ভারতীয় ফুটবলে কি আবারও দেখা মিলতে চলেছে বিদেশে জন্মানো, ভারতীয় (Indian Football) বংশোদ্ভূত কোনও ফুটবলারকে? রায়ান উইলিয়ামসের পর এবার সেই আলোচনা ঘুরপাক খাচ্ছে স্কটল্যান্ডে খেলা লিভারপুল অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা মিডফিল্ডার ইয়ান ধান্দাকে ঘিরে। ইনস্টাগ্রামে রায়ানের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক কথোপকথন আরও উসকে দিয়েছে সম্ভাবনার আগুন।
কুলদীপ ঝলকে থমকাল দক্ষিণ আফ্রিকা! পন্থের নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াল ভারত
১৯৯৮ সালে বার্মিংহ্যামে জন্মানো ইয়ান ধান্দা বহুদিন ধরেই ভারতীয় অভিবাসী-পরিবারের ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁর পৈতৃক সূত্রে ভারতের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক। লিভারপুল অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি দ্রুত উঠে আসেন ইংলিশ ফুটবলের আলোচনায়। পরে খেলেন চ্যাম্পিয়নশিপের ক্লাব সোয়েন্সা সিটিতে। ক্যারিয়ারের পথে স্কটল্যান্ডের রস কাউন্টি ও হার্ট অফ মিডলোথিয়ান পেরিয়ে বর্তমানে খেলছেন ডান্ডি এফসিতে। ইংল্যান্ডের হয়ে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে একাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছেন।
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় জন্মানো রায়ান উইলিয়ামস ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ছাড়পত্র পেয়ে ব্লু টাইগার্সের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন। যদিও এখনও তাঁর অভিষেক হয়নি, তবু বাংলাদেশ সফরে দলের সঙ্গে ছিলেন। ইনস্টাগ্রামে ভারতের জার্সিতে রায়ানের ছবি দেখে ধান্দা মন্তব্য করেন, “Yes bro”। সঙ্গে একটি নীল হৃদয়ের ইমোজি। ফুটবল মহলের মতে, এই নীল হৃদয় ভারতকেই ইঙ্গিত করছে। যদিও প্রতিত্তরে রায়ান লিখেছেন, “এবার তোমার পালা।” এতেই শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা, তাহলে কি ধান্দাকেও ভারতের হয়ে খেলাতে চাইছে ফেডারেশন?
View this post on Instagram
ধান্দার কাছে ভারতের হয়ে খেলার পথ মোটেই সহজ নয়। ২৬ বছর বয়সি এই মিডফিল্ডারের রয়েছে OCI (ওভারসিজ সিটিজেন অব ইন্ডিয়া) কার্ড। কিন্তু ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলতে চাইলে তাঁকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে, কারণ ভারতে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ নেই।
এতে বড় সমস্যা তৈরি হবে ধান্দার ক্লাব-ফুটবল ক্যারিয়ারে। ইউরোপীয় লিগে তিনি আর বিদেশি কোটায় খেলতে পারবেন না। ইউরোপে সফলভাবে খেলে চলা একজন পেশাদার ফুটবলারের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রায় অসম্ভবই বলা যায়।
২০২৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি রিও ফার্দিনান্দ ধান্দার এক অসাধারণ গোলের প্রশংসা করলে ভারতীয় ফুটবল মহলেও আলোচনা ফের জোর পায়। তখনই এআইএফএফের প্রাক্তন সচিব সাজি প্রভাকরণ তাঁকে ভারতের হয়ে খেলতে আমন্ত্রণ জানান। ধান্দা সেবারই জানিয়েছিলেন, যদি দ্বৈত নাগরিকত্ব চালু হয় তবে তিনি ভারতের হয়ে খেলতে চান। কিন্তু ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছাড়তে তিনি প্রস্তুত নন।
ইনস্টাগ্রামের রহস্যময় ‘ন্যায়স ব্রো’ ও রায়ানের ‘এবার তোমার পালা’ মন্তব্যগুলিই এখন নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারতীয় ফুটবল মহলে।
যদিও বাস্তবে ধান্দার নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত বাধা এতটাই বড় যে তা পেরোনো এখনো কঠিন। তবু ফুটবলপ্রেমীরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন—লিভারপুল-তরঙ্গে বড় হওয়া এই প্রতিভাকে কখনও কি নীল জার্সিতে দেখা যাবে?

