টেস্ট ছেড়ে গ্যালারিতে কোহলি! অবসরের কারণ ফাঁস ‘চিকুর’

ক্রিকেট দুনিয়ায় এক বিস্ময়কর মুহূর্ত এনে দিয়েছিল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) টেস্ট অবসরের ঘোষণা। মাত্র দু’মাস আগে, ৩৬ বছর বয়সে যখন তিনি সাদা জার্সিকে (Test…

Virat Kohli effect on Indian Cricket Team

ক্রিকেট দুনিয়ায় এক বিস্ময়কর মুহূর্ত এনে দিয়েছিল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) টেস্ট অবসরের ঘোষণা। মাত্র দু’মাস আগে, ৩৬ বছর বয়সে যখন তিনি সাদা জার্সিকে (Test Cricket) বিদায় জানালেন। সেই মুহূর্তে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাঁর পারফরম্যান্সে সামান্য ওঠানামা থাকলেও, কোহলি যে এখনও ‘মেটাল’ হারাননি, তা সকলেই জানেন।

সম্প্রতি লন্ডনে যুবরাজ সিংয়ের ‘ইউ উই ক্যান’ ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রথমবার টেস্ট অবসরের বিষয়ে মুখ খুললেন কোহলি। সঙ্গে ছিলেন রবি শাস্ত্রী, শচীন তেন্ডুলকর, ব্রায়ান লারা সহ একঝাঁক কিংবদন্তি। কোহলির কথায় ছিল এক মজার ছোঁয়া, কিন্তু সেই হাসির আড়ালে কি ছিল একরাশ অভিমান?

   

কোহলি বললেন, “দু’দিন আগে দাড়িতে কলপ করলাম। যখন চারদিন পরপর দাড়িতে কলপ লাগে, তখন বুঝতে হবে সময় এসে গেছে।” সরাসরি কিছু না বললেও, তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে নানা ব্যাখ্যা। কেউ বলছেন, এটা নিছক রসিকতা, আবার কেউ মনে করছেন এটি একপ্রকার ‘সাবটেক্সট’—যেখানে বয়স, ক্লান্তি এবং দলের ভবিষ্যৎ নীতির ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে।

বিশেষ করে গৌতম গম্ভীরের কোচ হিসেবে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ এবং তাঁর তারুণ্যনির্ভর দৃষ্টিভঙ্গি অনেক কিছুই ইঙ্গিত করে। দলে এখন একঝাঁক তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসছে। এমন এক সময়, একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে সরে যেতে বলা হলে সেটিকে ‘সহজ সিদ্ধান্ত’ হিসেবে দেখা যায় না। কোহলি হয়তো সেই বাস্তবতাকেই মেনে নিয়েছেন—কিন্তু অভিমান কি সত্যিই নেই?

Advertisements

যদিও অনুষ্ঠানে কোহলি তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কার্পণ্য করেননি। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রবি শাস্ত্রীকে। তিনি বলেন, “শাস্ত্রীর সঙ্গে কাজ না করলে টেস্ট ক্রিকেটে আমার যা অর্জন, তা সম্ভব হত না। সমালোচনার সময় তিনি পাশে না দাঁড়ালে আমার কেরিয়ার অন্যরকম মোড় নিতে পারত।” এই কথায় যেন ফুটে উঠল তাঁর অতীতের প্রতি ভালোবাসা, এবং সেই ‘টিম ইন্ডিয়া’-র জন্য একধরনের নস্টালজিয়া, যেখানে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, লড়েছেন, জয় এনেছেন।

অনুষ্ঠানে কোহলির আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয় যখন তিনি যুবরাজ সিংয়ের কথা বলেন। ক্যানসারের সঙ্গে যুবরাজের লড়াইয়ের স্মৃতি তুলে ধরে কোহলি বলেন, “বিশ্বকাপের সময় ওকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। যখন জানলাম, ও ক্যানসারে আক্রান্ত, তখন চমকে গিয়েছিলাম। এত কাছে থেকেও আমরা বুঝতেই পারিনি। তারপর যেভাবে কামব্যাক করেছে, সেটা সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নদের কাজ।”

এই বক্তব্যে কোহলির মানবিকতা, বন্ধুত্ব আর বাস্তবতার প্রতি সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রশ্নটা থেকেই যায়—তাঁর টেস্ট অবসরের মূল কারণ কী? কোহলি নিজেই জানিয়েছেন, তিনি ক্লান্ত ছিলেন, মানসিকভাবে হালকা হতে চেয়েছেন। কিন্তু কীভাবে এত বড় সিদ্ধান্ত এত সহজে নেওয়া যায়? তাই তাঁর অবসর মানে শুধুই বিদায় নয়, বরং এক অধ্যায়ের সমাপ্তি। এখন প্রশ্ন, এরপর কী? বিশ্ব ক্রিকেট অপেক্ষা করছে, কোহলির জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের।