ভারতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) প্রধান কোচ হিসেবে খালিদ জামিলের (Khalid Jamil) নিয়োগ এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সূচনা করেছে। ২০১২ সালের পর ফের একবার ভারতীয় কোচ (Coach) এই দায়িত্ব পেলেন। বর্তমানে এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময় খালিদ জামিলের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল। তখন ব্লু টাইগার্সরা দিশেহারা, আত্মবিশ্বাসহীন ও ফলহীন এক সময়ে দাঁড়িয়ে।
আই-লিগে আইজল এফসিকে ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়ন করানো থেকে শুরু করে, আইএসএলে নর্থইস্ট ইউনাইটেড ও জামশেদপুর এফসির সাফল্য খালিদের কোচিং ক্যারিয়ার ইতিমধ্যেই প্রশংসিত। এখন জাতীয় দলের দায়িত্ব পেয়ে তাঁর সামনে রয়েছে নতুন কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ।
১) গোলের খরা কাটাতে হবে
ভারতীয় দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এখন গোলের অভাব। শেষ তিন ম্যাচে তারা একটিও গোল করতে পারেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র, হংকংয়ের কাছে ১-০ হার এবং থাইল্যান্ডের কাছে ২-০ প্রীতি ম্যাচে পরাজয়। তিন ম্যাচেই আক্রমণভাগ কার্যত নিষ্প্রভ ছিল।
মার্চে মালদ্বীপের বিরুদ্ধে ৩-০ জয়ই ছিল চলতি বছরে ভারতের একমাত্র জয়। প্রাক্তন কোচ মার্কুয়েজের অধীনে আট ম্যাচে মাত্র পাঁচ গোল এসেছে। জামিলের স্টাইল কিন্তু ভিন্ন। তাঁর দলগুলো সাধারণত রক্ষণভাগে সুশৃঙ্খল থাকে এবং দ্রুত কাউন্টার অ্যাটাক থেকে সুযোগ তৈরি করে। সেই ধরন যদি তিনি জাতীয় দলেও আনতে পারেন, তাহলে আক্রমণভাগে ধার আসতে পারে।
২) এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ঘুরে দাঁড়ানো
২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব ভারতের সামনে বড় পরীক্ষা। গ্রুপ ‘সি’তে এখনও জয়ের মুখ দেখেনি তারা। বাংলাদেশের সঙ্গে ড্র এবং হংকংয়ের কাছে পরাজয়ে এক পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ব্লু টাইগার্সরা ।
অক্টোবরে সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ডাবল হেডার ম্যাচ দু’টি হবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে জামিলের প্রথম আসল পরীক্ষা হবে কাফা নেশনস কাপ, যেখানে ভারতের প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তান, ইরান এবং আফগানিস্তান। এই টুর্নামেন্ট শুধু প্রস্তুতি নয়, দলের মধ্যে বোঝাপড়াও গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
ইগর স্টিমাচের অধীনে টানা দু’বার এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন করেছিল ভারত। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে জামিলকে দ্রুত দলের পারফরম্যান্সে উন্নতি আনতে হবে।
৩) দলের খেলায় কাঠামো ও কার্যকারিতা আনতে হবে
তৃতীয় এবং সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ভারতের খেলায় কাঠামোগত স্পষ্টতা আনা। ইগর স্টিমাচ ও মার্কুয়েজ দু’জনই বল পজেশনভিত্তিক খেলায় জোর দিয়েছিলেন। তবে বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয়নি। অধিকাংশ সময় বল দখলে রাখলেও গোলের সুযোগ তৈরি বা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে দল ব্যর্থ হয়েছে।
জামিল বরাবরই বাস্তববাদী কোচ হিসেবে পরিচিত। তাঁর দলগুলো সাধারণত সংহত, সংগঠিত ও কার্যকর। নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ২০২০-২১ আইএসএলে প্লে-অফে তুলে আনার নজির কিংবা সদ্যসমাপ্ত মৌসুমে জামশেদপুর এফসিকে সেমিফাইনাল এবং কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব তার প্রমাণ।
Key tasks facing Khalid Jamil as Indian Football Team head coach