রায়ান উইলিয়ামসের পথে ভারতীয় ফুটবলে সম্ভাব্য আরও দুই বিদেশে!

Daniel De Silva Gabriel Cleur Indian Football

ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football) নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বিদেশে জন্মানো ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়রা। অস্ট্রেলিয়া থেকে এমনই দুই ফুটবলারকে নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে—ড্যানিয়েল ডি সিলভা (Daniel De Silva) ও গ্যাব্রিয়েল ক্ল্যুর (Gabriel Cleur)। এই দুই ফুটবলার যদি ভারতীয় ফুটবলে যোগ দেন, তাহলে তাঁরা রায়ান উইলিয়ামসের (Ryan Williams) পথ অনুসরণ করে জাতীয় দলের হয়ে খেলতেও পারেন।

Advertisements

রায়ান উইলিয়ামস, যিনি সম্প্রতি ভারতীয় পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন এবং দেশের হয়ে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তাঁর উদাহরণই যেন নতুন অনুপ্রেরণা। ভারতের ফুটবলে এখন এমন অনেক তরুণ বিদেশি-জন্ম ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় রয়েছেন, যাঁরা যোগ্যতা অনুযায়ী দলে জায়গা পেলে দেশের মানচিত্রে ফুটবলের নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।

   

ড্যানিয়েল ডি সিলভা একজন সৃজনশীল মিডফিল্ডার। ১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে জন্ম তাঁর। তিনি এ-লিগের ক্লাব ম্যাকআর্থার এফসি-র (Macarthur FC) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। বয়স মাত্র ২৮, কিন্তু তাঁর অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ—অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলে জুনিয়র স্তর থেকে খেলেছেন, ইউরোপের ক্লাবেও সময় কাটিয়েছেন। তাঁর খেলার ধরন বল-পজেশন নির্ভর, এবং আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডে বল কন্ট্রোল, থ্রু-পাস ও ক্রিয়েটিভ প্লেমেকিং-এ তিনি বিশেষ পারদর্শী। ভারতীয় ফুটবলে এমন একজন “creative number 10” খেলোয়াড়ের অভাব বহুদিনের।

অন্যদিকে গ্যাব্রিয়েল ক্ল্যুর, ২৬ বছর বয়সি ফুল-ব্যাক, বর্তমানে ইতালির দ্বিতীয় ডিভিশন (Serie B) ক্লাব পোজেনজা (Poggibonsi)-র সঙ্গে যুক্ত। ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া—দুই ফুটবল স্কুলের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। ডানদিকের ডিফেন্সে গতি, স্ট্যামিনা ও পাসিংয়ে তিনি দক্ষ। ভারতীয় ফুটবলে এমন আধুনিক ফুল-ব্যাকের সংখ্যা এখনো সীমিত, ফলে তাঁর মতো খেলোয়াড় এলে পুরো ব্যাকলাইন কাঠামোই বদলে যেতে পারে।

ফুটবল বিশ্লেষকরা বলছেন, “রায়ান উইলিয়ামসের উদাহরণ দেখিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় ফুটবলের দরজা এখন আরও বেশি গ্লোবাল হচ্ছে। ISL ক্লাবগুলো যদি এই ধরনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিদেশি খেলোয়াড়দের খুঁজে এনে সঠিকভাবে সুযোগ দেয়, তাহলে জাতীয় দলের শক্তি দ্বিগুণ হতে পারে।”

Advertisements

এআইএফএফ (AIFF) সম্প্রতি জানিয়েছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের নাগরিকত্বের নিয়ম সহজ করতে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় আছে। উদ্দেশ্য একটাই — ভারতের প্রতিভা ভান্ডারকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রসারিত করা। কারণ অনেক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ফুটবলারই বিদেশে বেড়ে উঠেছেন, উন্নত প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, কিন্তু হৃদয়ে এখনও ভারতের প্রতি টান আছে।

রায়ান উইলিয়ামসের পর যদি ড্যানিয়েল ডি সিলভা ও গ্যাব্রিয়েল ক্ল্যুরের মতো প্রতিভাবান ফুটবলাররা ভারতের ক্লাব ফুটবলে আসেন, তাহলে তা কেবল আইএসএল-এর মান বাড়াবে না, বরং ভারতের জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষমতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

এই দুই ফুটবলারের পটভূমি, দক্ষতা ও বয়স—সব মিলিয়ে তাঁদের ভারতীয় ফুটবলে অন্তর্ভুক্তি শুধু সম্ভাবনা নয়, এক বাস্তব সুযোগও বটে। এখন দেখার বিষয়, কোনও আইএসএল ক্লাব তাঁদের দিকে হাত বাড়ায় কি না, কারণ তার মাধ্যমেই হয়তো ভারতীয় ফুটবলে শুরু হবে নতুন “গ্লোবাল ইন্ডিয়ান” অধ্যায়।