এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) ম্যাচ মানেই অতিরিক্ত উত্তেজনা, আবেগ এবং প্রতিটি মুহূর্তে কূটনৈতিক প্রতিচ্ছবি। তবে এইবার শুধু খেলার মাঠে নয়, মাঠের বাইরের সৌজন্যচর্চাও রীতিমতো বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পরবর্তী ম্যাচেও হ্যান্ডশেক না করার সিদ্ধান্তে অনড় ভারতীয় শিবির। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) স্পষ্ট জানিয়েছেন, খেলা হবে ঠিকই, কিন্তু কোনওরকম সৌজন্য বিনিময় নয়।
রাজনৈতিক আবহেই ক্রিকেট যুদ্ধ
আগামী রবিবার এশিয়া কাপের সুপার ফোরে সম্ভবত ফের মুখোমুখি হচ্ছে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ভারত ও পাকিস্তান। এর আগে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে টস থেকে শুরু করে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত, একবারও পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি সূর্যকুমার। ম্যাচ শেষে ভারতীয় সাজঘরের দরজাও বন্ধ রাখা হয়। সৌজন্য বিনিময়ের সেই প্রচলিত রীতি থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে সরে আসে ভারতীয় শিবির।
সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্ত এসেছে শুধু ক্রিকেটীয় ভাবনা থেকে নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পহেলগাঁও হামলা এবং সেই প্রেক্ষিতে শহিদদের প্রতি সম্মান জানানোর বার্তা। সূর্যকুমার বলেন, “সব কিছু খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দিয়ে বিচার করা যায় না। কিছু ঘটনা সেই গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়।”
বিস্ফোরক সিদ্ধান্ত: পুরস্কারও নেবেন না!
এই বিতর্কিত অবস্থান এখানেই শেষ নয়। ভারতীয় দল জানিয়েছে, যদি তারা ফাইনালে পৌঁছে শিরোপা জেতে। সেক্ষেত্রে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নকভির হাত থেকে কোনও পুরস্কার গ্রহণ করবেন না। দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, “আমরা শুধু খেলব। সম্মানজনক আচরণ কাকে বলে, তা আমরা ভালো করেই জানি। কিন্তু কিছু সিদ্ধান্ত সময়ের দাবিতে নিতে হয়।”
পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিবাদ
এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে পাকিস্তান। হ্যান্ডশেক না করার ঘটনায় ক্ষুব্ধ পাক অধিনায়ক সলমন আঘা ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছিল। ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্টের অপসারণ চেয়ে চিঠি দিয়েছে তারা। এমনকি দাবি না মানলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে পরবর্তী ম্যাচ বয়কটের হুমকিও দিয়েছে তারা।
হ্যান্ডশেক কি বাধ্যতামূলক?
বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা বিষয়টি হল, হ্যান্ডশেক বা করমর্দন। এই রীতি আদৌ কি বাধ্যতামূলক? আইসিসি কিংবা এসিসি কেউই এই সৌজন্যচর্চাকে নিয়ম হিসেবে মানে না। অর্থাৎ, কোনও খেলোয়াড় বা দল চাইলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে করমর্দন না করলেও সেটির জন্য শাস্তি হতে পারে না। এটি সম্পূর্ণরূপে ঐতিহ্যগত এবং ঐচ্ছিক।