টেস্ট ক্রিকেটে (Test Cricket) নতুন ইতিহাস গড়লেন ভারতীয় (Indian Cricket Team) পেসার মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। বার্মিংহামের এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে (Edgbaston Test) ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে অসাধারণ বোলিং করে এক অনন্য রেকর্ডের মালিক হয়েছেন তিনি। সিরাজ এখন টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এমন একমাত্র ভারতীয় বোলার যিনি ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দুটি চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে ছয় বা ততোধিক উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।
এই ম্যাচে সিরাজ ৭০ রানে ৬ উইকেট তুলে নেন, যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। তাঁর আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪০৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। এই বোলিং পারফরম্যান্স ভারতের প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১৮০ রানের লিডে বড় ভূমিকা রেখেছে।
রেকর্ড বইয়ে অনন্য নাম সিরাজ
ইতিহাসের পাতায় সিরাজের নাম এখন এক অনন্য উচ্চতায়। এর আগে ইংল্যান্ডে ছয় বা ততোধিক উইকেট নেওয়া ভারতীয় বোলারদের তালিকায় ছিলেন ইশান্ত শর্মা, অমর সিং, ভগবত চন্দ্রশেখর, চেতন শর্মা, ভূবনেশ্বর কুমার, দিলীপ দোশি ও বিষেণ সিং বেদি। এবার সেই তালিকায় যোগ হল নতুন নাম মহম্মদ সিরাজ।
অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কঠিন কন্ডিশনে ছয় বা ততোধিক উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে শার্দুল ঠাকুর, হরভজন সিং, অনিল কুম্বলে, জসপ্রীত বুমরাহ, জাভাগাল শ্রীনাথ ও রবীন্দ্র জাদেজার। কিন্তু একমাত্র সিরাজই দুই মহাদেশে এই কীর্তি অর্জন করেছেন। ফলে দুই কঠিন পরিবেশে এমন পারফরম্যান্স করা প্রথম ও একমাত্র ভারতীয় বোলার হিসেবে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন তিনি।
সিরাজের আগুনে স্পেল
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে সিরাজ বোলিং শুরু করেন দ্বিতীয় দিনে। দিনের শেষে জ্যাক ক্রলিকে ১৯ রানে আউট করে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপে প্রথম ধাক্কা দেন তিনি। এরপর তৃতীয় দিনের সকালে পরপর দুই বলে ফেরান ইংল্যান্ডের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার জো রুট (২২) ও বেন স্টোকসকে (০)। দু’জনকেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ ধরেন ঋষভ পন্ত।
যদিও হ্যারি ব্রুক ও জেমি স্মিথ ষষ্ঠ উইকেটে ৩০৩ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন, তবে আকাশ দীপ ব্রুককে আউট করে সেই জুটি ভেঙে দেন। এরপর আবারও আক্রমণে ফেরেন সিরাজ। তখন থেকেই শুরু হয় তাঁর বিধ্বংসী স্পেল। দ্রুত শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন ব্রাইডন কার্স, জশ টং ও শোয়েব বশিরকে। তাঁর বোলিংয়ে ইংল্যান্ড ৮৯.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় ৪০৭ রানে।
ভারতের পাল্টা জবাব
সিরাজের এই দুরন্ত বোলিংয়ের ফলস্বরূপ প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের তুলনায় ১৮০ রানের লিড নেয় ভারত। তৃতীয় দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের স্কোর ছিল ৬৪ রানে ১ উইকেট। এই দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছতে সিরাজের অবদান যে কতটা বড়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
টেস্ট ক্রিকেটে যখন ধারাবাহিকতা এবং নির্ভরযোগ্যতা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়, তখন মহম্মদ সিরাজের মতো একজন পেসারের এমন পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখায় ভারতীয় ক্রিকেটকে। তাঁর গতি, লাইন-লেন্থের নিখুঁত প্রয়োগ এবং চাপের মধ্যে উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক ভরসার নাম করে তুলেছে।
Indian Cricket Team bowler Mohammed Siraj makes history with six wickets in England