বিরাট কোহলি (Virat Kohli) এবং তাঁর ছোটবেলার কোচ (Childhood Coach) রাজকুমার শর্মার (Rajkumar Sharma) সম্পর্ক যেন এক আদর্শ ছাত্র-গুরু সম্পর্কের গল্প। ক্রিকেট বিশ্বে কোহলির সাফল্য কারো অজানা নয়, তবে তাঁর এই সাফল্যের পিছনে একজন বিশেষ ব্যক্তির অবদান রয়েছে। তিনি হলেন রাজকুমার শর্মা। গত রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (Champions Trophy 2025) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জয়ে কোহলি যে নজির গেড়েছেন, তা শুধু দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদেরই নয় বরং তাঁর ছোটবেলার কোচকেও গর্বিত করেছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে কোহলি ১০০ রান করেন। শুধুমাত্র এক ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। কোহলি ১১১ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জয় উপহার দেন। সবচেয়ে স্পেশাল মুহূর্তটি ছিল, ম্যাচের শেষ বলে চার মেরে কোহলি তাঁর শতরান পূর্ণ করেন। এই ইনিংসটি রাজকুমার শর্মা, কোহলির ছোটবেলার কোচ, মাঠে বসে উপভোগ করেছেন। কোহলি তাঁর কোচকে ডেকে দুবাই নিয়ে গিয়েছিলেন এবং নিজের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন।
রাজকুমার শর্মা কোহলির প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা এবং গর্ব প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “কোহলিই আমাকে টিকিট দিয়েছে। আমি ওর হোটেলেই থাকছি। ও জানত যে আমি কোথায় বসে আছি। এ রকম ছেলের জন্য গর্ববোধ হবেই। আপনি যদি ওর কোচ হন, তা হলে এর থেকে গর্বের মুহূর্ত আমার কাছে আর নেই।” এর মাধ্যমে তিনি শুধু কোহলির সাফল্যের প্রশংসা করেননি, বরং তাঁর ছাত্রের প্রতি নিজের অগাধ ভালোবাসাও প্রকাশ করেছেন।
রাজকুমারের মতে, কোহলি ভারতের সবচেয়ে বড় ম্যাচজেতানো ক্রিকেটার। তিনি বলেন, “কোহলি মাঠে নামলেই সকলের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। প্রত্যেকে আশা করে কোহলি অনেক রান করবে এবং দেশকে জেতাবে। কোহলিই এই দেশের সবচেয়ে বড় ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটার। মনে হয় না ওর মতো কোনও ক্রিকেটার দেশকে এত বেশি ম্যাচ জিতিয়েছে।” তাঁর এই উক্তি থেকে স্পষ্ট, রাজকুমার শুধুমাত্র কোহলির সাফল্যকেই মূল্যায়ন করেন না, বরং তাঁর খেলার মেধা ও মানসিক শক্তির গভীর প্রশংসা করেন।
এছাড়া, কোহলির ফর্ম নিয়ে যেসব সমালোচনা হয়, তারও সপক্ষে দাঁড়িয়ে রাজকুমার বলেন, “লোককে বুঝতে হবে কোহলিও একজন মানুষ। কখনও সখনও ফর্ম হারাতে পারে। কখনও ভাল বলে আউট হয়। কিন্তু ও জাত ক্রিকেটার ছিল এবং সেটাই থাকবে।” রাজকুমার শর্মার এই বক্তব্যে কোহলির প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাসের অভিব্যক্তি পরিষ্কার।
অবশ্য, কোহলি যে এই ধরনের চাপের মধ্যে থেকেও নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন, তা তার খেলার মান এবং তার শৃঙ্খলা বোঝায়। তার খেলা দেখতে সাধারণত দেশ-বিদেশের হাজারো ক্রিকেটপ্রেমী স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকে এবং কোহলি যেমন তাদের প্রত্যাশা পূর্ণ করে চলেছেন, তেমনি তাঁর কোচও অত্যন্ত গর্বিত।
রাজকুমারের প্রতি কোহলির কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর প্রেরণা কোহলির সাফল্যকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। কোহলি এবং রাজকুমারের এই সম্পর্ক ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসার এক অনুপ্রেরণামূলক গল্প, যা পরবর্তী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য আদর্শ হতে পারে।