আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) প্রথম কোয়ালিফায়ারে একপেশে জয় তুলে নিয়ে চতুর্থবারের মতো আইপিএলের ফাইনালে উঠল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। মুল্লানপুরে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে তারা ৮ উইকেটে হারিয়ে দিল পাঞ্জাব কিংসকে (Punjab Kings)। বল হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর ব্যাট হাতেও ছিল দাপুটে প্রদর্শন। এই জয়ের ফলে ৯ বছর পর চতুর্থবারের জন্য ফাইনালে (IPL 2025 Final) পৌঁছে গেল বিরাটের বেঙ্গালুরু।
এই জয় বিশেষ করে বিরাট কোহলির জন্য আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি করেছে। ২০১৬ সালে অধিনায়ক হিসেবে আরসিবিকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনি, তবে ট্রফি জেতা হয়নি। এবার তিনি অধিনায়ক নন, তবে দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে নিজের শেষ আইপিএল ট্রফির স্বপ্ন দেখতে পারেন। এবার আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে সেই কাঙ্ক্ষিত ট্রফি। ফাইনালে জিতলেই ১৮ নম্বর জার্সিধারী কোহলির হাতে উঠতে পারে আইপিএলের ১৮তম ট্রফি।
ম্যাচের চিত্র: পাঞ্জাবের ধস ও বেঙ্গালুরুর দাপট
টস জিতে পঞ্জাব কিংসকে ব্যাট করতে পাঠায় বেঙ্গালুরু। শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে দেখা যায় আরসিবির বোলারদের। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাঞ্জাব। পরে সেই ধাক্কা আর সামাল দিতে পারেনি তারা। শেষমেষ মাত্র ১৪.১ ওভারে ১০১ রানে অলআউট হয়ে যায় পাঞ্জাব। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন মার্কাস স্টইনিস। এছাড়া প্রভসিমরন সিং এবং ওমরজাই করেন ১৮ রান করে। বাকিরা কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার মাত্র ২ রান করে ফিরেন সাজঘরে।
বেঙ্গালুরুর হয়ে বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন সুয়াশ শর্মা। তিনি ৩ উইকেট নেন মাত্র ১৭ রান দিয়ে। পাশাপাশি জশ হ্যাজেলউড ৩টি উইকেট তুলে নেন ২১ রান দিয়ে। যশ দয়াল ২৬ রানে ২টি উইকেট এবং ভুবনেশ্বর কুমার ও রোমারিও শেফার্ড ১টি করে উইকেট নেন।
ছোট লক্ষ্য, সহজ জয়
মাত্র ১০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন বেঙ্গালুরুর ব্যাটাররা। ফিল সল্ট ছিলেন অনবদ্য। মাত্র ২৭ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা। অপর প্রান্তে অধিনায়ক পতিদারও ছিলেন ঝোড়ো মেজাজে। মাত্র ৮ বলে ১৫ রান করে ম্যাচ শেষ করে দেন।
বিরাট কোহলি করেন ১২ বলে ১২ রান, আর মায়াঙ্ক আগরওয়াল করেন ১৩ বলে ১৯ রান। মাত্র ১০ ওভারে, ৬০ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় বেঙ্গালুরু। পাঞ্জাবের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন কাইল জেমিসন ও মুশির খান।
ফাইনালের দিকেই নজর
এই জয় শুধুই এক ম্যাচ নয়, আরসিবির জন্য এক ইতিহাস গড়ার সুযোগ। দীর্ঘ ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটানোর জন্য আর মাত্র এক জয় চাই তাদের। ফাইনালে এই পারফরম্যান্স বজায় রাখতে পারলে প্রথমবার আইপিএল ট্রফি উঠতে পারে বেঙ্গালুরুর ঘরে।
অন্যদিকে, পাঞ্জাব কিংসের সামনে এখনও ফাইনালে ওঠার সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জয় পেলেই ফাইনালে মুখোমুখি হবে তারা আরসিবির। তবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর আগে শ্রেয়স আইয়ারদের সামলাতে হবে এই বড় ব্যবধানে হারার মানসিক ধাক্কা।
ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ৩ জুন। তার আগে পুরো ক্রিকেট দুনিয়া তাকিয়ে রয়েছে, বিরাট কোহলির হাতে কি উঠবে তাঁর বহু প্রতীক্ষিত আইপিএল ট্রফি? নাকি আবারও হতাশা? উত্তরের অপেক্ষায় গোটা দেশ।
