আইএফএ শিল্ড জয়ের পর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan) নামছে সুপার কাপ অভিযানে। শনিবার গোয়ার ফতোর্দা স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি। মরশুমের শুরুটা আশানুরূপ না হলেও, সাম্প্রতিক শিল্ড জয়ের পর হোসে মোলিনার দল আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর।
গত কয়েক বছরে ভারতীয় ফুটবলে ধারাবাহিক সাফল্যের ছাপ ফেলেছে মোহনবাগান। আইএসএল জয়, ডুরান্ড কাপ ও শিল্ডের ট্রফি সংগ্রহ করেছে তারা। কিন্তু সুপার কাপ এখনও অধরা। স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনার কাছে তাই এই টুর্নামেন্ট বিশেষ গুরুত্বের। ভারচুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “মরশুমের শুরুটা আমাদের ভালো ছিল না। তবে আইএফএ শিল্ড জয় দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সুপার কাপের জন্য তৈরি।”
ডুরান্ড কাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর থেকেই মোহনবাগানের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে কোচ মোলিনা এবার সেই সমালোচনার সোজাসুজি জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সম্পূর্ণ ফিটনেস পেতে গেলে আরও বেশি ম্যাচ খেলতে হয়। ভারতীয় ফুটবলে সেই সুযোগটা সবসময় মেলে না। তবে আইএফএ শিল্ডে পরপর ম্যাচ খেলার ফলে দলের ফিটনেসে উন্নতি হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, দলের কেউই এখন চোটগ্রস্ত নয়। সবাই সুস্থ এবং প্রস্তুত।”
সেন্ট্রাল কোলফিল্ডসে কাজের সুযোগ, দশম উত্তীর্ণরা আবেদন করতে পারবেন
কলকাতায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি সেরে গোয়ায় পৌঁছেছে সবুজ-মেরুন শিবির। সেই প্রসঙ্গে স্প্যানিশ কোচ বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। দলগত সংযোগ এবং অনুশীলন দুটোই এখন অনেক ভালো অবস্থায় আছে। সুপার কাপে ভালো সূচনা করতে পারলে তা পুরো মরশুমের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি এবার বিদেশি ফুটবলার ছাড়াই মাঠে নামছে। তবু তাদের হালকাভাবে নিচ্ছেন না বাগান কোচ। মোলিনা বলেন, “চেন্নাই খুবই ভালো দল। সব ম্যাচই কঠিন হয়। কোনও জয় সহজে আসে না। তাই আমাদের লড়াই করেই জয় আনতে হবে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, চেন্নাইয়িনের কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা গত মরশুমে মোহনবাগানের সহকারী কোচ ছিলেন। ফলে সবুজ-মেরুন শিবির সম্পর্কে তাঁর ভালো ধারণা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে মোলিনা বলেন, “ও আমাদের খেলোয়াড়দের চিনে, এটা সত্যি। তবে মাঠে নামলে পুরোটাই নতুন চ্যালেঞ্জ। আমরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব।”
মোলিনার পাশে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের মাঝমাঠের প্রাণভোমরা অনিরুদ্ধ থাপা। তিনি আত্মবিশ্বাসী সুরে বলেন, “মোহনবাগান সবসময় জয়ের জন্য মাঠে নামে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, চ্যাম্পিয়ন হওয়া। দলকে ট্রফি দেওয়া ছাড়া অন্য কিছু ভাবি না।”
আইএফএ শিল্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছে দল, সেটাকেই পুঁজি করে সুপার কাপে নামছে তারা। থাপা বলেন, “শিল্ড জয়ের পর দলের মধ্যে একটা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সবাই উৎসাহী, সবাই একসঙ্গে কাজ করছে। চেন্নাইয়িনের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জয় পেলে সেটাই হবে মরশুমের আদর্শ সূচনা।”
সুপার কাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচের গুরুত্ব তাই বিরাট। জয় পেলে তা শুধু আত্মবিশ্বাসই নয়, পরবর্তী ম্যাচগুলির কৌশল নির্ধারণেও প্রভাব ফেলবে। দলের সমর্থকরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন অধরা ট্রফিটিকে সবুজ-মেরুন ঝুলিতে দেখতে।
মোলিনার শেষ মন্তব্যেই ফুটে উঠল তাঁর আত্মবিশ্বাস। তিনি বলেন, , “আমরা জানি, সুপার কাপ সহজ টুর্নামেন্ট নয়। তবে আমাদের দল সঠিক পথে এগোচ্ছে। খেলোয়াড়দের মনোবল, দলগত একতা এবং প্রস্তুতি সবই ঠিকঠাক আছে। এখন মাঠে গিয়ে সেটাই প্রমাণ করার সময়।”


