২০২৭ সালের এশিয়ান কাপ (2027 AFC Asian Cup Qualifiers) ফুটবলে (Football) খেলার লক্ষ্য সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে নামছে ভারতীয় ফুটবল দল (Indian Footabll Team)। ১০ জুন, হংকংয়ের কোলুন শহরে আয়োজিত সেই মরণ–বাঁচন ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ হংকং (Hong Kong)। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে রাজারহাটে, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের মাঠে। সেখানেই সোমবার থেকে অনুশীলনে নেমে পড়েছেন জাতীয় দলের হেড কোচ মানোলো মার্কুয়েজ (Manolo Marquez) ও তার ছেলেরা।
দলের মূল ভরসা সুনীল ছেত্রী, যিনি হয়ত এই প্রতিযোগিতাই নিজের কেরিয়ারের শেষ বড় টুর্নামেন্ট হিসেবে দেখছেন। সঙ্গী হয়েছেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার শুভাশিস বসু থেকে সন্দেশ ঝিঙ্গান। সব মিলিয়ে একটি শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ স্কোয়াড গড়তে চাইছেন কোচ মার্কুয়েজ।
এই শিবিরের জন্য মোট ২৮ জন ফুটবলারকে ডেকেছেন জাতীয় কোচ। তবে প্রথম দিনের অনুশীলনে হাজির ছিলেন ২৬ জন। অনুপস্থিত ছিলেন দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় — আশিক কুরুনিয়ান এবং রাহুল ভেকে। ফেডারেশন সূত্রে খবর, দু’জনেই পারিবারিক কারণে কয়েক দিনের মধ্যে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
কোচ মানোলোর লক্ষ্য, এই ১০ দিনের প্রস্তুতিতে খেলোয়াড়দের শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি ম্যাচ ফিটনেসও নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যেই অন্তত একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে দেখা যায়, কারা মূল একাদশে সুযোগ পাওয়ার জন্য বাস্তবিকই প্রস্তুত।
এই শিবিরের শেষে ভারতীয় দল রওনা দেবে থাইল্যান্ডে। ৪ জুন থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে তারা। এই ম্যাচটি হবে মূল বাছাই পর্বের আগে দলের শক্তি ও দুর্বলতা যাচাই করার অন্যতম সুযোগ। এরপর সেখান থেকে সরাসরি উড়ে যাবে হংকংয়ে, বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে।
এই শিবিরে নজর কেড়েছেন একজন নতুন মুখ—সুহেল ভাট। মোহনবাগানের এই তরুণ ফরোয়ার্ড প্রথমবার ডাক পেয়েছেন ভারতীয় সিনিয়র দলে। প্রথম দিনের প্র্যাক্টিস থেকেই তিনি নিজেকে প্রমাণ করার জন্য মরিয়া। কোচের নজর কাড়ার চেষ্টায় রয়েছেন তিনি। সুনীল ছেত্রীর পাশে স্ট্রাইকার হিসেবে জায়গা করে নেওয়াই তাঁর মূল লক্ষ্য।
প্র্যাক্টিসে দেখা গিয়েছে, দলের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা। ফুটবলারদের মনোযোগী ও নিবেদিতভাবে অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে। কোচ মার্কুয়েজ প্রতিটি পজিশনে বিকল্প খেলোয়াড় তৈরি রাখার উপর জোর দিচ্ছেন। বিশেষ করে মাঝমাঠ ও রক্ষণে পরিবর্তনের সুযোগ রাখতে চান তিনি।
হংকংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচটি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ম্যাচে জয় পেলেই এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার দরজা প্রায় নিশ্চিতভাবে খুলে যাবে। অন্যদিকে হার মানে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান না হওয়া।
সার্বিকভাবে বলা যায়, রাজারহাটে শুরু হওয়া এই প্রস্তুতি শিবির শুধুমাত্র অনুশীলনের জায়গা নয়—এটি ভারতীয় দলের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার মঞ্চও। এখন দেখার, এই প্রস্তুতি কতটা কাজে আসে ১০ জুনের বড় ম্যাচে।