২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস (Los Angeles) অলিম্পিক্সে (Olympics 2028) এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে ১২৮ বছর পর ক্রিকেটের (Cricket) প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে। ১৯০০ সালের প্যারিস অলিম্পিকে প্রথম ও শেষবারের মতো ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত ছিল। এরপর দীর্ঘ বিরতির অবসান ঘটিয়ে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ আবারও জায়গা করে নিচ্ছে ক্রিকেট। তবে এবার সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট, অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি রূপে।
২০২৮ অলিম্পিকে থাকছে মোট ৩১টি খেলা এবং ৩৫১টি পদক ইভেন্ট। এর মধ্যে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ফ্ল্যাগ ফুটবল, ল্যাক্রোস, স্কোয়াশ, বেসবল/সফটবলের মতো খেলা এবং ফিরে আসছে ক্রিকেট। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (IOC) এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে।
তবে আশঙ্কার বিষয় হল, অলিম্পিকে ক্রিকেট ইভেন্টে সুযোগ পাবে মাত্র ছয়টি পুরুষ ও ছয়টি মহিলা দল। প্রতিটি দলের স্কোয়াড হবে ১৫ জনের। এর অর্থ, মাত্র ৯০ জন ক্রিকেটার পুরুষ বিভাগের হয়ে অলিম্পিকে অংশ নিতে পারবেন। বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হলেও, জানা গিয়েছে আঞ্চলিক বাছাই ও র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতেই দল নির্বাচন করা হবে।
এই পদ্ধতি অনুসরণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে চলেছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলো। বর্তমান আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিং অনুযায়ী শীর্ষস্থান দখল করেছে ভারত, দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়া, চতুর্থ নিউজিল্যান্ড, আটে পাকিস্তান (Pakistan Cricket Team), দশে বাংলাদেশ।
অলিম্পিকের নিয়ম অনুযায়ী, আয়োজক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশ নেবে। যদিও তারা টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে ১৭ নম্বরে, তবু আয়োজক হওয়ায় সুযোগ নিশ্চিত। ফলে প্রতিটি মহাদেশ থেকে একটি করে শীর্ষ দল সুযোগ পাবে। এশিয়া থেকে ভারত (India), ওশেনিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ থেকে ইংল্যান্ড, আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আমেরিকা অঞ্চল থেকে যুক্তরাষ্ট্র। ষষ্ঠ দলটি কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
এই প্রক্রিয়া মেনে চললে, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের জন্য জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড যাদের বর্তমান র্যাঙ্কিং ৪, কিন্তু ওশেনিয়া অঞ্চলে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকায় তারা বাদ পড়তে পারেন। একইভাবে পাকিস্তানও এশিয়ার ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে, ফলে তাদের অলিম্পিক যাত্রা অনিশ্চিত।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এবং আইসিসির লক্ষ্য, ক্রিকেটকে বৈশ্বিকভাবে তুলে ধরা। তাই এই আঞ্চলিক বাছাই পদ্ধতি। তবে প্রশ্ন উঠছে—শুধু ৬টি দল নিয়ে কি সত্যিই বৈশ্বিকতা বজায় থাকবে? অনেকেই মনে করছেন, এতে জনপ্রিয় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দলগুলো বাদ পড়ে যাবে, যা টুর্নামেন্টের মান ও দর্শক আগ্রহে প্রভাব ফেলতে পারে।
নারী বিভাগের ক্ষেত্রে বাছাই হবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। মেয়েদের পদক নির্ধারিত ম্যাচ ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে, আর ছেলেদের ফাইনাল হবে ২৯ জুলাই। ১৪ জুলাই থেকে শুরু হবে অলিম্পিক্সের আনুষ্ঠানিক সূচনা, কিন্তু ক্রিকেট শুরু হয়ে যাবে ১২ জুলাই থেকেই। খেলা চলবে ২৯ জুলাই পর্যন্ত। ভেন্যু হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছাকাছি পোমেনা শহরের ফেয়ারগ্রাউন্ডস স্টেডিয়াম।
India To Qualify but Pakistan Cricket Team likely to not qualify for Olympics 2028 at Los Angeles