হংকংয়ের বিরুদ্ধে বড় পরীক্ষার অপেক্ষায় ভারত

১০ জুন হংকংয়ের কাই তাক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের (AFC Asian Cup 2027 Qualifier) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এদিন হংকং (Hong…

Indian Football Team vs Hong Kong

১০ জুন হংকংয়ের কাই তাক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের (AFC Asian Cup 2027 Qualifier) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এদিন হংকং (Hong Kong) মুখোমুখি হবে ভারত (Indian Football Team)। গ্রুপ ‘সি’র শীর্ষ দুই দল এই ম্যাচে প্রথম জয়ের খোঁজে নামছে। তাই ম্যাচটি কার্যত হয়ে উঠেছে “গ্রুপ ফাইনাল”।

ভারত (FIFA র‍্যাঙ্কিং: ১২৭), যারা পট ১ ছিল, বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হতাশাজনক ০-০ ড্র করেছে। অন্যদিকে, হংকং (র‍্যাঙ্কিং: ১৫৩), যারা পট ২ ছিল, সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করেছিল। ফলে, চার দলের গ্রুপে এখনও পর্যন্ত সবাই সমান অবস্থানে রয়েছে।

   

রক্ষণে দুর্ভেদ্য প্রাচীর গড়তে রাজস্থানের এই ফুটবলারকে টানছে মশাল ব্রিগেড

এই ম্যাচটি হংকংয়ের জন্য ঐতিহাসিকও বটে। কারণ, এটি হতে চলেছে সদ্য নির্মিত ৫০,০০০ আসনের কাই তাক স্টেডিয়ামে প্রথম ফুটবল ম্যাচ, যা হংকংয়ের প্রাক্তন বিমানবন্দরের স্থানে তৈরি হয়েছে। এই স্টেডিয়ামটি একটি আধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্সের অংশ, যাতে রিট্র্যাক্টেবল ছাদ ও মাল্টি-স্পোর্টস ফ্যাসিলিটি রয়েছে।

ভারত ও হংকং এর মধ্যে এটি হবে ২৫তম মুখোমুখি লড়াই। ভারত এখন পর্যন্ত ৯ বার জিতেছে, হংকং ৮ বার, এবং ৭টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে হংকংয়ের মাটিতে ভারতের একমাত্র জয় এসেছিল ১৯৫৭ সালে, একটি প্রীতি ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে। শেষবার ২০২২ সালে কলকাতায় হওয়া ম্যাচে ভারত ৪-০ গোলে জয়ী হয়েছিল।

ভারতের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গান এই প্রসঙ্গে বলেন, “সে দিনের জয় ছিল দারুণ, কিন্তু এখন পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। হংকং এখন নতুন কোচ, নতুন স্কোয়াড নিয়ে খেলছে। ফলে আমাদের এক বিন্দুও আত্মতুষ্ট হওয়া চলবে না।”

এই নতুন রূপের হংকং দলকে কোচিং দিচ্ছেন অ্যাশলে ওয়েস্টউড, যিনি ভারতীয় ফুটবল মহলে পরিচিত নাম। তিনি এক সময় বেঙ্গালুরু এফসি, এটিকে ও পাঞ্জাব এফসির কোচ ছিলেন এবং আফগানিস্তান দলের কোচ হিসেবেও ভারতের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিলেন। তাঁর অধীনে হংকং গত ১২ ম্যাচে মাত্র একটিতে হেরেছে (লিখটেনস্টেইনের বিরুদ্ধে ০-১)। তবে জয় এসেছে কেবল সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে, দুটিই প্রীতি ম্যাচ।

Advertisements

নির্বাচন ‘বাতিল’ করে পালতোলা নৌকার আসন ভাগাভাগির সম্ভাবনা বাগানকর্তাদের

ভারতের উইঙ্গার লালরিনজুয়ালা ছাংতে বলেন, “ওদের নতুন কোচ ভারতের ফুটবল সম্পর্কে ভালো জানেন। ওদের রক্ষণভাগ শক্তিশালী, আর কাউন্টার অ্যাটাকেও ভালো। তবে আমরা মানসিকতা ও পরিকল্পনা ঠিক রাখলে জয় পাওয়া সম্ভব।”

হংকং দলে রয়েছে একাধিক প্রাকৃতিকীকৃত বিদেশি ফুটবলার। ব্রাজিলে জন্ম নেওয়া জুনিনহো, স্টেফান পেরেইরা, মিডফিল্ডার ফের্নান্দো ও ডিফেন্ডার দুদু, স্পেন-জন্ম মনোলো ব্লেদা এবং জাপানে জন্ম নেওয়া সোহগো ইচিকাওয়া। এই নতুন মুখেরা দলে গতি ও বৈচিত্র্য এনেছে।

তবে অভিজ্ঞতার দিক থেকেও হংকং পিছিয়ে নয়। গোলকিপার ইয়াপ হাং ফাই শতাধিক ম্যাচ খেলে ফেলেছেন, আর ডিফেন্ডার সান মিং হিম, ইউয়ে তসে নাম ও সুঈ ওয়াং কিট খেলেন চায়না সুপার লিগে। মিডফিল্ডার তান চুন লোকও দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বাকিরা মূলত হংকং প্রিমিয়ার লিগের বিভিন্ন ক্লাব – কিটচি, লি ম্যান, সাউদার্ন, ইস্টার্ন ও তাই পো এফসি-র খেলোয়াড়।

বিদায়ের ছায়ায় সিআর৭! ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে ইয়ামাল নিয়ে ‘বেফাঁস’ পর্তুগিজ তারকা

সবমিলিয়ে, ভারতীয় দলের জন্য এই ম্যাচ হবে কড়া পরীক্ষা। হংকংয়ের নতুন রূপ ও তাদের ঘরের মাঠে খেলা, এই দুই চ্যালেঞ্জই পার করতে হলে সুনীল ছেত্রীহীন ভারতের আক্রমণভাগ এবং রক্ষণ উভয়েরই সেরা পারফরম্যান্স দিতে হবে। মঙ্গলবার, ১০ জুন, সন্ধ্যার এই ম্যাচে শুধুই তিন পয়েন্ট নয়, বরং এশিয়ান কাপের দরজার চাবিকাঠিও নির্ধারিত হতে পারে।