ম্যানচেস্টার টেস্টে (Manchester Test) ভারতের (Indian Cricket Team) জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে পেস বোলিং বিভাগ। আকাশদীপের চোট এবং অর্শদীপ সিংয়ের আঙুলে কাটা লাগায় দল হঠাৎ করেই সীমিত পেস বিকল্পের মধ্যে পড়েছে। এই মুহূর্তে পুরোপুরি ফিট মাত্র দু’জন ফ্রন্টলাইন পেসার জসপ্রীত বুমরাহ ও মহম্মদ সিরাজ। ম্যাচ হবে ইংল্যান্ডের অন্যতম ‘সিম সহায়ক’ কন্ডিশনে। ভেজা, মেঘলা আবহাওয়া এবং সবুজ ঘাসে মোড়ানো পিচ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে শক্তিশালী বোলিং লাইন-আপ নামানো এবং সেই সঙ্গে ব্যাটিং গভীরতার ভারসাম্য বজায় রাখা।
ম্যাচ ডে মাইনাস টু-র নেট সেশন কিছুটা হলেও ইঙ্গিত দিয়েছে টিম কম্বিনেশনের। যেখানে দেখা গিয়েছে, অংশুল কাম্বোজ এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করেননি। নেট সেশনে বোলিং শুরু করেন বুমরাহ, সিরাজ এবং শার্দুল ঠাকুরের সঙ্গে একই নেটে। সাধারণত যে নেটে ম্যাচে খেলার সম্ভাব্য বোলাররা অনুশীলন করেন, সেখানেই ছিলেন কাম্বোজ (Anshul Kamboj)। এর থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে যে, দলে অভিষেক ঘটতে পারে এই তরুণ পেসারের। একইসঙ্গে ফিরে আসতে পারেন শার্দুল ঠাকুর, যিনি নতুন বল দিয়ে সুইং করাতে পারার দক্ষতার জন্য ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের পিচে কার্যকর হতে পারেন।
তবে শুধু বোলিং নয়, ব্যাটিং অর্ডারেও আসতে পারে পরিবর্তন। ম্যাচ ডে মাইনাস ওয়ান দেখা গিয়েছে এক অন্যরকম দৃশ্য। বৃষ্টিবিঘ্নিত অনুশীলনের মধ্যেও সাই সুদর্শন ছাতা মাথায় নয়, বরং খালি পায়ে চলে গেলেন কভার তোলা পিচে। সেখানে দুই দিক থেকেই করলেন শ্যাডো ব্যাটিং। গত কয়েকটি টেস্টে দেখা গেছে, যেসব ম্যাচে তিনি খেলেছেন, তার আগের দিন এই একই রুটিন অনুসরণ করেছেন তিনি। এর ফলে অনুমান করা হচ্ছে, এদিনের ম্যাচে দলে থাকতে পারেন সাই সুদর্শন, সম্ভবত ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন তিনি।
যদি সাই দলে আসেন, তবে রবীন্দ্র জাদেজা সরে যাবেন সাত নম্বরে। এর মানে, ওয়াশিংটন সুন্দরকে বসতে হতে পারে বেঞ্চে। দুই স্পিনারের প্রয়োজন এখানে কম। কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে অতিরিক্ত সিমারের পক্ষেই যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে একটি সম্ভাব্য পেস ইউনিট হতে পারে: বুমরাহ, সিরাজ, শার্দুল এবং অভিষিক্ত কাম্বোজ।
তবে প্রশ্ন উঠছে—রবীন্দ্র জাদেজার জন্য সাত নম্বর কি একটু নিচু পজিশন? বিশেষ করে যদি দল আবার লর্ডসের মতো সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়ে, তখন জাদেজা কি সেই চাপমুক্ত ইনিংস খেলতে পারবেন? নাকি বলই থাকবে না হাতে? যদিও সাম্প্রতিক দুটি টেস্টে ব্যাটে জাদেজা যথেষ্ট ধারাবাহিক এবং বোলিং ও ফিল্ডিং মিলিয়ে তিনি এখন দলে ‘অটো পিক’।
সবমিলিয়ে, ভারতের সম্ভাব্য একাদশ হতে পারে কিছুটা নতুন রূপে, নতুন মুখ নিয়ে। যদিও চূড়ান্ত দল মাঠে নামার আগেই জানা যাবে, কিন্তু এখনই যে লক্ষণ গুলো ফুটে উঠছে, তা দেখে বলা যায়—ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এক নতুন ভারতের দেখা মিলতে পারে।