ভারতীয় ফুটবলে (Indian Football) এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে এই আগস্টেই। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে, ব্লু টাইগার্সদের (Indian Football Team) হেড কোচ হিসেবে পূর্ণকালীন চুক্তিতে সই করলেন খালিদ জামিল (Khalid Jamil)। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) বুধবার, ১৩ আগস্ট জানিয়েছে জামিল দু’বছরের জন্য ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। চুক্তিতে অতিরিক্ত এক বছর বাড়ানোর অপশনও রাখা হয়েছে।
ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে এই মুহূর্তটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১২ সালে সাভিও মেদেইরার পর, এই প্রথম কোনও ভারতীয় কোচ জাতীয় দলের দায়িত্ব পেলেন। আই-লিগ ও আইএসএল মিলিয়ে ক্লাব ফুটবলে অভাবনীয় সাফল্যের পর এবার জাতীয় দলের দায়িত্ব পেলেন ৪৮ বছর বয়সী জামিল।
জাতীয় দলের কোচ হিসেবে তাঁর প্রথম চ্যালেঞ্জ শুরু হতে চলেছে খুব শিগগিরই। ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকেই কলকাতা কিংবা বেঙ্গালুরুতে সম্ভবত শুরু হচ্ছে জামিলের প্রথম প্রশিক্ষণ শিবির। এই ক্যাম্পে কারা সুযোগ পাবেন, সে তালিকা এখনও প্রকাশ করা না হলেও, জানা গিয়েছে শীঘ্রই নাম ঘোষণা করা হবে।
সরাসরি তাঁর কোচিংয়ে ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতে চলেছে ২৯ আগস্ট। সেদিন ভারতের প্রতিপক্ষ মধ্য এশিয়ার শক্তিশালী দল তাজিকিস্তান। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে কাফা নেশনস কাপ ২০২৫। ভারত রয়েছে গ্রুপ ডি’তে। বাকি দুটি ম্যাচ ১ এবং ৪ সেপ্টেম্বর, যথাক্রমে ইরান ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে।
এরপর অক্টোবর মাসে অপেক্ষা করছে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ৯ ও ১৪ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭-এর বাছাইপর্বের লড়াই। এই টুর্নামেন্টগুলিকে সামনে রেখেই জামিলের পরিকল্পনা শুরু হচ্ছে, আর তার প্রথম ধাপ হচ্ছে এই প্রস্তুতি শিবির।
জামিল বলেন, “জাতীয় দলের কোচ হওয়া গর্বের ও সৌভাগ্যের বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করেছি, তাদের শক্তি-দুর্বলতা আমি জানি। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে।”
ক্লাব স্তরে জামিলের সফলতা উল্লেখযোগ্য। ২০১৬-১৭ মরসুমে আইজল এফসিকে আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন করে গোটা দেশের নজর কেড়েছিলেন। এরপর কোচ হিসেবে কাজ করেছেন মুম্বই এফসি, ইস্টবেঙ্গল, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এবং সর্বশেষ জামশেদপুর এফসির হয়ে। তাঁর কোচিংয়ে জামশেদপুর ফাইনাল খেলেছে ২০২৫ সালের কলিঙ্গ সুপার কাপ এবং পৌঁছেছে ২০২৪-২৫ সিজনের আইএসএল প্লে-অফ সেমিফাইনালে।
একজন প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার হিসেবেও খালিদ জামিলের কৃতিত্ব কম নয়। ১৯৯৭ সালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক। তিনি ছিলেন ২০০২ সালের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব এবং ২০০১ সালের মেরদেকা টুর্নামেন্টের দলে। ক্লাব ফুটবলে মাহিন্দ্রা ইউনাইটেডের হয়ে জাতীয় ফুটবল লিগ, ফেডারেশন কাপ ও আইএফএ শিল্ড জিতেছেন।
এদিকে, জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার কারণে ডুরান্ড কাপে জামশেদপুর এফসির কোচিংয়ে থাকছেন না জামিল। ১৭ আগস্ট জামশেদপুরের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে তাঁকে ছাড়াই খেলবে দল। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জামিলকে রিলিজ করেছে দেশের স্বার্থে। তবে একটা বড় প্রশ্ন এখনো রয়ে গিয়েছে এই প্রশিক্ষণ শিবিরে কাদের ডাক পাবেন জামিল? অনেক আইএসএল ক্লাব এখনও প্রস্তুতি শুরু না করায়, শুধুমাত্র প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া ক্লাবের ফুটবলাররাই কি শিবিরে জায়গা পাবেন?
Khalid Jamil signs full-time contract as Indian Football Team team head coach