ভারতীয় ক্রিকেটার (Indian Cricketer) মহম্মদ শামিকে (Mohammed Shami) ই-মেলের (Email) মাধ্যমেখুনের হুমকি (Death Threat) দিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াল। শুধু হুমকিই নয়, ওই ই-মেলে শামির কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। (Sunrisers Hyderabad) এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চমকে উঠেছেন ক্রিকেট অনুরাগীরা। বর্তমানে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025)খেলছেন এই অভিজ্ঞ পেসার। ঘটনার পরই তাঁর পরিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশের আমোরহা জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে।
সুপার কাপ জিতেই বড় সিদ্ধান্তের পথে মানোলো মার্কুয়েজ
শামির ভাই মহম্মদ হাসিব জানিয়েছেন, রবিবার (৫ মে) দুপুর দুটো নাগাদ তিনি একটি ই-মেল পান। সেই ই-মেলটিতে বলা হয়, যদি ১ কোটি টাকা না দেওয়া হয়, তাহলে শামিকে খুন করা হবে। ই-মেল পাঠানোর জন্য যে নাম ব্যবহার করা হয়েছে, তা হল “রাজপুত সিন্ধার”। যদিও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এটি একটি ভুয়ো নাম এবং ই-মেলটি কর্ণাটক থেকে পাঠানো হয়ে থাকতে পারে। ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে দ্রুত এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
শুধু আমোরহা পুলিশই নয়, ঘটনার তদন্তে নেমেছে সাইবার সেলও। ই-মেলের সোর্স ট্রেস করতে ইতিমধ্যেই প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। এদিকে এই ই-মেল ঘিরে শামির নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এর আগেও ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর একই ধরনের হুমকি পেয়েছিলেন। সে সময়ও ই-মেলের মাধ্যমে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয় এবং বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়। গম্ভীর বর্তমানে দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তায় রয়েছেন।
ইংল্যান্ড সফরে নেতৃত্ব বদলের সিদ্ধান্ত! নতুন ভূমিকায় এই তরুণ ক্রিকেটার
শামির বিরুদ্ধে হুমকি ই-মেল আসার সময়টা বেশ সংবেদনশীল। কারণ, তিনি বর্তমানে আইপিএল খেলায় ব্যস্ত। সোমবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে তাঁর দলের। যদিও ব্যক্তিগতভাবে শামি এখনও পর্যন্ত তেমন ছন্দে নেই। ৯ ম্যাচে তিনি মাত্র ৬টি উইকেট পেয়েছেন, গড় ৫৬.১৭। তবে জাতীয় দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। ৫ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দলের অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন শামি।
২০২৩ সালের বিশ্বকাপের পর এক দীর্ঘ চোটে ভুগছিলেন তিনি। সেই চোট সারিয়ে ১৪ মাস পর আবার জাতীয় দলে ফিরেছিলেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাঁর পারফরম্যান্স দেখিয়ে দেয়, অভিজ্ঞতাই বড় শক্তি। কিন্তু আইপিএলে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। যদিও তিনি জানিয়েছেন, “চোট জীবনের অংশ। দীর্ঘ সময় পর ফিরে ছন্দে ফিরতে সময় লাগে। আমি চেষ্টা করছি আমার সেরাটা দিতে।”
ঘরের মাঠে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে সুনীল ছেত্রীদের উত্তরসূরিরা
শামি আরও বলেন, “SRH দলে যোগ দিয়ে আমি নতুনভাবে ক্রিকেটকে দেখছি। আগে যেখানে ২০০ রান ডিফেন্ড করা কঠিন মনে হত, এখন ৩০০ রানের লক্ষ্যে ছুটতে ভয় লাগে না। আমাদের বোলিং ইউনিটও অনেক ভারসাম্যপূর্ণ হয়েছে।”
শামির নাম করে যে ব্যক্তি ই-মেল পাঠিয়েছেন, তাঁর পরিচয় এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ২০২৩-এর ধারা ৩০৮(৪), তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০৮-এর ধারা ৬৬(ডি) ও ৬৬(ই)-এর অধীনে মামলা রুজু করা হয়েছে।
ছাঁটাইয়ের পথে দলের ধনী ক্রিকেটার! মরণ-বাঁচন লড়াই শেষে বার্তা মালিকের
বর্তমানে শামি পরিবার ও তাঁর আইনজীবীরা তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। নিরাপত্তা বাড়ানো হবে কিনা, তা নির্ভর করছে পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার রিপোর্টের ওপর। আগামী ২০ জুন থেকে ইংল্যান্ড সফরে ভারতের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে। সেই দলে শামির থাকার কথা। ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হতে পারে।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে—ভারতের তারকা খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা আদৌ যথেষ্ট কি না? গম্ভীর ও শামির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা যদি হুমকির মুখে পড়েন, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী? দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে এই ধরনের হুমকি কখনই কাম্য নয়। প্রশাসনের উচিত, কড়া হাতে ব্যবস্থা নিয়ে অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করা এবং উদাহরণ তৈরি করা।