অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ থেকে জাতীয় দলে অভিষেকের পর নতুন পথচলায় বরিস

২০১৭ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা সেই কিশোর এখন ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বরিস সিং (Boris Singh), যিনি…

Indian Football Team full-back Boris Singh Thangjam

২০১৭ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা সেই কিশোর এখন ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের (Indian Football Team) একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বরিস সিং (Boris Singh), যিনি মণিপুরের সন্তান, নিজের স্বপ্নের পথ ধরে হেঁটে শেষমেশ দেশের সিনিয়র দলে অভিষেক করেছেন। ২০২৫ সালের ১৯ মার্চ মালদ্বীপের বিরুদ্ধে অভিষেক এবং ছয় দিন পর বাংলাদেশর বিপক্ষে এশিয়ান কাপ ২০২৭ যোগ্যতা অর্জন পর্বে পুরো ৯০ মিনিট মাঠে থাকা। বরিসের কাছে এযেন এক গর্বের মুহূর্ত।

৪ জুন থাইল্যান্ডের (Thailand) বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। এই সফরে কোচ মানোলো মার্কুয়েজের ঘোষণা করা ২৮ সদস্যের দলেও রয়েছেন বরিস সিং। সেই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “আবার দেশের জার্সি গায়ে তোলা, তাও সিনিয়র দলে, এটা সত্যিই এক গর্বের অনুভূতি। কোচের ওপর কৃতজ্ঞ আমি, কারণ উনি আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। সুযোগ পেলে আমি সব সময় দেশের জন্য সেরাটা দিতে চেষ্টা করি।”

   

এই মুহূর্তে বরিস থাইল্যান্ডে দলের সঙ্গে প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, যেখানে তারা একটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ এবং হংকংয়ের বিরুদ্ধে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মে মাসটা বরিসের জন্য অসাধারণ কেটেছে। এফসি গোয়ার হয়ে কালিঙ্গ সুপার কাপ জয় এবং এরপর জাতীয় দলের ডাকে সাড়া—এই জয়ের ধারাবাহিকতাই তিনি ধরে রাখতে চান।

“সুপার কাপ আমাদের ক্লাবের জন্য এবং আমার ব্যক্তিগতভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মরসুমের শেষটা ভালোভাবে করতে পারাটা আমাদের দলের প্রাপ্য ছিল। সেই জয় আমাকে জাতীয় দলে আরও উৎসাহ দিয়েছে,” বলেন বরিস।

বরিস ভারতের প্রথম ফিফা টুর্নামেন্টে (U17 বিশ্বকাপ) অংশগ্রহণকারী সেই নবাগতদের একজন, যাদের অনেকেই এখন সিনিয়র দলে জায়গা করে নিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে এই তালিকায় রয়েছেন সুরেশ সিং ওয়াংজাম, জিকসন সিং, অনোয়ার আলি, অমরজিত সিং, রাহুল কে.পি., অনিকেত যাদব, রহিম আলি এবং লালেংমাওইয়া রালতে।

Advertisements

২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ সিজনে বরিস ইন্ডিয়ান অ্যারোজ দলের হয়ে খেলেন, যা তাঁকে ম্যাচের অভিজ্ঞতা এবং উন্নতির সুযোগ দেয়। সেই প্রসঙ্গে বলেন, “বিশ্বকাপে খেলা, তার প্রস্তুতি, এবং এরপর অ্যারোজে খেলার সময়টা আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। আমরা হয়তো ফলাফলে সফল হইনি, কিন্তু নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কোচদের গাইডেন্স, নিয়মিত খেলা, সব মিলিয়ে আমার ফুটবলার হিসেবে বেড়ে ওঠার পথটা সহজ হয়েছে।”

শুরুতে রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলা বরিস পরবর্তীতে ফুল-ব্যাক পজিশনে নিজেকে মানিয়ে নেন। এটিকে, এটিকে মোহনবাগান, জামশেদপুর এফসি এবং পরে এফসি গোয়ার হয়ে খেলার অভিজ্ঞতায় তিনি বুঝেছেন, আধুনিক ফুটবলে একজন ফুল-ব্যাককে হতে হয় সর্বগুণে গুণান্বিত।

“এই পজিশনে আপনাকে শুধু ডিফেন্ড করলেই হবে না। ক্রস, ওভারল্যাপ, রক্ষণ এবং আক্রমণ—সবই শেখার দরকার। আমি সব সময় নিজের খেলাকে উন্নত করার চেষ্টা করি। ফুল-ব্যাকের জায়গাটা খুব প্রতিযোগিতাপূর্ণ। তাই প্রতিদিন নিজেকে উন্নত করার দিকেই মনোযোগ দেই।” বরিসের লক্ষ্য এখন দেশের জার্সিতে আরও বেশি ম্যাচ খেলা, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অবদান রাখা এবং ভারতকে আন্তর্জাতিক ফুটবলের উচ্চতায় পৌঁছাতে সাহায্য করা।