অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে হেনরিখ ক্লাসেনের (Heinrich Klaasen)ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) যেন হতবাক হয়ে গিয়েছিল। আইপিএল ২০২৫-এর ৬৮তম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (SRH) এই দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা মাত্র ৩৭ বলে এক অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরি করে দলের ইতিহাসে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড গড়েন। এই নকটি তাকে আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক করেছে। সেই সঙ্গে তিনি প্রমাণ করেছেন কেন তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটারদের একজন। ক্লাসেনের এই ঝড়ো ইনিংসের সুবাদে হায়দরাবাদ ৪ উইকেটে ২৭৮ রানের বিশাল স্কোর গড়ে, যা এই মরশুমের অন্যতম সেরা সংগ্রহ।
ম্যাচের পর ক্লাসেন বলেন, “খুবই খুশি, এই মরশুমটা আমার জন্য হতাশার ছিল। তবে আমি ধৈর্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি, এবং অবশেষে পুরস্কার পেয়েছি। আমার আত্মসম্মানই আমাকে মনোযোগী রেখেছে। আমরা ভক্তদের জন্য ভালো পারফরম্যান্স উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। এই মরশুমে আমি প্রতিটি বলে ছক্কা মারার চেষ্টা করে ভুল করেছিলাম, আজ সেটা এড়িয়েছি।“
তিনি আরও যোগ করেন, “নারিনের বিরুদ্ধে আমাকে তার লেন্থ নিয়ে খেলতে হয়েছে। আমি একজন পরিস্থিতি-নির্ভর খেলোয়াড়। আমাদের দলের পরিকল্পনাও তাই। যদি উইকেট তাড়াতাড়ি পড়ে, তবে আমি তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামি। আমার কাছে ব্যাটিং পজিশনটা শুধুই একটা সংখ্যা।“
ক্লাসেন যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন হায়দরাবাদ ৭ ওভারে ১ উইকেটে ৯২ রান তুলে ফেলেছিল। তিনি এসেই গতি বাড়ান, ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ৯৩ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন। হেড আগেই ইনিংসের সুর সেট করে দিয়েছিলেন। এরপর ক্লাসেন ইশান কিশানের সঙ্গে ৮৩ রানের আরেকটি জুটি গড়ে কেকেআরের বোলারদের সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দেন। তার শতরান ছিল আগ্রাসনের এক অসাধারণ মিশ্রণ—চার ও ছক্কার ঝড়ে বোলারদের কোথাও লুকানোর জায়গা ছিল না।
আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় ক্লাসেন এখন যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে। তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ক্রিস গেইল (৩০ বল, আরসিবি বনাম পিডব্লিউআই, ২০১৩), এরপর ভৈভব সূর্যবংশী (৩৫ বল, আরআর বনাম জিটি, ২০২৫), এবং ইউসুফ পাঠান (৩৭ বল, আরআর বনাম এমআই, ২০১০)। ক্লাসেনের এই সেঞ্চুরি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতরান। ২৪৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২২৬টি ইনিংস খেলে তিনি ৫,৬০০-এর বেশি রান করেছেন, ৩৪টি অর্ধশতরান এবং ১৫০-এর বেশি স্ট্রাইক রেট নিয়ে।