দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) গুমি (Gumi) শহরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ (Asian Athletics Championships 2025) জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টে (Javelin Throw) ঘটল নাটকীয় ঘটনা। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স সোনার (Gold) পদক জিতে নজর কাড়লেন পাকিস্তানের (Pakistan) আর্শাদ নাদিম (Arshad Nadeem)। ভারতের (India) তরুণ প্রতিভা সচিন যাদব (Sachin Yadav) তাঁকে কড়া টক্কর দিলেও শেষ পর্যন্ত রুপোতেই (Silver) সন্তুষ্ট থাকতে হয়। আর্শাদের ৮৬.৪০ মিটার ছোড়া জ্যাভলিন ছিল এই মরসুমে এশিয়ার সেরা থ্রো, যা তাঁকে তাঁর কেরিয়ারের প্রথম এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ পদক এনে দেয়।
প্যারিস অলিম্পিক্স ২০২৪ সোনা জয় করে ইতিহাস গড়েছিলেন পাকিস্তানের আর্শাদ। অলিম্পিকে ৯২.৯৭ মিটার দূরের থ্রো করে তিনি ৯০ মিটার পার করেন এবং নতুন নজির স্থাপন করেন। গুমিতে তাঁকে সেই উচ্চতা ছোঁয়ার প্রয়োজন হয়নি। তবু ৮৬.৪০ মিটার থ্রো করেই তিনি অনায়াসে প্রথম স্থান দখল করেন।
ভারতের তরুণ জ্যাভলিন থ্রোয়ার সচিন যাদব তাঁর কেরিয়ারের সেরা পারফরম্যান্স করেও দ্বিতীয় স্থানেই থেমে যান। তাঁর ৮৫.১৬ মিটার থ্রো তাঁকে রুপোর পদক এনে দেয়। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তিনি মাত্র ০.৩৪ মিটার ব্যবধানে ২০২৫ সালের বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি, যেখানে যোগ্যতার সীমা ৮৫.৫০ মিটার।
তৃতীয় স্থানে শেষ করেন জাপানের ইউতা সাকিয়ামা। তিনিও ব্যক্তিগত সেরা পারফরম্যান্স করে ৮৩.৭৫ মিটার ছুড়ে ব্রোঞ্জ জেতেন। শ্রীলঙ্কার রুমেশ থরঙ্গা পাথিরাগে কিছুক্ষণ প্রতিযোগিতার শুরুতে এগিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর ৮৩.২৭ মিটার থ্রো তাঁকে চতুর্থ স্থানে রাখে।
ভারতের আর এক প্রতিযোগী যশবীর সিংহ ৮২.৫৭ মিটার থ্রো করে পঞ্চম স্থানে শেষ করেন, এটিই তাঁর ব্যক্তিগত সেরা থ্রো। ষষ্ঠ স্থানে ছিলেন চীনের হু হাওরান। সপ্তম ও অষ্টম স্থানে যথাক্রমে ছিলেন শ্রীলঙ্কার সুমেধা জগত এবং পাকিস্তানের মহম্মদ ইয়াসির।
🚨 SACHIN YADAV WINS SILVER WITH LIFETIME BEST! 🇮🇳🥈
India’s Sachin Yadav unleashed a monster throw of 85.16m to bag Silver at the Asian Athletics Championships 2025!
🔥 His 5th throw also went 83.08m — showing top form! He missed the Worlds qualification mark by just 34cm!… pic.twitter.com/voovBYQxI4
— nnis Sports (@nnis_sports) May 31, 2025
এই প্রতিযোগিতায় ভারতের অন্যতম সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া অংশগ্রহণ করেননি। ফলে ভারতের তরুণ প্রতিভাদের জন্য নিজেকে প্রমাণ করার দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সচিন যাদব সেই সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন।
নাদিমের কোচ সালমান বাট প্রতিযোগিতা শেষে বলেন, “এই সিজনে এটা ওর প্রথম প্রতিযোগিতা ছিল। তাই এই পারফরম্যান্স ভালোই বলা যায়। যদি হিটস ও ফাইনালের মাঝে একদিন বিশ্রামের সময় পেত, তাহলে আরও ভালো ফল করতে পারত।”
এদিকে ভারতীয় অ্যাথলেটদের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য এসেছে অন্যান্য ইভেন্টে। মহিলাদের ৫০০০ মিটার স্টিপলচেজে পারুল চৌধুরি ১৫:১৫.৩৩ সেকেন্ডে শেষ করে রুপো জেতেন। পুরুষদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টে অনিমেষ কুজুর জাতীয় রেকর্ড ভেঙে ২০.৩২ সেকেন্ডে দৌড়ে ব্রোঞ্জ পান।
এশিয়ান গেমসের পদকজয়ী ভিত্যা মহিলাদের ৪০০ মিটার হার্ডলসে ৫৬.৪৬ সেকেন্ডে সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ পান। পূজা নামের আর এক অ্যাথলেট মহিলাদের ৮০০ মিটারে ব্রোঞ্জ জিতেছেন। জ্যোতি ইয়ারাজি মহিলাদের ২০০ মিটার ফাইনালে পঞ্চম স্থানে শেষ করেন।
এই প্রতিযোগিতায় আর্শাদ নাদিমের জয়ের মাধ্যমে পাকিস্তান তাদের অ্যাথলেটিক্স জগতে নতুন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে। অন্যদিকে, সচিন যাদবের মতো প্রতিভাবান অ্যাথলেট ভারতের ভবিষ্যতের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছেন। ভবিষ্যতে নাদিম-সচিনের দ্বৈরথ আরও আকর্ষণীয় হবে বলেই মনে করছেন ক্রীড়াবিশেষজ্ঞরা।