অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) এএফসি এশিয়ান কাপ ২০৩১ আয়োজনের (AFC Asian Cup 2031) জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিড জমা দিয়েছে। এই পদক্ষেপ ভারতে এশিয়ার ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা নিয়ে আসার একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে। শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ৩৫তম এএফসি কংগ্রেসের বার্ষিক সাধারণ সভায় এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) ভারতের এই বিডকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী ড. মনসুখ লক্ষ্মণভাই মান্ডব্য ভারতের এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বড় ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজন একটি দেশের ক্রীড়া ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর উপর গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। ক্রীড়া ভারতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মর্যাদার একটি শক্তিশালী প্রমাণ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের জন্য ভারতের দূরদর্শী বিডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এছাড়াও, কমনওয়েলথ গেমস আবার আয়োজনের জন্য ভারতের আকাঙ্ক্ষা ক্রমশ গতি পাচ্ছে।”

ড. মান্ডব্য সরকারের সমর্থনের কথা জানিয়ে আরও বলেন, “দেশজুড়ে ফুটবলের অপার জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনা করে, এএফসি এশিয়ান কাপ আয়োজনের সুযোগ আমাদের জন্য স্বাভাবিক। সরকার এআইএফএফ-এর এই বিডকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। আমরা যদি এই বিডে সফল হই, তবে আমি নিশ্চিত যে ফুটবল ভারতে বড় ধরনের প্রেরণা পাবে।”
কুয়ালালামপুরে ৩৫তম এএফসি কংগ্রেসে উপস্থিত এআইএফএফ-এর সভাপতি শ্রী কল্যাণ চৌবে বলেন, “এএফসি এশিয়ান কাপ ২০৩১ আয়োজনের বিডে সরকারের দৃঢ় সমর্থন পেয়ে এআইএফএফ আনন্দিত। এশিয়ান কাপ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং এটি ভারতের জন্য শুধু এশিয়ার কাছে নয়, বিশ্বের কাছে আমাদের সক্ষমতা প্রদর্শনের একটি সুযোগ। ২০২৭ সালের টুর্নামেন্ট আমাদের জন্য খুব তাড়াতাড়ি হতো, তাই আমরা সেটির জন্য জোর দিইনি। কিন্তু ২০৩১ এশিয়ান কাপের জন্য ছয় বছর সময় হাতে থাকায় আমরা এশিয়ার সেরাদের মুখোমুখি হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে পারব।”
এগিয়ে যাওয়ার পথে, এএফসি এখন বিডিং সদস্য সংস্থাগুলির সঙ্গে নির্ধারিত সময়সীমা ও প্রক্রিয়া অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিডিং ডকুমেন্টেশন তৈরির কাজ করবে। এএফসি এশিয়ান কাপ ২০৩১-এর জন্য একটি বিডিং ওয়ার্কশপ এই মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই বিড সফল হলে ভারতের ফুটবলের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে। দেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে, এবং এশিয়ান কাপের মতো একটি বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন ফুটবলের অবকাঠামো, প্রশিক্ষণ, এবং তরুণ প্রতিভা বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। এছাড়াও, এটি ভারতের ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।
ক্রীড়ামন্ত্রী এবং এআইএফএফ-এর এই উদ্যোগ ভারতীয় ফুটবলের ভক্তদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এশিয়ান কাপের মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট ভারতে আয়োজিত হলে তা শুধু ফুটবলের উন্নতিই নয়, দেশের পর্যটন ও অর্থনীতির উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এখন সবার দৃষ্টি এএফসি’র পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে, যা ভারতের এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথে একটি মাইলফলক হতে পারে।