প্রথম আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে (FIFA International Friendly) ০-১ গোলে পরাজয়ের পর মনোবল পুনরায় গুছিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় মহিলা ফুটবল দল (Indian Womens Football Team)। ৩ জুন ২০২৫ বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) পদুকোন-দ্রাবিড় স্পোর্টস এক্সেলেন্স সেন্টারে উজবেকিস্তানের (Uzbekistan) বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে তারা।
ভারতীয় দলের প্রধান কোচ ক্রিসপিন ছেত্রী প্রথম ম্যাচেই তিনজন নতুন খেলোয়াড় মনীষা নায়েক, মালবিকা পি এবং প্রিয়দর্শিনী সেল্লাদুরাইকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক করান। দ্বিতীয় ম্যাচেও তিনি দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “এই দুটি ম্যাচই আমাদের জন্য একদম পরীক্ষামূলক। আমরা নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দিচ্ছি এবং আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের মানসিকতা কেমন, সেটা দেখছি। হয়তো আমরা খেলার ধরণে কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারি, কিন্তু আমাদের মূল দর্শন একই থাকবে। আমাদের স্থিরতা বজায় রাখতে হবে, শুধু বল পায়ে রেখে দিয়ে কিছু হবে সেই আশায় থাকা চলবে না।”
ছেত্রী প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তানের প্রশংসাও করে বলেন, “তারা শারীরিক এবং টেকনিক্যাল উভয় দিক থেকেই শক্তিশালী দল। খেলোয়াড়রা তাদের ভূমিকা সম্পর্কে খুব সচেতন এবং সেট-পিসে যেমন কর্নার, ফ্রি-কিক কিংবা থ্রো-ইন, তাতে বেশ পারদর্শী। আমরা খুব বেশি পরিবর্তন করতে পারব না এই অল্প সময়ে, তবে আমরা কিছু খুঁত নিয়ে কাজ করেছি।”
ভারতীয় মিডফিল্ডার সঙ্গীতা বসফোর জানিয়েছেন, দল এখন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “গত ম্যাচে হেরে আমরা সবাই হতাশ ছিলাম, কারণ আমরা জানতাম জেতার মতো ক্ষমতা আমাদের ছিল। কিন্তু আমরা সেই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। দল ঠিক করেছে সেই ভুল আবার করব না। আমি মানসিকভাবে বেশ ফ্রেশ অনুভব করছি এবং নতুন ম্যাচের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”
অন্যদিকে উজবেকিস্তানের কোচ কোট্রিনা কুলবাইটে সন্তুষ্ট যে তাদের প্রশিক্ষণে যে কৌশলগত মুভমেন্টগুলো তারা চর্চা করেছেন, সেগুলো মাঠে কার্যকর হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রথমত, জয় তো জয়ই। প্রতিটি জয় মাঠে অর্জন করতে হয়, এবং আমি বিশ্বাস করি এই জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল। অবশ্যই আমাদের অনেক জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন, কিন্তু সেটাই তো এই যাত্রার অংশ।”
কুলবাইটে ভারতীয় দলের প্রশংসা করে বলেন, “ভারত বর্তমানে একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তবুও তারা খুব শক্তিশালী দল গড়ে তুলেছে। তাদের মধ্যে বেশ কিছু তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় রয়েছে। আপনি স্পষ্টভাবে দেখতে পারবেন, একটি নতুন প্রজন্ম উঠে আসছে। তারা কনট্রা-অ্যাটাকে খুবই বিপজ্জনক — দ্রুত ও সঠিকভাবে আক্রমণে যায়।”
উজবেকিস্তানের ফরোয়ার্ড লিউডমিলা কারাচিক বলেন, “এই ম্যাচগুলো নিজেকে যাচাই করার জন্য দারুণ সুযোগ। ম্যাচের গতি বেশি, সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে হয় এবং ছোট ছোট ভুলগুলো কঠোরভাবে শাস্তি পায়। এই অভিজ্ঞতা সব সময় মূল্যবান।”
এই ম্যাচটি শুধুমাত্র দুই দলের মধ্যে একটি সাধারণ প্রীতি ম্যাচ নয়, বরং দুই কোচের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, নতুন প্রতিভা তুলে আনা এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজেদের পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত হওয়ার একটি চূড়ান্ত মঞ্চ। ব্লু টাইগ্রেসদের সামনে সুযোগ আছে নিজেদের প্রমাণ করার, আর উজবেকিস্তানের সামনে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চ্যালেঞ্জ। সব মিলিয়ে মঙ্গলবারের এই ম্যাচটি দুই দলের ভবিষ্যতের প্রস্তুতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হতে চলেছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
