HomeSports Newsপদক জয়ের হ্যাটট্রিক, রাজ্যের ক্রীড়া কাঠামো নিয়ে 'বিস্ফোরক' বঙ্গতনয়া

পদক জয়ের হ্যাটট্রিক, রাজ্যের ক্রীড়া কাঠামো নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ বঙ্গতনয়া

- Advertisement -

বর্তমানে বাংলার সাঁতারু সৌবৃতি মণ্ডল (Soubrity Mondal) জাতীয় গেমসে (National Games) এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছেন। তিনি গত কয়েক বছর ধরে সাঁতারের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। দুটি স্বর্ণ পদক এবং একটি রুপোর পদক জিতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তবে একাধিক ঘটনা ঘটেছে যা তাঁর এই সাফল্যকে কিছুটা ফিকে করেছে। সৌবৃতি মণ্ডল যিনি হাওড়া নিবাসী, গত আট বছর ধরে দিল্লির তালকাটোরা সুইমিং পুলে নিয়মিত অনুশীলন করছেন। উত্তরাখণ্ডে অনুষ্ঠিত তার এই সাফল্যকে নিয়ে বাংলার ক্রীড়া প্রশাসকদের মাতামাতি হলেও, সৌবৃতি বাংলার ক্রীড়া কাঠামোর (Bengal Sports Infrastructure) বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন।

সৌবৃতির অভিযোগ, বাংলায় সাঁতার এবং অন্যান্য ক্রীড়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। তিনি বলেন, “বাংলায় সাঁতারের পরিকাঠামো নেই, তাই আমি দিল্লি থেকে অনুশীলন করি। এখানে সাঁতারের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সুবিধা রয়েছে, যা বাংলায় পাওয়া যায় না। এখানে অনুশীলন করার মান অনেক উচ্চমানের, তবে বাংলায় আমাদের মতো সাঁতারুর জন্য কোনো তদারকি নেই।” সৌবৃতির এই কথায় পুরো রাজ্যের ক্রীড়ার পরিকাঠামোর দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে।

   

অন্যদিকে, জাতীয় গেমসে সৌবৃতি মণ্ডল এবং তাঁর সতীর্থদের মধ্যে এক তীব্র অশান্তি সৃষ্টি হয়। তিনি জানান, মেয়েদের ২০০ মিটার রিলে ইভেন্টে শুরুতে তাকে নামানোর জন্য রাখা হয়েছিল। তবে তিনি চেয়েছিলেন যে, জুনিয়র কাউকে প্রথমে নামানো হোক। কিন্তু রিলে স্টার্ট হওয়ার সময় সৌবৃতিকে জানানো হয় যে, তিনি, মৌবনী, স্নিগ্ধা ঘোষ এবং স্বস্তিকা রয়েছেন রিলে টিমে। এরপর স্বস্তিকা প্রথমে নামতে অস্বীকার করে। মৌবনীকে নামানোর কথা বলা হয়। এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্বস্তিকা বলেন, “ভাল না করলে আমাকে দোষ না দেওয়া হয়।” এই কথা শোনার পর সৌবৃতির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। অভিযোগ, এই বচসায় স্বস্তিকা অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন। এই ঘটনায় সৌবৃতি ম্যানেজারকে জানিয়ে রিলে ইভেন্ট থেকে নামতে অস্বীকার করেন।

এমনকি পুরো ঘটনা দেখে বাংলা দলের সদস্যদের কলরুম থেকে বের করে দেওয়া হয়, তাই নামানো সম্ভব হয়নি। সৌবৃতির ভাষায়, “এটা ছিল এক অমানবিক পরিস্থিতি। দলে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি চেষ্টা করেছি, যাতে আমার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে এর প্রভাব না পড়ে।” সাঁতারুর এই পদকজয় এবং একদিকে তিক্ত অভিজ্ঞতা, তাকে ক্রীড়াজগতে আরও পরিশ্রমী হতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

তবে, জাতীয় গেমসে দুটি সোনা এবং একটি রুপো জয়ের পরেও সৌবৃতি রাজ্য প্রশাসন থেকে কোন উৎসাহ বা অভিনন্দন বার্তা পাননি। তিনি জানান, “প্রথমবার সোনাজয় করার পর কয়েকজন মন্ত্রীর ফোন এসেছিল, তবে এরপর আর কারও তরফে কোনো যোগাযোগ হয়নি। সাফল্যের পর সাংবাদিকদের ফোন বেশি আসছে, কিন্তু রাজ্য প্রশাসন থেকে কোনও অভিনন্দন নেই।”

এশিয়ান গেমসে সাফল্য অর্জনই সৌবৃতির প্রধান লক্ষ্য, তিনি জানিয়েছেন, “বাংলাকে আরও পদক দিতে পেরে আমি খুশি। তবে এখানেই থেমে থাকতে চাই না। এশিয়ান গেমসে সাফল্য পাওয়াই আমার লক্ষ্য। তার জন্য আমাকে আরও পরিশ্রম করতে হবে।” সাঁতারজগতে আরও এক ধাপ এগিয়ে যেতে সৌবৃতি মণ্ডল দিল্লিতেই থেকে যেতে চান, যতদিন না তিনি সাঁতারে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দিতে সক্ষম হন।

- Advertisement -
Subhasish Ghosh
Subhasish Ghoshhttps://kolkata24x7.in/author/sports-news-desk
শুভাশীষ ঘোষ এক প্রাণবন্ত ক্রীড়া সাংবাদিক, বর্তমানে Kolkata24X7.in ক্রীড়া বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। ক্রিকেট থেকে ফুটবল, হকি থেকে ব্যাডমিন্টন প্রতিটি খেলাতেই তাঁর দখল প্রশংসনীয়। তিনি নিয়মিত ফিল্ড রিপোর্টিং করেন এবং ISL, I-League, CFL, AFC Cup, Super Cup, Durand Cup কিংবা Kolkata Marathon মতো মর্যাদাসম্পন্ন ইভেন্টে Accreditation Card প্রাপ্ত সাংবাদিক। ২০২০ সালে সাংবাদিকতার জগতে আত্মপ্রকাশ, আর তখন থেকেই বাংলার একাধিক খ্যাতিমান সাংবাদিকের সাহচর্যে তালিম গ্রহণ। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইতিহাস ও রাজনীতির প্রতি রয়েছে অগাধ টান, যার প্রমাণ তাঁর অফবিট যাত্রাপথ ও অনুসন্ধিৎসু মন। পেশাগত প্রয়োজনে কিংবা নিতান্ত নিজস্ব আগ্রহে ছুটে যান অজানার সন্ধানে, হোক পাহাড়ি আঁকাবাঁকা গলি কিংবা নিঃসঙ্গ ধ্বংসাবশেষে ভরা প্রাচীন নিদর্শন। ছবি তোলার নেশা ও লেখার প্রতি দায়বদ্ধতা মিলিয়ে শুভাশীষ হয়ে উঠেছেন সাংবাদিক।
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular