পাকিস্তানে যাচ্ছে রোহিত-বিরাটরা? সিদ্ধান্ত শোনাল বিসিসিআই

India vs Pakistan match venue in ICC Champions Trophy 2025

আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) কিছু আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছে, তবে নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক কারণে জটিলতা রয়ে গিয়েছে। বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি (BCCI Vice President) রাজীব শুক্লার মতে, এই জটিলতা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে এবং আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (ICC Champions Trophy) নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (ICC) এই সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এবং ভারত ও পাকিস্তান একসাথে সহযোগিতার মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সফলভাবে আয়োজন করতে সক্ষম হবে।

Advertisements

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক দেশ পাকিস্তান, তবে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে বেশ কিছু নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ রয়েছে। রাজীব শুক্ল স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, বিসিসিআই ক্রিকেটারদের নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় এবং ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার কোনও ঝুঁকি নেওয়া হবে না। গত বছর পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের সময়ও ভারতীয় দল সেখানে খেলতে যায়নি এবং সেই সময়ে একটি হাইব্রিড মডেল গ্রহণ করা হয়েছিল। বিসিসিআই এখন একই মডেল অবলম্বন করতে চায়, যেখানে ভারতের ম্যাচগুলো নির্দিষ্ট কোনো দেশের বাইরে অনুষ্ঠিত হবে, তবে পাকিস্তানে অন্যান্য ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।

শেষ সাত ম্যাচে জয় অধরা, চাকরি হারাচ্ছেন কোচ চেরনিশভ?

রাজীব শুক্লের বক্তব্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যা হল আইসিসির সঙ্গে বিসিসিআইয়ের আলোচনার বিষয়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করি আইসিসি দ্রুত একটি সমাধান খুঁজে বের করবে। আমরা এই সমস্যার সমাধান পেতে আশাবাদী।’’ এই মন্তব্যটি ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের জটিলতা এবং মুম্বইয়ের জঙ্গি হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রতিফলন। মুম্বই হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ রয়েছে এবং এই দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট সম্পর্ক অনেকটা শীতল হয়ে গেছে। এর ফলে, বহুদিন ধরেই ভারতীয় ক্রিকেট দল পাকিস্তানে সফর করেনি। বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে একাধিকবার এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে যে, পাকিস্তানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আগেই স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।

এদিকে, ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের সময়েও এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা ছিল। বিসিসিআই পাকিস্তানে দল পাঠায়নি, তবে অন্য দেশের ভেন্যুতে খেলানো হয়েছিল ম্যাচগুলো। সেখানে প্রতিযোগিতাটি হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং এই মডেলটি বিসিসিআই আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্যও প্রস্তাব করছে।

Advertisements

এই পরিস্থিতির মধ্যে, রাজীব শুক্লা আরও বলেন, ‘‘বিসিসিআই চায় প্রতিযোগিতা হোক হাইব্রিড মডেলে। আইসিসি চেয়ারম্যান বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তিনি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আমাদের আশা, ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশ কোনো রকম তিক্ততা ছাড়াই সম্মত হবে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান পাওয়া যাবে।’’ এ কথা উল্লেখযোগ্য যে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সফলভাবে আয়োজন করা সম্ভব। যদি দুই দেশের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়।

স্টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছাতে ভারতের কাঁটা বৃষ্টি !

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে এমন দ্বন্দ্ব ও আলোচনার মধ্যেই একটি বড় প্রশ্ন দাঁড়িয়ে রয়েছে— এই প্রতিযোগিতার আয়োজন পাকিস্তানে হলে কি নিরাপত্তার প্রশ্নটি মিটে যাবে? রাজীব শুক্লা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সমস্যার সমাধান চাই। তবে, আমাদের ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারতের খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের আপোস হতে পারে না।’’ এর অর্থ হলো, বিসিসিআই কোনোভাবেই তাদের ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার সঙ্গে আপোষ করতে প্রস্তুত নয়।

এই অবস্থায়, আইসিসির উপর এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। তারা যদি ভারতের উদ্বেগের সমাধান করতে পারে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতির পথ খুঁজে পায়, তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন সম্ভব হবে। তবে, যদি নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো সমাধান পাওয়া না যায়, তবে ভারতীয় দল পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারে। এর ফলে, হাইব্রিড মডেলই হতে পারে একমাত্র সম্ভাব্য সমাধান। অবশ্য, দুই দেশের মধ্যে এই সংকট মেটানো শুধুমাত্র ক্রিকেটের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে শান্তির এবং সহযোগিতার একটি বড় উদাহরণ হতে পারে।