I-League 2024-25: সর্ব ভারতীয় ফুটবল সংস্থার আপিল কমিটি (AIFF Appeal Committee) আগামী শুক্রবার তথা ১৮ এপ্রিল, নামধারী এফসির আপিল শুনানির জন্য বৈঠকে বসবে। এই শুনানি ইন্টার কাশি এফসির বিরুদ্ধে তাদের মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে। এআইএফএফ-এর ডিসিপ্লিনারি কমিটির একটি আদেশ স্থগিত রেখেছে আপিল কমিটি, যেখানে বলা হয়েছিল নামধারী এফসি ১৩ জানুয়ারি ইন্টার কাশীর বিরুদ্ধে ২-০ গোলে জয়ী ম্যাচে একজন অযোগ্য খেলোয়াড় খেলিয়েছে। এই অযোগ্য খেলোয়াড়ের কারণে ম্যাচটি ফরফিচার হিসেবে গণ্য হয় এবং ইন্টার কাশিকে তিন পয়েন্ট দেওয়া হয়।
এই তিন পয়েন্ট এখন ইন্টার কাশীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপিল কমিটির সিদ্ধান্ত যদি তাদের পক্ষে যায়, তবে তারা ৪২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করবে, যা অস্থায়ী শীর্ষস্থানীয় চার্চিল ব্রাদার্সের (৪০ পয়েন্ট) থেকে দুই পয়েন্ট বেশি। এই ফলাফল ইন্টার কাশীকে আই-লিগের শিরোপা এবং ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) উন্নীতির সুযোগ এনে দেবে।
গত সপ্তাহে, ১২ এপ্রিল, ইন্টার কাশী দিল্লিতে আপিল কমিটির সামনে তাদের বক্তব্য পেশ করে। কিন্তু নামধারী এফসি-র আইনজীবী শিবম সিং অসুস্থতার কারণে শুনানিতে উপস্থিত হতে পারেননি, ফলে কোনো আদেশ জারি করা সম্ভব হয়নি। শিবম সিং ইমেলের মাধ্যমে কমিটিকে জানিয়েছেন যে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং তর্ক উপস্থাপন করবেন। এই পরিস্থিতিতে আপিল কমিটি নামধারীকে আরেকটি সুযোগ দিয়ে ১৮ এপ্রিল শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে।
আপিল কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্টের বিচারপতি রাজেশ ট্যান্ডন। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেশন কোর্টের বিচারপতি অশোক ত্রিপাঠী এবং দুই আইনজীবী, অনিল ক্ষত্রিয়া ও দিবাকর থিতে। এআইএফএফ-এর একটি সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সঞ্জয় যাদব সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, এবং আকিল আনসারি কমিটির বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশ নেননি।
আই-লিগ এই প্রথমবারের মতো ৬ এপ্রিল রবিবার কোনো আনুষ্ঠানিক চ্যাম্পিয়ন ছাড়াই শেষ হয়েছে। চার্চিল ব্রাদার্স ৪০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকলেও, ইন্টার কাশি শেষ ম্যাচে রাজস্থান ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে জয়ী হয়ে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। নামধারী এফসির অযোগ্য খেলোয়াড় সংক্রান্ত এই বিতর্ক এখন লিগের শিরোপা নির্ধারণের মূল চাবিকাঠি।
ইন্টার কাশী এআইএফএফ-এর প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা অভিযোগ করেছে যে মামলার নথিপত্র সময়মতো পায়নি, যা তাদের প্রস্তুতিতে বাধা সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে, নামধারী এফসি ইন্টার কাশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে তারা নিয়ম ভঙ্গ করে অতিরিক্ত বিদেশি খেলোয়াড় খেলিয়েছে। এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ লিগের প্রতিযোগিতামূলক চরিত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
১৮ এপ্রিলের শুনানি আই-লিগের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে চলেছে। ভারতীয় ফুটবল সম্প্রদায় এখন এই রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে, যা শুধু শিরোপা নির্ধারণ করবে না, বরং এআইএফএফের প্রক্রিয়াগত ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার উপরও আলোকপাত করবে।