আত্মবিশ্বাসই মূল চাবিকাঠি বলে হুঙ্কার ক্রিসপিন ছেত্রীর

এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সের (AFC Womens Asian Cup Qualifiers) প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ভারতের সিনিয়র মহিলা ফুটবল দল (Indian Football Team) তথা ব্লু টাইগ্রেসরা। সামনের প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের…

Indian Football Team womens coach Crispin Chettri said Confidence key

এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সের (AFC Womens Asian Cup Qualifiers) প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ভারতের সিনিয়র মহিলা ফুটবল দল (Indian Football Team) তথা ব্লু টাইগ্রেসরা। সামনের প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিতে তারা খেলতে চলেছে দুটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ উজবেকিস্তানের (Uzbekistan) বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি অনুষ্ঠিত হবে বেঙ্গালুরুর পদুকোন দ্রাবিড় সেন্টার ফর স্পোর্টস এক্সেলেন্সে ৩০ মে ও ৩ জুন।

ভারতীয় মহিলা দলের কোচ (Indian Womens Football Team) হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ক্রিসপিন ছেত্রী (Crispin Chettri), যিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই দায়িত্ব পেয়েছেন। ১ মে থেকে ক্যাম্প শুরু করে তিনি দলের গঠন ও সম্ভাব্য চূড়ান্ত একাদশ নিয়ে কাজ করছেন। ছেত্রীর মতে, এই প্রস্তুতি ম্যাচগুলো দলকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জনের পথে।

   

তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের সামনে বড় সুযোগ হচ্ছে ভালো মানের দলের বিরুদ্ধে খেলেই দলের আসল ক্ষমতা যাচাই করা। কারা চূড়ান্ত একাদশে থাকবে, সেটাও বুঝে নেওয়ার সময় এখন। যতজন খেলোয়াড়কে সম্ভব, আমরা সুযোগ দিতে চাই।”

এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ অস্ট্রেলিয়া ২০২৬ যোগ্যতা অর্জন পর্বে ভারত রয়েছে গ্রুপ বি-তে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ মঙ্গোলিয়া (২৩ জুন), তিমোর-লেস্তে (২৯ জুন), ইরাক (২ জুলাই) এবং স্বাগতিক থাইল্যান্ড (৫ জুলাই)।

ক্রিসপিন ছেত্রীর পরিকল্পনায় রয়েছে দলের এক নির্ভরযোগ্য মূল গঠন গড়ে তোলা। তিনি মনে করেন, যে সমস্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচ তারা খেলেছে বা খেলবে, তার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসে জোগান দেবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে পিঙ্ক লেডিস কাপে ভারত মুখোমুখি হয়েছিল জর্ডান (র‍্যাঙ্ক ৭৪), রাশিয়া (২৭) এবং দক্ষিণ কোরিয়া (১৯) মতো শক্তিশালী দলের। সেই ধারাবাহিকতাতেই এবার তারা খেলতে চলেছে উজবেকিস্তানের (র‍্যাঙ্ক ৫০) বিপক্ষে।

Advertisements

“এই ধরনের দলের বিরুদ্ধে খেললে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। খেলোয়াড়েরা বুঝতে পারে, তারা উচ্চ মানের দলের বিপক্ষে কেমন খেলতে পারে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক ভালো খেলেছিলাম, আর কোরিয়ার বিপক্ষেও ভালো পারফর্মেন্স ছিল,” — মন্তব্য করেন কোচ।

উজবেকিস্তান সম্পর্কে বলতে গিয়ে ছেত্রী বলেন, “ওরা এশিয়ার অন্যতম সেরা দল না হলেও আমাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে। তবে আমি মনে করি, আমরা যদি আমাদের সেরাটা দিতে পারি, তাহলে জয় পাওয়া অসম্ভব নয়।”

২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত উজবেকিস্তান পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে, যার মধ্যে একটিতে জয়, একটি ড্র এবং তিনটি হার। শেষ দুটি ম্যাচে তারা হেরেছে চীনের (০-৫) ও জাম্বিয়ার (৩-৪) বিরুদ্ধে। তবে এসব ফলাফলের পরেও ছেত্রীর চোখে প্রতিপক্ষ যথেষ্ট সম্মানজনক। এই প্রসঙ্গে ভারতীয় কোচ বলেন, “ওদের খেলা দেখেছি। চীনের বিরুদ্ধে ওরা যতটা লড়েছে, তা প্রশংসাযোগ্য। শারীরিক দিক থেকে ওরা শক্তিশালী, আবার টেকনিক্যালিও ভালো দল।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দলে বেশ কিছু তরুণ খেলোয়াড় রয়েছে, এবার তাদের প্রমাণ করার সময়। মূল লক্ষ্য হচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী কোর গ্রুপ তৈরি করা।” এই দুই আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ ভারতের জন্য শুধু প্রস্তুতির সুযোগ নয়, বরং আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলারও মঞ্চ। দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক হার সত্ত্বেও ভারত তাদের শেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেয়েছে।

উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে এটি হতে পারে ভারতের প্রথম জয়, যদি ব্লু টাইগ্রেসরা আত্মবিশ্বাস ও টিমস্পিরিট নিয়ে খেলতে পারে। আত্মবিশ্বাসই হতে চলেছে কোচ ছেত্রীর তুরুপের তাস।