ফুটবলের প্রাণকেন্দ্র কলকাতা (Kolkata Football)। এই শহরের মাটি জুড়ে ছড়িয়ে আছে ফুটবল প্রেম, ঐতিহ্য, ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের ধারক ও বাহক হল কলকাতা ফুটবল লিগ। প্রতি বছর এই লিগ ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে শহরের কোণে কোণে। সেই উত্তেজনার আগুন আবারও জ্বলতে শুরু করেছে, কারণ গড়াতে চলেছে কলকাতা ফুটবল লিগের বল, শুরু হচ্ছে নতুন মরসুমের খেলা।
সোমবার কলকাতার আইএফএ (IFA) অর্থাৎ ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ভবনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন পঞ্চম ডিভিশনের ‘এ’ গ্রুপ এবং তৃতীয় ডিভিশনের ক্লাব প্রতিনিধি ও আইএফএ কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত, সহ-সচিব মহম্মদ জামাল, সুদেষ্ণা মুখার্জী এবং এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সুফল রঞ্জন গিরি।
বৈঠকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়। কিভাবে লিগ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যায়, মাঠ ব্যবস্থাপনা, রেফারির সংখ্যা, ক্লাবগুলির প্রস্তুতি শোঃ সব বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এই বৈঠকের শেষে ঘোষণা করা হয় যে, পঞ্চম ডিভিশনের এ গ্রুপের খেলা শুরু হবে আগামী ১৫ জুন থেকে। অপরদিকে, তৃতীয় ডিভিশনের খেলা শুরু হবে তারও আগে, ১০ জুন থেকে। দুই ডিভিশনেই বহু প্রতিভাবান খেলোয়াড় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্লাবগুলো এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে অনুশীলন ও প্রস্তুতি।
কলকাতা ফুটবল লিগ কেবল একটি খেলার প্রতিযোগিতা নয়, এটি একটি আবেগ, একটি চলমান ইতিহাস। এই লিগের মধ্য দিয়েই বহু খেলোয়াড় তাঁদের কেরিয়ারের সূচনা করেন এবং ভবিষ্যতে বড় মঞ্চে খেলার সুযোগ পান। অনেক প্রখ্যাত ভারতীয় ফুটবলারের উত্থান হয়েছে এই লিগ থেকেই।
তৃতীয় এবং পঞ্চম ডিভিশন লিগগুলি, যদিও মূল মঞ্চের তুলনায় অনেকটাই নীচের স্তরে, কিন্তু এখানেও প্রতিযোগিতার মাত্রা কোনো অংশে কম নয়। স্থানীয় ক্লাবগুলির মধ্যে রীতিমতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি হয়, এবং প্রতিটি ম্যাচে থাকে লড়াকু মানসিকতা। বহু দর্শক, স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা এই ম্যাচগুলো দেখতে মাঠে আসেন, এবং তাঁদের উৎসাহে ফুটবলারেরাও অনুপ্রাণিত হন।
আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা চাই এই বছর কলকাতা লিগ আরও বড় মঞ্চে পৌঁছাক। খেলোয়াড়দের জন্য উপযুক্ত সুযোগ ও পরিকাঠামো গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”
সবমিলিয়ে, আবারও নতুন করে শুরু হতে চলেছে কলকাতার ঘরোয়া ফুটবলের এক বড় অধ্যায়। আগামী জুন মাস থেকে বল গড়াবে ময়দানে, প্রতিযোগিতায় নামবে ক্লাবগুলি, এবং ছন্দে ফিরবে শহরের চেনা ফুটবল উন্মাদনা। ফুটবলপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন সেই প্রথম সিটি ও কিক-অফের জন্য।