ভারত-অস্ট্রেলিয়া (India vs Australia) সিরিজের মধ্যে অন্যতম প্রধান আলোচনা বিষয় ছিল অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউডের (Josh Hazlewood) ফিটনেস। সিরিজ শুরুর আগে থেকেই তাঁর ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। পার্থে টেস্টের আগে দীর্ঘদিনের চোট থেকে ফিট হয়ে ফিরে আসেন হ্যাজেলউড এবং দুর্দান্ত বোলিংও করেছিলেন। কিন্তু একমাত্র ম্যাচে খেলেই ফের চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে হয় তাঁকে। গোলাপি টেস্টে যেখানে এক দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য স্কট বোল্যান্ডকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, সেখানে আবার হ্যাজেলউডকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
তবে, ব্রিসবেন টেস্টের আগে অস্ট্রেলিয়া শিবির জানায়, হ্যাজেলউড ফিট হয়ে ফিরছেন। কিন্তু তাঁর ফিটনেস পুরোপুরি স্থিতিশীল ছিল কি না, সেটি নিয়ে সন্দেহ রয়ে যায়। আর তাই, গাব্বা টেস্টের চতুর্থ দিনে একমাত্র এক ওভার বল করেই হ্যাজেলউড মাঠ ছাড়েন। তাঁর পায়ের পেশিতে চোট লেগেছে বলে জানা গিয়েছে এবং সেই চোটের তীব্রতা বোঝার জন্য তাঁকে স্ক্যানের জন্য পাঠানো হয়।
এই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়া শিবিরে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে। প্রথমত, কি প্রয়োজন ছিল দ্রুত তাঁকে ফিরিয়ে আনার? গোলাপি টেস্টে যে স্কট বোল্যান্ড দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন, তাঁকে আরও কিছু সময় সুযোগ দিয়ে হ্যাজেলউডকে পুরোপুরি ফিট হতে দেওয়া যেত। বোল্যান্ড এই টেস্টেও আবার সুযোগ পেলেও, অজি শিবির এখন চিন্তিত, কারণ হ্যাজেলউডের চোটের প্রকৃতি অনেকটা অজানা। কিছুদিনের মধ্যে বুঝে উঠতে হবে, এই চোট কেমন প্রভাব ফেলতে পারে।
জশ হ্যাজেলউডের চোটের বিষয়টি এখন অস্ট্রেলিয়ার টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য এক বড় মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর পেশিতে টান লাগার পর আর কোনও অনুশীলন না করেই মাঠে নামার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে, মাঠে নামার আগে যখন হ্যাজেলউড পায়ের পেশিতে ব্যথা অনুভব করেছিলেন, তখন তাঁর ফিটনেসের বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন ছিল। গাব্বা টেস্টের চতুর্থ দিনে মাঠে নামলেও তিনি তাঁর স্বাভাবিক গতিতে বল করতে পারেননি। মাত্র ১৩১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় বল করতে দেখা যায় তাঁকে, যা সাধারণত তাঁর গতি থেকে অনেক কম। প্রথম বলটি রাহুলের নাগালের বাইরেও চলে গিয়েছিল এবং এরপর তিনি আর এক ওভারও বল করতে পারেননি। এটি তাঁর ফিটনেস নিয়ে আরও সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ বেশ শক্তিশালী এবং পেস বোলিংয়ের ক্ষেত্রে প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, মিচেল মার্শের মতো বিকল্প রয়েছে। স্কট বোল্যান্ডেরও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল গোলাপি টেস্টে, যেখানে তিনি দুর্দান্ত বল করেছিলেন। তাই হ্যাজেলউডকে তাড়াহুড়ো করে ফেরানোর প্রয়োজন ছিল কি না, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। তাঁর চোট না শুধুমাত্র এই টেস্টের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, বরং পুরো সিরিজেই তাঁকে ফিট রাখতে হবে কিনা, তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আলোচনা চলছে।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার শিবিরের জন্য একটাই প্রশ্ন—জশ হ্যাজেলউড কি পরের টেস্টে ফিরতে পারবেন? তাঁর চোট কতটা গুরুতর, তা স্ক্যানের পর জানা যাবে। তবে, এই টেস্টের বাকি সময় এবং পরবর্তী টেস্টগুলোতে তাঁকে ব্যাক-আপ হিসেবে রাখা, নাকি পুরোপুরি বিশ্রামে রাখা উচিত, তা এখন পর্যালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার দল এই মুহূর্তে কিছুটা চিন্তিত হলেও, কামিন্স, স্টার্ক, মার্শ এবং বোল্যান্ডের মধ্যে ভালো বিকল্প রয়েছে। স্পিনার নাথান লিওন আছেন এবং হেড পার্টটাইম স্পিনার হিসেবে অবদান রাখতে পারেন। তবে, হ্যাজেলউডের চোট সিরিজের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে, যদি তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে না ফিরতে পারেন।