বাংলার জার্সিতে দেশের মাঠে নামার অপেক্ষায় হামজা

বাংলাদেশ ফুটবলে (Bangladesh Football) এক নতুন রোমাঞ্চের নাম এখন হামজা দেওয়ান চৌধুরী (Hamza Choudhury)। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে (EPL) খেলার অভিজ্ঞতা যার ঝুলিতে, সেই মিডফিল্ডার যখন…

Hamza Choudhury left England Football Club Sheffield United FC

বাংলাদেশ ফুটবলে (Bangladesh Football) এক নতুন রোমাঞ্চের নাম এখন হামজা দেওয়ান চৌধুরী (Hamza Choudhury)। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে (EPL) খেলার অভিজ্ঞতা যার ঝুলিতে, সেই মিডফিল্ডার যখন লাল-সবুজ জার্সি (Bangladesh Jersey) গায়ে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো মাঠে নামতে যাচ্ছেন, তখন তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত।

এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৭ (AFC Asian Cup 2027) বাছাইপর্ব সামনে রেখে জাতীয় দল এখন প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে। সেই প্রস্তুতির কেন্দ্রে এখন হামজা, যার আগমন যেন এক নতুন উদ্দীপনার জন্ম দিয়েছে পুরো দল এবং সমর্থকদের মধ্যে।

   

হামজার আগমন নিয়ে ছিল বিপুল আগ্রহ। শনিবার সকালে বাংলাদেশ বিমানে লন্ডন থেকে ঢাকায় পা রাখেন তিনি। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই চোখে পড়ে অভ্যর্থনার জৌলুস। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) তিনজন নির্বাহী সদস্য তাকে স্বাগত জানান। সঙ্গে ছিলেন তার বাবা-মাও। দেশের মাটিতে এই প্রবাসী ফুটবলারের আগমন যেন ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে এক অনন্য আবেগের সঞ্চার ঘটায়।

ঢাকা পৌঁছানোর পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বিকেলেই দলের অনুশীলনে যোগ দেন হামজা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত সেই অনুশীলন ছিল ক্লোজড ডোর, অর্থাৎ সাংবাদিক ও সাধারণ দর্শকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা তার পরিকল্পনায় হামজাকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, তা এই সংরক্ষিত অনুশীলনের মাধ্যমেই স্পষ্ট।

গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক হয় হামজার। তখন তিনি সরাসরি যান সিলেট, যেখানে স্থানীয় সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে দেখা দেয় কিছু বিশৃঙ্খলাও। বিমানবন্দর থেকে হোটেল, সর্বত্রই তাকে ঘিরে জনতার ঢল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তার আগমনকে ঘিরে ছিল অধিক শৃঙ্খলা ও পরিকল্পনা।

Advertisements

হামজার পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু ইংল্যান্ডের লেস্টার সিটির হয়ে, যেখানে তিনি প্রিমিয়ার লিগে ৬০-এরও বেশি ম্যাচ খেলেছেন। এর আগে ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক জাতীয় দলেও খেলেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। তবে মায়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশি হওয়ায় দেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্তটি ছিল আবেগপ্রবণ ও গর্বের বিষয়। তার মতো একজন খেলোয়াড়ের জাতীয় দলে থাকা শুধু মাঠের খেলাতেই নয়, তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবেও কাজ করবে।

হামজার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার খেলার ধরন—ধৈর্যশীল, সংগঠিত এবং রক্ষণভাগে কড়া। মাঝমাঠে তার উপস্থিতি দলের ভারসাম্য রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে যে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে, তা কেবল বাছাইপর্বের একটি ম্যাচ নয়, বরং জাতীয় দলের নতুন অধ্যায়ের সূচনাও।

হামজাকে নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশা এখন তুঙ্গে। দেশের ফুটবল যখন উন্নতির সন্ধানে, তখন প্রিমিয়ার লিগে খেলা একজন খেলোয়াড়ের অন্তর্ভুক্তি দলকে আন্তর্জাতিক মানে নিতে সহায়ক হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই একীভূত প্রচেষ্টা ফুটবল ফেডারেশনকেও প্রেরণা জোগাবে ভবিষ্যতে আরও প্রবাসী খেলোয়াড়কে দলে টানতে।