বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক অস্থিরতা আর সহিংসতার আগুনে পড়ে রীতিমতো দুর্ভোগ পোহাতে হল ভারতীয় তিরন্দাজ দলকে। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ, কাঁদানে গ্যাস সব মিলিয়ে শহর কার্যত অচল। ঠিক এই পরিস্থিতিতেই ২০২৫ এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে দেশে ফিরতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ভারতের ২৩ জন তিরন্দাজ।
বৃথা লড়াই, বাংলাদেশের কাছে হার খালিদের ভারতের
মেডেলের ঝুলি ভরে গেলেও ফিরতি পথে দুশ্চিন্তা
১০টি পদক। ৬ সোনা, ৩ রুপো, ১ ব্রোঞ্জ নিয়ে সফলভাবে শেষ হয়েছে ভারতের অভিযান। ১৪ নভেম্বর শেষ হওয়া প্রতিযোগিতার পরদিনই দিল্লিতে ফেরার কথা ছিল দলের এক অংশের। কিন্তু ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, ফ্লাইট ১০ ঘণ্টা দেরি। পরে রাত দুটো নাগাদ ঘোষণা আসে, বিমান সম্পূর্ণ বাতিল।
রাতভর বিমানবন্দরে অপেক্ষা করে অবশেষে বাধ্য হয়ে থাকার জায়গা খুঁজতে বের হন তিরন্দাজরা। কিন্তু সেখানেই দেখা দেয় আরও বড় সমস্যা। অভিষেক বর্মার বলেন, “আমাদের যেখানেই রাখা হয়েছিল, সেটা কোনও হোটেল নয়। একটা ধর্মশালা বলা যেতে পারে। ছয়জন মহিলাকে এক ঘরে থাকতে হয়েছে। একটা মাত্র টয়লেট, তাও ভয়াবহ নোংরা।”
ব্যর্থ ফেডারেশনের বৈঠক! আইএসএলের ভবিষ্যৎ শীর্ষ আদালতের হাতে
জানলাবিহীন একটি সাধারণ বাসে করে সেখান পর্যন্ত যাত্রা করতেও ভয় পেয়েছেন তাঁরা। “দেশজুড়ে সংঘর্ষ, রাতের অন্ধকার, তার মধ্যেই আমাদের সেই বাসে তোলা হল… কিছু হলে দায় নিত কে?” প্রশ্ন অভিষেকের।
নিজেদের উদ্যোগে থাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেও পারেননি কেউ। কারণ, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে ডেবিট–ক্রেডিট কার্ড কাজ করছিল না। নগদ অর্থ না থাকায় নিরুপায় হয়েই ধর্মশালাতেই রাত কাটাতে বাধ্য হন সবাই। পরের দিন ভোরে আবার বিমানবন্দরে পৌঁছে যান ভারতের তিরন্দাজরা। এরপরও বিমানে ওঠার আগে বেশ দেরি হয়। দিল্লিতে পৌঁছেও নতুন সমস্যার মুখোমুখি হন অনেকে। সংযোগকারী ফ্লাইট মিস হওয়ায় দু’বার টিকিট কাটতে হয় কয়েকজনকে, কোনো ক্ষতিপূরণও পাননি তাঁরা।
উইকেট ভাঙার দায়ে ICC শাস্তির কোপে তারকা পাক ক্রিকেটার
হাসিনার রায়দান ঘিরে উত্তপ্ত বাংলাদেশের রাস্তায় তখন কড়া নিরাপত্তা। রাজধানী ঢাকার একাধিক হামলার অভিযোগে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করছে। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মাঝেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে অদ্ভুত এবং অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় ভারতের তিরন্দাজদের।
মাঠে স্বর্ণঝরা সাফল্য হলেও মাঠের বাইরে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক দুঃসহ রাত। ভবিষ্যতে কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন বা ক্রীড়াদল পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও লজিস্টিকস নিয়ে আরও সতর্ক ভাবনার দরকারকে সামনে আনছে।
