আবারও গড়াপেটার অভিযোগে সরগরম কলকাতা ময়দান (Kolkata Football)। শতাব্দীপ্রাচীন এক ফুটবল ক্লাবের দুই কর্তা আকাশ দাস ও রাহুল সাহাকে রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে কলকাতার একাধিক ম্যাচে গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করেই এই গড়াপেটার চক্র চালানো হচ্ছিল। ফলে ভারতীয় দণ্ডবিধি (IPC) ও তথ্যপ্রযুক্তি আইন (IT Act) বিভিন্ন ধারায় বেলঘরিয়া থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবার বিকেলেই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়। দীর্ঘক্ষণ জেরা শেষে সন্ধ্যায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় কলকাতার ফুটবল মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছর কলকাতা লিগ চলাকালীনই খিদিরপুর ও মেসারার্স ক্লাবের বিরুদ্ধেও গড়াপেটার অভিযোগ উঠেছিল। খিদিরপুরের অভিক গুহ এবং মেসারার্স ক্লাবের দুই ফুটবলার মুসলিম মোল্লা ও সান্নিক মুর্মুর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের হয়। আইএফএর সঙ্গে যুক্ত গড়াপেটা-বিরোধী সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতেই কলকাতা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল।
দিন কয়েক আগেই আইএফএ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, গড়াপেটা সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। সেই সূত্র ধরেই রবিবার রাতেই আসে জোড়া গ্রেফতারির ঘটনা।
আইএফএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার অনুরোধে তদন্তে নামার পর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ফুটবল মহল। সোমবার আইএফএ অফিসে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “সারা দেশের মধ্যে প্রথমবার কলকাতা পুলিশ গড়াপেটা মামলায় গ্রেফতারির নজির স্থাপন করেছে। যেসব ক্লাব এই কাজে জড়িত প্রমাণিত হবে, তাদের বিষয়টি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠানো হবে। এটা হিমশৈলের চূড়ামাত্র, আগামী দিনে আরও তথ্য সামনে আসবে।”
তবে সচিব এও স্পষ্ট করেছেন যে, এই গ্রেফতারির কারণে কলকাতা লিগের ফলাফলের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, কোষাধ্যক্ষ সুফল রঞ্জন গিরি, সহ-সভাপতি সৌরভ পাল, স্বরূপ বিশ্বাস, দিলীপ নারায়ণ সাহা এবং সহ-সচিব রাকেশ ঝাঁ, মহম্মদ জামাল ও সুদেষ্ণা মুখার্জী। কলকাতা ফুটবলে গড়াপেটার ছায়া নতুন নয়, তবে পুলিশের এই বেনজির পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।


