কলকাতার (Kolkata) সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে এক জমকালো অনুষ্ঠানে ভারতের অন্যতম ক্রীড়াবিদ, টেনিস জগতের উজ্জ্বল তারকা শ্রী লিয়েন্ডার পেস-কে প্রদান করা হল ৩২তম পি. সি. চন্দ্র পুরস্কার (P C Chandra Puraskaar) ২০২৫। পি. সি. চন্দ্র গ্রুপ-এর উদ্যোগে প্রবর্তিত এই সম্মাননা দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়। এই পুরস্কার শুধুমাত্র কোনো অর্জনের স্বীকৃতি নয়, এটি সেইসব ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, যাঁরা তাঁদেৃর কাজের মাধ্যমে সমাজে আলো ছড়িয়েছেন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন।
এই বছরের প্রাপক শ্রী লিয়েন্ডার পেস হলেন একজন কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ, যিনি ভারতীয় টেনিসকে আন্তর্জাতিক স্তরে বহুবার গর্বিত করেছেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা ও ১৯৯৬ সালের আটলান্টা অলিম্পিকে একটি ব্রোঞ্জ পদক। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁর নিরলস সাধনা, আত্মনিবেদন এবং সাফল্য তাঁকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ডাবলস ও মিক্সড ডাবলস খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
পুরস্কার অনুষ্ঠানে পি. সি. চন্দ্র জুয়েলার্স-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী উদয় কুমার চন্দ্র বলেন, “শ্রী লিয়েন্ডার পেস শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নন, তিনি এক অনুপ্রেরণা। খেলাধুলায় তাঁর অবদানের জন্য আমরা গর্বিত, এবং আজ তাঁকে এই সম্মাননা জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। পি. সি. চন্দ্র পুরস্কার আমাদের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী পূর্ণ চন্দ্র চন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন, যেখানে প্রতিটি কৃতিত্বের স্বীকৃতি দিয়ে সমাজে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।”
এই সম্মাননার সঙ্গে দেওয়া হয় ₹২০ লক্ষ টাকার করমুক্ত পুরস্কার রাশি। এটি ভারতের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন বেসরকারি সম্মাননা, যা ১৯৯৩ সালে প্রবর্তিত হয়। সেই সময় থেকে এই পুরস্কার বহু গুণী ব্যক্তিত্বকে প্রদান করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বনাথন আনন্দ, কৈলাশ সত্যার্থী, আশা ভোঁসলে, ডাঃ দেবী শেঠি, কপিল দেব, উস্তাদ আমজাদ আলি খান, মেরি কম এবং ইসরোর বর্তমান চেয়ারম্যান শ্রী সোমনাথ এস-এর মতো ব্যক্তিত্বরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী সুবীরানন্দজি, যিনি প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন। এছাড়াও মঞ্চে ছিলেন পি. সি. চন্দ্র গ্রুপ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী অরুণ কুমার চন্দ্র, চন্দ্র’স গ্রিন প্রোজেক্টস লিমিটেড-এর ডিরেক্টর শ্রী অভিজিৎ লাহা সহ গণ্যমান্য অতিথিবৃন্দ, মিডিয়া প্রতিনিধিগণ এবং পি. সি. চন্দ্র গ্রুপের শুভানুধ্যায়ীরা।
পুরো সন্ধ্যা জুড়ে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, স্মৃতিচারণ ও সম্মাননা প্রদান। অনুষ্ঠানে শ্রী লিয়েন্ডার পেস নিজের বক্তব্যে বলেন, “এই সম্মান পেয়ে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমার দীর্ঘ ক্রীড়াজীবনে ভারতবাসীর ভালোবাসা ও সমর্থনই আমাকে এগিয়ে চলতে অনুপ্রাণিত করেছে। এই পুরস্কার সেই ভরসারই স্বীকৃতি।”
পি. সি. চন্দ্র পুরস্কার শুধু একটিবারের অনুষ্ঠান নয়, এটি এক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা, যা সমাজকে বারবার মনে করিয়ে দেয় — প্রতিভা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের সাংস্কৃতিক দায়িত্ব। শ্রী লিয়েন্ডার পেস-এর মতো ক্রীড়াবিদের সম্মাননায় সেই মূল্যবোধই আরও একবার দীপ্তিময় হয়ে উঠল।