ফিরেই বাজিমাত! বুমরাহর এক বলেই স্তব্ধ লর্ডস

ক্রিকেটের রাজপ্রাসাদ বলা হয়ে থাকে লর্ডসকে (Lords Test)। সেখানেই শুরু হয়েছে ভারত (Indian Cricket Team)-ইংল্যান্ড (England)টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। ম্যাচের শুরু থেকেই লর্ডসের ২২ গজ…

Indian Cricket Team fast bowler Jasprit Bumrah like to play all match of India vs England Test Series

ক্রিকেটের রাজপ্রাসাদ বলা হয়ে থাকে লর্ডসকে (Lords Test)। সেখানেই শুরু হয়েছে ভারত (Indian Cricket Team)-ইংল্যান্ড (England)টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। ম্যাচের শুরু থেকেই লর্ডসের ২২ গজ ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিল স্বর্গরাজ্য। কিন্তু সেই প্রেক্ষাপটই এক মুহূর্তে বদলে গেল চিত্র। ভারতীয় পেস তারকা জশপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah) যেন বল হাতে নেমে এলেন বজ্রের মতো, আর তার শিকার হলেন ইংল্যান্ডের অন্যতম ভয়ংকর ব্যাটার হ্যারি ব্রুক।

টেস্ট ম্যাচের শুরুতেই এমন এক ডেলিভারি, যা শুধুমাত্র প্রযুক্তির সাহায্যেই বোঝা সম্ভব। নিখুঁত লাইন, দুর্দান্ত লেংথ, আর শেষ মুহূর্তের সিম মুভমেন্ট। ব্রুকের চোখে যেন অবিশ্বাস ফুটে উঠল, বল স্টাম্পে আঘাত হানতেই। এমন পিচে, যেখানে বল বাউন্স করতেও রাজি নয়। এবার সেখানেই বুমরাহর বল ছিল কার্যত অলৌকিক।

   

তৃতীয় টেস্টে তার ফেরাটা নিয়ে খুব আলোচনা হচ্ছিল। এজবাস্টনের টেস্টে তিনি খেলেননি, আর তবুও সিরাজ ও আকাশ দীপের দুরন্ত বোলিংয়ে ভারত সহজ জয় তুলে নেয়। অনেকেই বলছিলেন – তাহলে কি বুমরাহ ছাড়া সামলানো যায়? লর্ডসেই সেই প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিলেন তিনি।

প্রথম স্পেলেই বুমরাহ বোঝালেন, কেন তিনি আলাদা। বাকি পেসাররা যখন কন্ডিশন নিয়ে লড়াই করছেন, বুমরাহ যেন নিজের শর্তেই বল করলেন। প্রতিটি বলেই ছিল পরিকল্পনা। কারণ প্রতিটি বল ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মাথায় রেখে যেন দাগ কাটল।

হ্যারি ব্রুকের উইকেট আসলে ছিল সিম্বোলিক। কারণ, তিনি ছিলেন দারুণ ফর্মে। কিন্তু বুমরাহর একমাত্রার বুদ্ধিদীপ্ততা তাকে বিপর্যস্ত করল। বলটা ভেতরে ঢুকল, সামান্য ঘুরল এবং উড়ে গেল অফ স্টাম্প। যেন ছিল এক রূপকথার গল্প, ‘আমি ফিরে এসেছি।’

Advertisements

তবে শুধুই বল হাতে নয়, নেতৃত্বেও নিজের অবদান রাখলেন বুমরাহ। মিড-অফ থেকে অন্যান্য পেসারদের সঙ্গে বারবার আলোচনায়, ফিল্ডিং সাজানোয়, বোঝাপড়ায় – বোঝা গেল, তার উপস্থিতি মানে দলেই এক নতুন উদ্যম। তরুণ আকাশ দীপ বা অভিজ্ঞ সিরাজ, সবাই বুমরাহর পরামর্শে আস্থা রাখছিলেন। মাঠে যেন তিনি ছিলেন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের চালিকাশক্তি।

জশপ্রীত বুমরাহকে নিয়ে ক্রিকেটবিশ্বের আগ্রহ নতুন নয়। কিন্তু তার চোট-আঘাত, নিয়মিত বিশ্রাম, এবং কখনও অনুপস্থিতি নিয়ে সমালোচনাও হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এমন প্রত্যাবর্তন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ফিটনেস নিয়ে কোনো সন্দেহই রইল না। এবং মানসিকভাবে তিনি যে কতটা দৃঢ়, সেটাও এই উইকেটেই বোঝা গেল।

ক্রিকেট কেবল স্কোরবোর্ড নয়, তা আবেগের খেলা। আর এই টেস্টের শুরুতেই যেভাবে ভারত মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ে এগিয়ে গেল, তার কেন্দ্রে ছিলেন জশপ্রীত বুমরাহ। সিরিজের ফলাফল কী হবে, তা সময় বলবে। কিন্তু বুমরাহর এমন ছন্দই হতে পারে সবচেয়ে বড় তাস। আর লর্ডস টেস্টের প্রথম সকালেই সেই তাসের আভাস পেয়ে গেল ক্রিকেট দুনিয়া।