লখনউ সুপার জায়ান্টস (LSG) আইপিএল ২০২৫-এর জন্য এমন একটি দল গড়েছিল, যা কাগজে-কলমে অত্যন্ত শক্তিশালী মনে হয়েছিল। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মাত্র ছয়টি জয় এবং আটটি পরাজয়ের সঙ্গে পয়েন্ট টেবিলে সপ্তম স্থানে শেষ করা কখনোই ফ্র্যাঞ্চাইজি বা সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল না। ২৭ কোটি টাকায় অধিনায়ক ঋষভ পন্থকে দলে ভেড়ানো এবং তারকাখচিত স্কোয়াড গড়া সত্ত্বেও, লখনউ মাঠে তাদের ছন্দ খুঁজে পায়নি। মূল বোলারদের চোট, বড় নামগুলোর ব্যর্থতা এবং মিডল ওভারে নিয়ন্ত্রণের অভাব তাদের ব্যর্থতার প্রধান কারণ। পরবর্তী সিজনের আগে রিটেনশন এবং রিলিজ নিয়ে লখনউকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।এমন তিনজন বড় খেলোয়াড়ের , যাদের আইপিএল ২০২৬-এর আগে দল থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
৫. মায়াঙ্ক যাদব
২০২৪ আইপিএলে মায়াঙ্ক যাদব ছিলেন সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তার দ্রুতগতির ইয়র্কার, ভয়ঙ্কর গতি এবং শীর্ষস্থানীয় ব্যাটারদের বিপাকে ফেলার ক্ষমতা তাকে রাতারাতি তারকা বানিয়েছিল। কিন্তু ২০২৫-এ এসে ছবিটা সম্পূর্ণ উল্টে গেছে। ১১ কোটি টাকায় রিটেন করা মায়াঙ্ক মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছেন, মাত্র দুটি উইকেট নিয়েছেন, গড় ৫০.০০ এবং ইকোনমি রেট ১২.৫০। পুরো মরসুমে তিনি পিঠের চোটে ভুগেছেন এবং বেশিরভাগ সময় বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন।তার প্রতিভা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু বারবার চোট তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে পরিণত করেছে। এত বড় দামে রিটেন করা সত্ত্বেও, লখনউ হয়তো তাকে ছেড়ে দিয়ে আরও ফিট এবং নির্ভরযোগ্য পেসারের দিকে নজর দেবে।
৪. ডেভিড মিলার
ডেভিড মিলারকে লখনউ ৭.৫ কোটি টাকায় দলে নিয়েছিল। আশা ছিল তিনি শেষ ওভারে ফিনিশারের ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু তার পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ১১ ইনিংসে মাত্র ১৫৩ রান, স্ট্রাইক রেট ১২৭.৫০। এটি সেই মিলার নয়, যিনি অতীতে একাই ম্যাচ জিতিয়েছেন। গুজরাট টাইটান্সের সময়কার তার ঝলক এবার দেখা যায়নি। তিনি ছন্দহীন এবং ফর্মের বাইরে ছিলেন।
৩৫ বছর বয়সে, তার ফর্মের এই পতন এবং তরুণ প্রতিভাদের উত্থানের কারণে লখনউ হয়তো মিডল অর্ডারে আরও তরুণ এবং উদ্যমী খেলোয়াড়ের দিকে ঝুঁকবে। পন্থ এবং পুরানের মতো তারকা থাকায়, মিলারকে ছেড়ে দেওয়া হলে দল নতুন ফিনিশার খুঁজে নিতে পারে।
৩. রবি বিষ্ণোই
রবি বিষ্ণোইকে ১১ কোটি টাকায় রিটেন করা হয়েছিল মিডল ওভারে স্পিন বিভাগের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি প্রত্যাশার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেননি। ১১ ম্যাচে মাত্র ৯ উইকেট, গড় ৪৪.৫৫ এবং ইকোনমি রেট ১০.৮৩। এটি একজন প্রধান স্পিনারের জন্য বিশাল হতাশা। বিশেষ করে যখন দলের বোলিং ইউনিট ইতিমধ্যেই চোটে জর্জরিত।
বিষ্ণোই আত্মবিশ্বাসহীন ছিলেন, তার লাইন-লেংথ মিস করেছেন এবং রানের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। লখনউ হয়তো ভাববে যে এই দামে তারা প্রত্যাশিত ফল পাচ্ছে না। তাকে ছেড়ে দিয়ে তারা একজন ফর্মে থাকা স্পিনার, সম্ভবত বিদেশি, দলে নিয়ে আসতে পারে।
২. মোহসিন খান
মোহসিন খানকেও এলএসজি ৪ কোটি টাকায় রিটেন করেছিল, কিন্তু তিনিও চোটের কারণে পুরো মরসুম মিস করেছেন। তার বাঁহাতি সিম বোলিং দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, চোটপ্রবণতার কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
১. ঋষভ পন্থ
ঋষভ পন্থ ছিলেন লখনউয়ের সবচেয়ে বড় হতাশা। ২৭ কোটি টাকায় কেনা এই তারকা ১২ ইনিংসে মাত্র ১৫১ রান করেছেন, গড় ১৩.৭২ এবং স্ট্রাইক রেট ১০৭.০৯। তাকে রিলিজ করা বড় সিদ্ধান্ত হলেও, লখনউ নিলামে তাকে কম দামে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারে, যাতে বাকি টাকা অন্য খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করা যায়।