Kibu Vicuna Recalls: সেমিফাইনালের লড়াইয়ে আগে পোলিশ লিগের কথা স্মরণ করিয়ে বড় বার্তা কিবুর

মাত্র কয়েক বছরের ক্লাব হয়েও আজ কলকাতার ময়দানে অন্যতম আলোচিত নাম ডায়মন্ড হারবার এফসি (Diamond Harbour FC)। আইলিগ থেকে শুরু করে কলকাতা লিগের পর এবার…

Kibu Vicuna Recalls Polish League Experience, Sends Bold Message Ahead of Diamond Harbour FC vs East Bengal Durand Cup Semifinal

মাত্র কয়েক বছরের ক্লাব হয়েও আজ কলকাতার ময়দানে অন্যতম আলোচিত নাম ডায়মন্ড হারবার এফসি (Diamond Harbour FC)। আইলিগ থেকে শুরু করে কলকাতা লিগের পর এবার ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়া নিঃসন্দেহে অভূতপূর্ব ঘটনা। ২০ আগস্ট যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাদের প্রতিপক্ষ আর কেউ নয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতার উজ্জ্বল পতাকা বয়ে চলা মশাল ব্রিগেড। ডার্বিতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ইস্টবেঙ্গল নিঃসন্দেহে কিবু ভিকুনার (Kibu Vicuna) দলের জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। তবে পিছিয়ে থেকেও লড়াই করার মানসিকতাই ডায়মন্ড হারবারের মূল অস্ত্র।

গ্রুপ পর্বে মোহনবাগানের কাছে হারের পর অনেকেই ভেবেছিল ডায়মন্ড হারবারের যাত্রা হয়ত থেমে যাবে। কিন্তু কোচ কিবু ভিকুনার কৌশলগত পরিবর্তনই নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে দল। জামশেদপুরের মাঠে বিপুল দর্শকচাপ সামলে সাইরুতকিমার দুর্দান্ত জোড়া গোলে জয় এনে দিয়েছে তার প্রমাণ। ডায়মন্ড হারবার এখন সেই দলে পরিণত, আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামে। আর এই মানসিক দৃঢ়তাই বুধবার সেমিফাইনালের লড়াইয়ে তাদের বড় সম্পদ।

   

ইস্টবেঙ্গলের হাতে রয়েছে বেশ কিছু তারকা বিদেশি খেলোয়াড়। দিমিত্রিয়স, মিগুয়েল, কেভিন এবং সাউল ক্রেসপো। অন্যদিকে চোটের কারণে ডায়মন্ডের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ক্লেটন সিলভেইরা বাইরে। ফলে ভিকুনার হাতে মাত্র দুই বিদেশি। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মিকেল কার্তোজা ও স্লোভেনিয়ান স্ট্রাইকার লুকা মাজসেন। কাগজে কলমে শক্তিতে পিছিয়ে থাকলেও কোচের বিশ্বাস, “ফুটবলে নাথিং ইজ ইমপসিবল। এটা ঠিক, ইস্টবেঙ্গল ধারে ভারে এগিয়ে। ওদের হাতে পুরো কোটার বিদেশি। একইসঙ্গে একঝাঁক নামী ভারতীয় ফুটবলার। তাই ওদের সমীহ না করাটা বোকামি। শুধু মিগুয়েল, সল নয় বা অন্য বিদেশি ফুটবলাররা, মহেশ ও বিপিন সহ দলের বাকি ভারতীয় ফুটবলারদের কথাও বলতে হবে মোহনবাগান ম্যাচ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে। তার মানে এই নয়, মাঠে নামার আগেই আমরা হেরে বসে আছি। আগেই বললাম, ফুটবলে এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে, যেখানে কাগজে কলমে পিছিয়ে থাকা দল শক্তিতে এগিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে লড়াইয়ের জোস ও বুদ্ধিদীপ্ত খেলার জোরে।” তাই এদিন পোলিশ লিগে কোচিং করার অভিজ্ঞতা টেনে এনে তিনি বুঝিয়েছেন, আন্ডারডগ হয়েও ম্যাচ জেতা সম্ভব। যদি দল একাগ্রতা, শৃঙ্খলা ও বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল খেলে।

সেমিফাইনালে নজর থাকবে জবি জাস্টিনের উপরেও। একসময় ইস্টবেঙ্গলেই কেরিয়ার গড়ে ওঠা এই স্ট্রাইকারকে আবার আলোচনার কেন্দ্রে এনেছে ডায়মন্ড হারবার। পুরনো দলের বিপক্ষে গোল করলে সেলিব্রেশন করবেন কিনা? এই প্রশ্নে জবির জবাব স্পষ্ট, “একসময় ইস্টবেঙ্গলে খেলেছি, সম্মান পেয়েছি। কিন্তু এখন আমি ডায়মন্ড হারবারের ফুটবলার। পেশাদারিত্বই আসল। গোল করলে আবেগের মুহূর্তে কী করব তা এখন বলা মুশকিল।” যদিও অতীতের স্মৃতি ও বর্তমানের দায়িত্বের মাঝেই দাঁড়িয়ে আছেন জবি।

Advertisements

সাংবাদিকবৈঠকে কিবুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি যেহেতু একসময় মোহনবাগানের কোচ ছিলেন, এবার কি ডার্বি হারের ক্ষত মেটাতে সবুজ-মেরুন সমর্থকরা ডায়মন্ড হারবারকে সমর্থন করার জন্য আহবান জানাবেন? কিন্তু কিবুর উত্তর ছিল সোজাসাপটা। তিনি বলেন, “আমি শুধু আমার দলের সমর্থকদেরই আহ্বান জানাতে পারি। জয় আসবে আমাদের নিজেদের যোগ্যতায়, অন্যের সমর্থনে নয়।”

ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল ডায়মন্ড হারবারের জন্য ঐতিহাসিক সুযোগ হলেও কোচের চোখ আই লিগের দিকেও। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য আই লিগ জিতে আইএসএলে ওঠা।” কলকাতার ময়দানে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো দাপুটে ইতিহাস নেই ডায়মন্ড হারবারের। নেই বিপুল সংখ্যক সমর্থক বা বিদেশি তারকাদের বাহুল্য। তবুও বুধবার ডুরান্ডের সেমিফাইনালে ডায়মন্ড হারবারের জন্য এটা নিজেদের প্রমাণ করার মঞ্চ।