দেশের প্রথম সারির ফুটবল লিগ তথা আইএসএলের (Indian Super League) ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। এই শুক্রবার বিড জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও কোনও সংস্থাই টেন্ডারে অংশ নেয়নি। যারফলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ভাগ্য এখন ঝুলে রয়েছে ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিড জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু একাধিক সংস্থার অনুরোধে ফেডারেশনের টেন্ডার কমিটি ডেডলাইন পিছিয়ে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত তা বাড়িয়ে দিয়েছিল। যারফলে অনেকেই মনে করেছিল এফএসডিএল বা অন্য কোনও সংস্থা হয়তো বিড জমা দেবে। কিন্তু শুক্রবারও সকলের নিষ্ক্রিয় থাকার কথা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় সর্বত্র।
যারফলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ এবার আয়োজিত হবে কিনা সেই নিয়ে ও দেখা দিল ব্যাপক ধোঁয়াশা। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দলের অনুশীলন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের অন্যতম শক্তিশালী ফুটবল ক্লাব মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। পাশাপাশি আইএসএল নিয়ে ও এবার ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বাগান সভাপতি দেবাশিস দত্ত। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ফুটবলে আজকের দিনটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে এরকম বিট করে কেউ টেন্ডার দিলো না এটা মানে আশ্চর্যজনক ব্যাপার তবে আমার মনে হয় যে এটা ভাববার বিষয় এআইএফএফের যে কর্মকান্ডে আমি একটা জিনিস ভাবি সব সময় যে এরা কখনোই ক্লাবদের কোনো গুরুত্ব দেয় না আজকে টেন্ডারি হচ্ছে ক্লাবরা কি চায় কি ধরনের হলে সেই জন্যে ক্লাবদের মতামত ছাড়া যে দিনের পর দিন যে ক্লাবেদের কোনো গুরুত্ব দেয় না বলে আজকে কিন্তু এই দুরবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে এআইএফএফ।’
আরও বলেন, ‘ দেখা যাক এখান থেকে কিভাবে উদ্ধার হতে পারে তবে আমরা খুব চিন্তিত। কারণ আমাদের আর প্র্যাকটিস শুরু করব কিনা সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। কারণ এই বছর তো আর কোনো খেলা নেই আর কোনো টুর্নামেন্ট নেই। তাহলে আর টিমের প্র্যাকটিস শুরু করে লাভ কি?’ পাশাপাশি ফেডারেশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন সবুজ-মেরুনের বর্তমান সচিব সৃঞ্জয় বসু। তিনি বলেন, ‘কেউ এগিয়ে আসছে না এবং ফুটবলটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। আমাদের তো প্র্যাকটিস বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সামনে কোনও টুর্নামেন্ট নেই কবে হবে কেউ জানে না। এআইএফএফের উচিত ইমিডিয়েটলি এফএসডিএলের সাথে কথা বলে তাড়াতাড়ি সমাধান করা। সেইসাথে একটা টুর্নামেন্ট শুরু করা। কারণ এইভাবে ভারতীয় ফুটবল আরো ১০০ বছর পেছনে চলে যাবে। আপাতত ক্লাব গুলো সবাই বসে আছে এত গুলো খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ এই ভাবে ছেড়ে খেলা করা একদম উচিত নয়। সো এটাকে এআইএফএফ এর সিরিয়াসলি দেখা উচিত।’ আরও বলেন, ‘এত এফর্ট দিয়ে ছিল কোর্ট কেস করে নিজেরা গদিতে বসে থাকার জন্য সেমনি এফর্ট যদি দেয় তাহলে আমার বিশ্বাস নিশ্চয়ই সমাধান আসবে।’
পাশাপাশি মুখ খোলেন ইস্টবেঙ্গল শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার। তিনি বলেন, ‘ ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী। আমার এখনও আস্থা আছে ভারতীয় ফুটবল বন্ধ হবে না। যেকোনও উপায় খেলা হবে। আরেকটু সময় পেলে আরও মানুষজন যুক্ত হবে। সমন্বয় গড়ে আগামী দিনে আরও বেটার কিছু করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি খেলা হবে। বিড কে জমা দিল কে দিল না সেটা সেকেন্ডারী। ফেডারেশন, ক্রীড়া মন্ত্রক নিশ্চয় সুব্যবস্থা করবে এবং খেলা হবে। হয়তো নির্দিষ্ট সময় হবে না। কিংবা পরিকাঠামোর বা নিয়মাবলী হয়তো পরিবর্তন হতে পারে। তবে অনেক কিছুই হওয়া উচিত ছিল না। যারা অতীতে ছিল তাঁরা ও ঠিক করেনি। আমি আবার বলছি প্রফুল্ল প্যাটেল কিংবা কল্যাণের উচিত সকলের সাথে আলোচনা করে সকলের সাথে বসে ভারতীয় ফুটবল এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’


