ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (CSA) আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য একটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে। সিএসএ চায় তাদের খেলোয়াড়রা আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তুতির জন্য ২৬ মে’র মধ্যে দেশে ফিরে আসুক। এই সিদ্ধান্ত আইপিএলের প্লে-অফ পর্বে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ এই সময়ে বিদেশি খেলোয়াড়দের প্রাপ্যতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট বিশ্বে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার কারণে স্থগিত হয়েছিল। তবে, উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) ঘোষণা করেছে যে আইপিএল ২০২৫ আগামী ১৭ মে থেকে পুনরায় শুরু হবে। সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, লিগের ফাইনাল ম্যাচটি ৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে, যা মূলত নির্ধারিত তারিখ ২৫ মে’র থেকে নয় দিন পরে। এই পরিবর্তন ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মৌসুম ২৫ মে থেকে শুরু হবে এবং বিদেশি খেলোয়াড়রা প্লে-অফ ম্যাচগুলো মিস করতে পারেন। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিত যে তাদের ২৬ মে’র মধ্যে ফিরতে হবে।

দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় ক্রিকেট দল আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৩-২৫-এর ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে। এই ম্যাচটি লন্ডনের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ১১ জুন থেকে অনুষ্ঠিত হবে। সিএসএ চায় তাদের খেলোয়াড়রা এই ম্যাচের জন্য সম্পূর্ণ ফিট থাকুক। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচ শুকরি কনরাড স্পষ্টভাবে বলেছেন, “বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক চুক্তি ছিল যে আইপিএল ফাইনাল ২৫ মে হবে, এবং আমাদের খেলোয়াড়রা ২৬ মে ফিরবে। এটি আমাদের ৩০ মে’র ফ্লাইটের আগে পর্যাপ্ত সময় দেয়। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কিছুই পরিবর্তন হয়নি।” তিনি আরও জানিয়েছেন যে এই বিষয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, যেমন ক্রিকেট পরিচালক এনক নকওয়ে এবং সিএসএ’র সিইও ফোলেতসি মোসেকি, আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, সিএসএ ২৬ মে’র তারিখে কোনো ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়।
আইপিএল ২০২৫-এ মোট ২০ জন দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছেন, যার মধ্যে ৮ জন ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দলে স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন: করবিন বোশ (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স), উইয়ান মুল্ডার (সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ), মার্কো জানসেন (পাঞ্জাব কিংস), এইডেন মার্করাম (লখনউ সুপার জায়ান্টস), লুঙ্গি এনগিডি (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু), কাগিসো রাবাদা (গুজরাট টাইটান্স), রায়ান রিকেলটন (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স) এবং ট্রিস্টান স্টাবস (দিল্লি ক্যাপিটালস)। ক্রিকবাজের রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়দের ৩১ মে ইংল্যান্ডের আরুন্ডেলে সমবেত হতে বলা হয়েছে। প্রোটিয়ারা ৩-৬ জুন জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে এবং ৭ জুন লন্ডনে পৌঁছাবে।
শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড়রাই নয়, ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রাও আইপিএল ২০২৫-এর প্লে-অফ মিস করতে পারেন। ইংল্যান্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলবে, যা ২৯ মে শুরু হবে। ইসিবি তাদের খেলোয়াড়দের, বিশেষ করে জস বাটলার (গুজরাট টাইটান্স), জ্যাকব বেথেল (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু) এবং উইল জ্যাকস (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স)-কে এই সিরিজের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। এই পরিস্থিতি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য আরও জটিলতা সৃষ্টি করবে, কারণ প্লে-অফ শুরু হবে ২৯ মে থেকে।
এই পরিস্থিতিতে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কৌশলগত পরিকল্পনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি দলগুলোর পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে।