ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি ইনিভালাপ্পিল মানি বিজয়ান (IM Vijayan) শনিবার এক ঐতিহাসিক দিন পার করলেন। সকাল বেলা দিল্লির এক সরকারি কর্মকর্তার ফোনে জানতে পারেন ভারত সরকার তাকে ক্রীড়াক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পদ্মশ্রী ( Padma Shri) পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারের তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর বিজয়ানের ফোনে একের পর এক শুভেচ্ছা বার্তা আসতে থাকে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, বর্তমান ও প্রাক্তন ফুটবলার এবং বন্ধু-বান্ধবরা তাকে শুভেচ্ছা জানাতে কল করেন।
তবে এই সম্বর্ধনা ও প্রশংসার মাঝে বিজয়ান এক মুহূর্তের জন্যও ভুলে যাননি যারা প্রতিদিন ঝড়, বৃষ্টি বা তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে মাঠে ফুটবল খেলা দেখতে উপস্থিত হন।
বিজয়ান বলেছেন, “আমি এই পুরস্কারটি দেশের সকল ফুটবল ভক্তকে উৎসর্গ করছি। আজ আমি যা কিছু তা তাদের কারণেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি জানি না আমি কতটা ভালো ফুটবলার ছিলাম তবে আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি তা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। তারা সেই মানুষ যারা এই সুন্দর খেলার মান বাড়িয়ে তুলেছেন।”
১৯৯১ সালে তিরুবনন্তপুরমে রোমানিয়ার বিপক্ষে নেহরু কাপের মাধ্যমে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়। ১২ বছর ধরে ভারতের জাতীয় দলের অমূল্য সদস্য হিসেবে তিনি ফুটবল মাঠে রাজত্ব করেন। আফ্রো-এশিয়ান গেমসে ২০০৩ সালে বুট তুলে রাখার পর তিনি ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
IM Vijayan dedicates Padma Shri award to Indian football fans
“I am not sure how good I was as a footballer. But the love I received from the fans was the biggest achievement of my career. They are the people who are responsible for taking the beautiful game to this… pic.twitter.com/cZ4F2vFJqe
— Indian Football Team (@IndianFootball) January 26, 2025
পদ্মশ্রী পুরস্কারটি তার এক কৃতিত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারের আরেকটি সম্মান। তিনি ভারতীয় ফুটবলের দ্রুততম হ্যাটট্রিক (১৯৯৯ SAF গেমসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে) রেকর্ডধারী, তিনবার AIFF প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার (১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০০) নির্বাচিত এবং ২০০৩ সালে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছেন।
বর্তমানে বিজয়ান AIFF এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য এবং AIFF টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারপারসন হিসেবে কাজ করছেন। তিনি হলেন নবম ভারতীয় ফুটবলার যিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর আগে গোষ্ঠপল, সাইলেন মান্না, চুনি গোস্বামী, পি.কে. বন্দ্যোপাধ্যায়, বাইচুন ভুটিয়া, সুনিল ছেত্রী, বেম্বেম দেবী, এবং ব্রাহ্মণন্দ শঙ্কওয়ালকার পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ফুটবল মাঠে তার অবদান ও উজ্জ্বল ক্যারিয়ার এক নতুন যুগের প্রেরণা হয়ে থাকবে এবং আগামী প্রজন্মের ফুটবলারদের জন্য তা এক বিশাল অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।