ভারতীয় ফুটবলে নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে জাতীয় দলের (Indian Football Team) শক্তি বাড়াতে দুই বিদেশে-খেলা ফুটবলারকে ডাকা হয়েছে প্রস্তুতি শিবিরে। তাঁরা হলেন ভারতীয় পাসপোর্টধারী ডিফেন্ডার অবনীত ভারতী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফরোওয়ার্ড রায়ান উইলিয়ামস। সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই “যুগান্তকারী পদক্ষেপ” বলেই অভিহিত করছেন।
আগামী ১৮ নভেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ভারত। ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে কার্যত এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে গিয়েছে সুনীল ছেত্রীহীন ভারতীয় দলের। তবু নিয়মরক্ষার এই ম্যাচে নতুন রক্ত এবং নতুন সম্ভাবনা দেখতে চাইছে ফেডারেশন। বেঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প। সেখানে যোগ দেওয়ার কথা এই দুই ‘বিদেশি’ ভারতীয়।
ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে বলেন, “অবনীত এবং উইলিয়ামস দু’জনেই ক্যাম্পে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবেন। যদি তাঁরা কোচের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন, তবে ঢাকার দলে তাঁদের রাখা হতে পারে।”
২৬ বছর বয়সি অবনীত ভারতী বর্তমানে বলিভিয়ার শীর্ষস্থানীয় ক্লাব অ্যাকাডেমিয়া ডেল বলোমপি বলিভিয়ানো-তে খেলেন। এর আগে চেক ন্যাশনাল লিগের এফকে ভার্নসডর্ফ থেকে লোনে নিয়ে তাঁকে দলে ভিড়িয়েছিল বলিভিয়ার এই ক্লাব। আর্জেন্টিনার সোল ডি মায়ো ক্লাবেও খেলেছেন তিনি। সেন্টার-ব্যাক পজিশনে খেলা অবনীতের জন্ম নেপালে, তবে বাবা দূতাবাসের কর্মী হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই কাটিয়েছেন একাধিক দেশে। ২০১৯-২০ মরশুমে তিনি আইএসএলে কেরালা ব্লাস্টার্সের জার্সি গায়ে খেলেছিলেন, যদিও দেশের বাইরে কাটিয়েছেন তাঁর ফুটবলজীবনের বড় অংশ।
অন্যদিকে, ৩১ বছর বয়সি রায়ান উইলিয়ামস অস্ট্রেলিয়ার পারথে জন্মালেও তাঁর মায়ের শিকড় মুম্বইয়ে। এক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান পরিবারে। বাবা ইংল্যান্ডের কেন্টের বাসিন্দা। সম্প্রতি ভারতীয় পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন উইলিয়ামস এবং বর্তমানে বেঙ্গালুরু এফসির ফরোওয়ার্ড হিসেবে খেলছেন। কিছু দিন আগেই ভারতের জার্সিতে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ফেডারেশন সভাপতি জানান, “উইলিয়ামসের ক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। ক্রীড়ামন্ত্রী মানসুখ মান্ডভিয়া ও তাঁর মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানাতেই হয়—তাঁদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।”
ফেডারেশনসূত্রে জানা গিয়েছে, অবনীত ইতিমধ্যেই ক্যাম্পে যোগ দিতে প্রস্তুত। আর উইলিয়ামস চূড়ান্ত ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আছেন। দুই ফুটবলারের অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে ভারতীয় দলের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বিদেশে অনুশীলন ও খেলার অভিজ্ঞতা তাঁদের এনে দিতে পারে সেই দৃঢ়তা ও কৌশল, যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় দলের সাফল্যের জন্য জরুরি।


