আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ (ICC Champions Trophy 2025) শুরু হচ্ছে ১৯ ফেব্রুয়ারি। ইতিমধ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন নিয়ে নানা সংশয় ও উদ্বেগ ছিল চোখে পড়ার মত। আয়োজক দেশ পাকিস্তান (Pakistan), সেখানে কি সুষ্ঠুভাবে এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (International Cricket) ইভেন্টটি আয়োজন সম্ভব হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিশেষ করে, টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র তিন সপ্তাহ আগে এই ধরনের প্রশ্ন ওঠা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য পাকিস্তান তিনটি স্টেডিয়াম প্রস্তুত করার দায়িত্ব নিয়েছে, এবং সেগুলোর প্রস্তুতি নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচটি ১৯ ফেব্রুয়ারি করাচি স্টেডিয়ামে, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু অনুষ্ঠানের সুষ্ঠু আয়োজনের জন্য একাধিক সমস্যা ও বাধা রয়েছে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্টেডিয়াম, বিশেষ করে গদ্দাফি স্টেডিয়াম (লাহোর) এবং ন্যাশনাল স্টেডিয়াম (করাচি), বড় আকারে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যদিও পিসিবি (Pakistan Cricket Board) তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছে, কিন্তু সময়ের মধ্যে এসব স্টেডিয়ামের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উদ্বোধনে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পাকিস্তানের তরফে।
এছাড়াও, পাকিস্তানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনেক দেশের ক্রিকেট দল যেতে অস্বীকার করেছিল, বিশেষ করে ভারত। ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কারণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলের অধিনায়কদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণেই পাকিস্তানে তাদের উপস্থিতি সম্ভব হয়নি এবং অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও একই ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগ বিদ্যমান।
এমন পরিস্থিতিতে, পাকিস্তান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। পরিকল্পনা ছিল লাহোর কেল্লার হুজুরি বাগে এক জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এমনকি, আইসিসি এবং পিসিবি এক ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে, যেখানে অধিনায়কদের ছবির মাধ্যমে টুর্নামেন্ট শুরু হবে।
পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা শুধু নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং স্টেডিয়াম প্রস্তুতির বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিলাল চোহান, যিনি ভেন্যুগুলোর সংস্কারের দায়িত্বে আছেন, তিনি জানিয়েছেন যে সময়ের মধ্যে সব কিছু ঠিকভাবে প্রস্তুত হওয়া নিয়ে চিন্তা রয়েছে। এই অবস্থায়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচগুলি অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে।
তবে, এই সমস্ত সমস্যার মধ্যেও পাকিস্তান সফলভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হাইব্রিড মডেলে ভারতের ম্যাচগুলি দুবাইতে অনুষ্ঠিত হবে, যা কিছুটা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার সুষ্ঠু আয়োজনের জন্য পাকিস্তানকে আরও অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, পাকিস্তানের ক্রিকেট প্রশাসন এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (ICC) একযোগে কাজ করে এই সমস্যা সমাধান করতে পারবে কিনা, তা সময়ই বলবে।