নস্টালজিয়া ও নতুনতার এক অনবদ্য মেলবন্ধন ঘটতে চলেছে বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগের (Bengal Pro T20 League) দ্বিতীয় মরসুমে। বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী চরিত্র ‘বাঁটুল দি গ্রেট’ (Bantul The Great) এখন ক্রিকেটের (Cricket) পিচে — লিগের দ্বিতীয় সংস্করণের অফিসিয়াল ম্যাসকট হিসাবে দেখা যাবে নারায়ণ দেবনাথের এই অমর সৃষ্টি চরিত্রটিকে।
ক্রিকেটে ‘বাঁটুল’-এর আগমন
সোমবার কলকাতার এক নামী হোটেলে আয়োজিত হয়েছিল এই বছরের লিগের ড্রাফটিং অনুষ্ঠান। সেই মঞ্চেই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (CAB) ঘোষণা করে যে ‘বাঁটুল দি গ্রেট’ এবার থেকে হবে লিগের মুখ। একদিকে টুর্নামেন্টের উত্তেজনা, অন্যদিকে বাঁটুলের মতো জনপ্রিয় চরিত্রের আবির্ভাব। এই দুই মিলে এবার যেন এক নতুন রূপ পাচ্ছে বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেট।
এই উদ্যোগের মূল ভাবনা থেকে কাজের বাস্তবায়ন পর্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করেছে ‘দীপ প্রকাশন’। নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্টিকে আধুনিক প্রজন্মের কাছে নতুনভাবে উপস্থাপনের জন্যই এই অভিনব ভাবনা। ড্রাফটিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ঝুলন গোস্বামী, সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং দীপ প্রকাশনের পক্ষ থেকে দীপ্তাংশু মণ্ডল-সহ আরও অনেক বিশিষ্টজন।
দুই বিভাগে একসঙ্গে সূচনা
পুরুষ ও মহিলা — দুই বিভাগের খেলাই শুরু হবে একদিনে, অর্থাৎ জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। পুরুষদের ম্যাচ হবে ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে, আর মহিলাদের খেলা হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের মাঠে। প্রথম বছর এই লিগ দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এবার ‘বাঁটুল দি গ্রেট’র উপস্থিতি এই টুর্নামেন্টকে নিয়ে যাবে আরও বৃহৎ পরিসরে।
শৈশবের স্মৃতি আর ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ
সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, “এই বছরের ড্রাফট শুধুই সংখ্যার দিক থেকে নয়, ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত হয়ে থাকল। কারণ আমরা আমাদের শিকড়কে উদযাপন করেছি ‘বাঁটুল দি গ্রেট’র মাধ্যমে। এটা শুধু আমাদের শৈশবের স্মৃতিচারণ নয়, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য বাংলার ক্রিকেটকে গড়ে তোলার এক অনন্য সুযোগ।”
ক্রিকেট ও সাহিত্যের এই যুগলবন্দী নিঃসন্দেহে একটি সাহসী এবং সৃজনশীল পদক্ষেপ। একদিকে যেমন এতে স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে, অন্যদিকে শিশু ও কিশোর দর্শকদের কাছে ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টাও স্পষ্ট।
বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগ ২০২৫ শুধুমাত্র একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়। এটি একটি সাংস্কৃতিক উৎসব, যেখানে বাংলার ক্রিকেট, সাহিত্য এবং আবেগ একসাথে মিলেমিশে এক নতুন পরিচয় খুঁজে নিচ্ছে। বাঁটুলের মতো সুপারহিরো যখন মাঠে নামছে, তখন এই লিগ শুধুই খেলার নয়, বাংলার গর্ব, স্মৃতি আর সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠছে।