নয়ডার পর কানপুর ! স্টেডিয়াম ‘ইস্যুতে’ ফের বিদ্ধ ভারত

গ্রেটার নয়ডার পর এবার কানপুর । খারাপ ‘স্টেডিয়াম’ ইস্যুতে ফের একবার বিশ্ব ক্রিকেটে সমালোচিত হল ভারত। চলতি ভারত-বাংলাদেশ সিরিজের (IND vs BAN) দ্বিতীয় টেস্ট ভেন্যু…

Kanpur's Green Park Stadium Declared Unsafe Ahead of 2nd Test Match

গ্রেটার নয়ডার পর এবার কানপুর । খারাপ ‘স্টেডিয়াম’ ইস্যুতে ফের একবার বিশ্ব ক্রিকেটে সমালোচিত হল ভারত। চলতি ভারত-বাংলাদেশ সিরিজের (IND vs BAN) দ্বিতীয় টেস্ট ভেন্যু কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামকে ঘিরে বিবিধ প্রশ্ন তুলে কটাক্ষ করেছে বাংলাদেশি ক্রিকেট মহল। পাশাপাশি ভারতের গ্রেটার নয়ডা স্টেডিয়ামের পরিবেশের সাথে গ্রিন পার্কের ‘সাদৃশ্য’ও খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশ গণমাধ্যম। এছাড়াও গতকাল একটি সাক্ষাৎকারে গ্রিন পার্কের প্রেসবক্স থেকে প্রধান প্রবেশদ্বার-সমস্ত কিছু নিয়েই আঙুল তুলেছেন বাংলাদেশের সহকারী কোচের দায়িত্বে থাকা ডেভিড হ্যাম্প।

বর্তমানে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা রয়েছে কানপুরের স্টেডিয়ামের। তবে বাইরে থেকে দেখলে গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামের অবস্থা একেবারেই ‘গ্রিন’ সুলভ নয়। তথাকথিত ভারতের বাদবাকি স্টেডিয়ামগুলির মতো এখানে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। এছাড়াও এই প্রেসবক্সের অবস্থা নিয়েও ভারতকে বিদ্রুপ করতে ছাড়েননি ওপার বাংলার সমর্থকরা। গ্রিন পার্কের প্রেসবক্সে কোনো কাচের দেয়াল, এসি না থাকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও টেস্ট শুরুর দুদিন আগেও কোনো ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়নি বলেই দাবি করেছেন বাংলাদেশি ক্রীড়া সাংবাদিকরা। গতকাল রাত্রে কানপুরের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এক সাংবাদিক বলেন, “প্রেসবক্সের দিকটা দেখুন। পন্ত একটা ছক্কা মারলে মানুষ নাচানাচি শুরু করলেই মনে হয় ভেঙে পড়বে। এখনো যেন ওই সাহেবদের আমলে পড়ে আছে। এখানে টেস্ট দেওয়ার কী দরকার? দক্ষিণে হোক টেস্ট। দর্শকও হয়। দেখতেও ভালো।”

   

Virat Kohli ভুল করেছিলেন বিরাট? ২ বছর পর প্রাক্তন কোচ যা বললেন…

আসলে উত্তর প্রদেশের শহর কানপুরের এ মাঠটি ভারতের পুরোনো স্টেডিয়ামগুলোর একটি। তবে এটি এই মুহূর্তে মুম্বাই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কলকাতা, আহমেদাবাদ, নাগপুরের মতো আধুনিক হয়ে ওঠেনি। ভারতের স্বাধীনতার আগে ১৯৪৫ সালে তৈরি এ মাঠটাকে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য ব্যবহার করত ইংরেজরা। তাদের সুবাদেই এই মাঠের নাম গ্রিনপার্ক রাখা হয়েছে। তবে ব্রিটিশ আমলের পর সবকিছুর ধীরে ধীরে আধুনিকীকরন হলেও এই মাঠের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয়নি।

বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থা লখনৌতে ৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ঝকঝকে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করেছে। সেকারনেই এই শতাব্দীপ্রাচীন স্টেডিয়াম ‘গুরুত্ব’হারিয়েছে উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে। বর্তমানে গ্রিন পার্ক উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কাছে জাদুঘরের মতো, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের অংশ। গ্রিন পার্কের কপালে তিন-চার বছর পর একটি টেস্ট ম্যাচ ভাগে পড়ে ওই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জোরে।

সর্বশেষ টেস্ট হয়েছে ২০২১ সালে, প্রথমটি হয়েছিল ১৯৫২ সালে। ওই সময় উত্তর প্রদেশের প্রথম গভর্নর স্যার এইচ পি মোদির নামে গ্রিন পার্ককে ‘মোদি স্টেডিয়াম’বলা হতো। এ মাঠেই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানুয়াল স্কোরবোর্ড। ২০১৫ সালে সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বেশ কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডা স্টেডিয়ামকে ঘিরে সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিল বিসিসিআই। আফগানিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল এই মাঠেই। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থার দুর্দশা এবং মাঠে কর্মচারীদের অনুপস্থিতির অভাবে বৃষ্টিতে সেই ম্যাচ ভেস্তে যায়। এছাড়াও আইপিএল চলাকালীন গুজরাটের নরেন্দ্র মোদী সেটেডিয়ামেও বৃষ্টির নিকাশি ব্যবস্থার দুরবস্থা ধরা পরে। সবমিলিয়ে দ্বিতীয় টেস্ট(IND vs BAN) শুরুর আগেই স্টেডিয়াম নিয়ে ভারতের এই সমস্যা বেশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে জয়শাহ -রজার বিনির কমিটির কাছে।