুরো সিজন জুড়েই লখনউর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পন্থ, যিনি ২৭ কোটি টাকায় আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখান, পুরো টুর্নামেন্টে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ঝড়ের গতিতে রান তাড়া করে। ১৮.২ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রান তুলে নেয় এবং ম্যাচটি ১০ বল হাতে রেখেই জিতে নেয়। শুরুটা করেন অভিষেক শর্মা, যিনি রবি বিষ্ণোইকে এক ওভারে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে দর্শকদের চমকে দেন। মাত্র ১৮ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অভিষেক, যা ছিল এবারের আসরে তৃতীয় দ্রুততম অর্ধ শতরান।
যদিও দিগভেশ রাঠি অভিষেক শর্মাকে থামান এবং পরে ইশান কিশানকেও ফিরিয়ে দেন, ততক্ষণে হায়দরাবাদ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে। হেনরিখ ক্লাসেন ২৮ বলে ৪৭ রান করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এছাড়াও কামিন্দু মেন্ডিস ও ইশান কিশান মাঝপথে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন।
লখনউর বোলারদের মধ্যে কেবল রাঠি কিছুটা লড়াই করেছেন। তিনি ২টি উইকেট নেন। বাকিদের মধ্যে কেউই কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারেননি। বিশেষ করে রবি বিষ্ণোই, যিনি অভিষেক শর্মার হাতে চরমভাবে মার খেয়েছেন, তার বোলিংয়ে একপ্রকার আত্মবিশ্বাসের অভাবই ফুটে ওঠে।
এই হারের ফলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের জন্য আইপিএল ২০২৫ শেষ হয়ে গেল । প্লে-অফে ওঠার আশা শেষ হয়ে গেল এবং অধিনায়ক পন্থের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দলে তার বিশাল মূল্যের তুলনায় পারফরম্যান্স ছিল অনেকটাই নিম্নমানের। দলের ব্যাটিং অর্ডারে একাধিক পরিবর্তন হলেও কাঙ্ক্ষিত ফল মেলেনি।
এই হারের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভবিষ্যতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে শুধুমাত্র বড় নামের উপর নির্ভর না করে, বাস্তব পারফরম্যান্সে জোর দিতে হবে। তরুণ প্রতিভা, যেমন রাঠির মতো বোলারদের উপর বিনিয়োগ করাই হতে পারে দলের জন্য সঠিক পথ।