হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, দমবন্ধ করা উত্তেজনা আর টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি। সব মিলিয়ে শনিবাসরীয় মহারণে যুবভারতী ছিল যেন এক ফুটবল-উৎসব। আর উৎসবের শেষ হাসি হাসল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। মরসুমের প্রথম ট্রফি, ঐতিহ্যশালী আইএফএ শিল্ড নিজেদের ঝুলিতে পুরল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে। দীপাবলির আগেই যেন ‘দীপাবলি’ এসে গেল বাগান সমর্থকদের ঘরে।
ম্যাচের শুরুটা যদিও বাগানের জন্য মোটেই সুখকর ছিল না। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের চোখে মুখে ছিল আগুন। খেলার ৩৬ মিনিটে হামিদ আহদাদের দারুণ গোলে লাল-হলুদ এগিয়েও যায়। তবে শেষ হাসি হেসেছিল না তারা। প্রথমার্ধের অন্তিম মুহূর্তে আপুইয়া গোল করে বাগানকে সমতায় ফেরান।
এরপর ৯০ মিনিট পার, অতিরিক্ত আধঘণ্টাও পেরোল, কিন্তু ফলাফল সেই ১-১। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই বাজিমাত করেন বাগান গোলরক্ষক বিশাল কাইথ। জয় গুপ্তার নেওয়া শট অনায়াসে আটকে দেন তিনি। এরপর হিরোশি ইবুসুকি গোল করলেও, শেষের সিলমোহর দেন মেহেতাব সিং। ট্রফি উঠে যায় সবুজ-মেরুনের হাতে।
অগ্নিপরীক্ষায় ফ্লপ বিরাট-রোহিত, ম্যাচ শেষেই ‘অবসরের’ ঘোষণা!
তবে এই ডার্বি শুধু খেলার গল্পই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু সম্পর্কের রং। হাওড়ার উত্তরপাড়ার সৌভিক চট্টোপাধ্যায় ও সালকিয়ার শুভাশীষ পাল। দুজনেই এসেছিলেন ছেলে নিয়ে, যারা আবার স্কুল বন্ধু। কিন্তু দুই বন্ধু দুই দলের সমর্থক। একজন ইস্টবেঙ্গলের, অন্যজন মোহনবাগানের। ম্যাচ শেষে ট্রফি পেল বাগান, তাতে বন্ধুত্বে বিন্দুমাত্র চিড় ধরেনি। বরং গ্যালারির বাইরে কাঁধে কাঁধ রেখে ফটো তুলেছে ১২ বছরের দুই কিশোর।তাদের বাবা বলেন, “স্কুলে কত তর্ক হয়, কিন্তু বন্ধুত্ব একটুও বদলায়নি। আজও একসঙ্গে খেলা দেখে বাড়ি ফিরছি, যদিও বসেছিলাম দুই ভিন্ন গ্যালারিতে।”