কন্যাশ্রী কাপে খেলবে উত্তরবঙ্গের এই ক্লাব? জানুন

এবার কন্যাশ্রী কাপে (Kanyashree Cup) নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গের (North Bengal) বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে খেলতে আসা মহিলা ফুটবলারদের (Womens…

North Bengal Womens-Football will be played Kanyashree Cup

এবার কন্যাশ্রী কাপে (Kanyashree Cup) নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গের (North Bengal) বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে খেলতে আসা মহিলা ফুটবলারদের (Womens Footballer) এবার একত্রিত হয়ে কলকাতার মাঠে নামতে দেখা যাবে। এই প্রথম কালিম্পংয়ের (Kalimpong) ‘শেয়ার গার্লস অ্যাকাডেমি’ (Share Girls Academy) চলেছে গোটা টিম নিয়ে কন্যাশ্রী কাপে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে, যা পূর্বে কখন হয়নি। এটা একদিকে যেমন উত্তরবঙ্গের ফুটবল ইতিহাসে (Football) একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, তেমনি মহিলা ফুটবলের উন্নয়নের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

কেরালা ম্যাচে ফিরছেন সাহাল! বড় আপডেট বাগান শিবিরের

   

এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে দেবাঞ্জন সেন ফাউন্ডেশন, যা বাংলার একমাত্র মেয়ে ফুটবলারদের আবাসিক অ্যাকাডেমি গড়ে তুলেছে। এই অ্যাকাডেমি কালিম্পংয়ের ‘শেয়ার ক্লাব’ ও স্কটিশ ইউনিভার্সিটি মিশন ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত। এখানে অল্প বয়সী, প্রতিভাবান মেয়ে ফুটবলারদের জন্য রয়েছে বিনামূল্যে থাকার, পড়াশোনা করার এবং নিয়মিত ফুটবল প্র্যাকটিসের সুযোগ। এই অ্যাকাডেমি ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এর প্রভাব উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়েছে।

গাব্বা টেস্টে রোহিতের কী করণীয় পরামর্শ ভাজ্জির

দেবাশিস সেন, ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা, বলেন , “আমরা এই অ্যাকাডেমি গড়ে তোলার সময় লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র ফুটবল খেলোয়াড় তৈরি করা নয়, বরং এই তরুণী ফুটবলারদের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটান। তাঁদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা এবং ফুটবলে প্রতিভা বিকাশের ব্যবস্থা করা।” বিশেষত দার্জিলিং–কালিম্পং এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা যাতে কোনও প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ফুটবল খেলতে পারে, সেই জন্য এই উদ্যোগের গুরুত্ব অনেক বেশি।

এই অ্যাকাডেমির খেলোয়াড়দের মধ্যে কিছু মেধাবী ফুটবলারের নাম উঠে এসেছে, যেমন আদর্শনা ছেত্রী, নেহা বরুই, সুষনা রাই, কবিতা চৌধুরি, আনসু রাই, সৃজনা প্রধান, রোজি রাই এবং আরও অনেকে। তাদের মধ্যে প্রতিভা ও কর্মদক্ষতার জন্ প্রাক্তন জাতীয় কোচ অনিতা সরকার বিশ্বাস করেন যে, এই মেয়েরা কন্যাশ্রী কাপে সাফল্য অর্জন করবে।

ম্যাচ বয়কটের পরিকল্পনা নিয়ে সমর্থকদের ঝাঁঝালো উত্তর মিকেল স্ট্যাহরের

অনিতা সরকার, যিনি নিজের ক্যাম্পে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন, এবার দেবাশিস সেন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি শক্তিশালী টিম গড়ার কাজে যুক্ত হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমার লক্ষ্য ছিল ভালো দল তৈরি করা। তাই আমি কালিম্পংয়ের অ্যাকাডেমির সেরা ২৫ জন ফুটবলারের মধ্যে বেছে নিয়েছি।”

তবে সবকিছুই সহজ ছিল না। কলকাতার মাঠে মেয়েদের নিয়মিত প্র্যাকটিসের জন্য ভালো জায়গার অভাব ছিল। এ বিষয়ে অনিতা বলেন, “কলকাতায় আসার পর খেয়াল করলাম যে, মাঠগুলোর অবস্থা খুব ভালো নয়, কারণ অধিকাংশ জায়গায় ক্রিকেটের জন্য মাঠে খেলা হচ্ছে। মেয়েদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন ভালো প্র্যাকটিসের মাঠ। কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।”

আলবার্তোদের দিকে বাড়তি নজর বাগান কোচের, চলল কেরালা বধের প্রস্তুতি

এই সমস্যার পরও দেবাশিস এবং অনিতাদের উদ্যোগে কোনও ফাঁকি নেই। উত্তরবঙ্গের মেয়েদের জন্য তারা কলকাতার মতো বড় শহরে এসে প্রতিষ্ঠিত হতে চান। তার জন্য শুধু প্র্যাকটিসের সুযোগ নয়, ভালো মানের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের সুযোগও তারা নিশ্চিত করতে চাইছেন। উত্তরবঙ্গের এই মেয়েদের সামনে ভবিষ্যতে যে আরও বড় সুযোগ অপেক্ষা করছে, তা স্পষ্ট।

আসন্ন কন্যাশ্রী কাপে কালিম্পংয়ের অ্যাকাডেমির মেয়েরা না শুধুমাত্র নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরবেন, বরং বাংলার ফুটবল ইতিহাসে নতুন একটি দিক উন্মোচন করবেন। সাফল্য আসুক বা না আসুক, তাদের এই যাত্রা ফুটবল প্রেমীদের কাছে এক নতুন উজ্জীবনী শক্তি হিসেবে কাজ করবে।